সাক্ষাৎকারে ইবির প্রধান প্রকৌশলী
দেশের অন্যতম সুন্দর ক্যাম্পাস হবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আলিমুজ্জামান টুটুল। খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে একই বিষয়ের উপর এমএসসি শেষ করে ২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। দায়িত্ব পাওয়ার পর তার হাত ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সম্প্রতি গৃহীত হয়েছে ৫’শ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি- এ আর রাশেদ
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কেমন আছেন আপনি?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: এইতো ভাল আছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রথমে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি কি উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন সে সম্পর্কে জানতে চাই।
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: আমি গত বছরের আগস্টের ২০ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন, আমাদের কেন্দ্রীয় মসজিদ সম্প্রসারণ, সুদর্শন পানির ফোয়ারা, শেখ রাসেল হল নির্মাণ, রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবন নির্মাণ, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য ৫ তলা ভবন নির্মাণ, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে ৫০০ কেভি’র নতুন সাব স্টেশন স্থাপন, পানির নতুন লাইন স্থাপনসহ আরো অনেককিছু।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি যেসব কাজের কথা বললেন এগুলোর গুনগতমান কেমন ছিল বলে আপনি মনে করেন?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: আমি চেষ্টা করেছি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে এসব কাজের গুনগতমান নিশ্চিত করতে। কারণ মাননীয় উপাচার্য মহোদয় এ ব্যাপারে সবসময় আপোষহীন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সম্প্রতি একনেক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মেগা প্রকল্পের জন্য ৫ শত ৩৭ কোটি টাকা পেয়েছে। এই মেগা প্রকল্প নিয়ে আপনাদের পারিকল্পনা কি?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: এই প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নয়টি ১০তলা ভবনসহ প্রায় ৩১টি ভবনের কাজ হবে। এর মধ্যে ১৯টি ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ এবং চারটি নতুন হল রয়েছে। এসব কাজ শেষ হলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দেশের মধ্যে অন্যতম সুন্দর একটি ক্যাম্পাসে পরিণত হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ১৭৫ একরের। এই স্বল্প পরিসরে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত কোন সমস্যা হবে কিনা?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আমরা যে যেসব পরিকল্পনা নিয়েছি তাতে কোন সমস্যা হবে না। তবে এরপর যদি নতুন কোন ভবন নির্মাণ করতে হয় সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত জায়গার প্রয়োজন হবে। এর জন্য ভবিষ্যতে জায়গা অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আমরা জানি, উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবকাঠামো উন্নত এবং সুপ্রাচীন। এ ক্ষেত্রে আপনাদের মেগা প্রকল্প বাস্তাবায়নের জন্য আপনারা উন্নত বিশ্বের অবকাঠামো অনুসরণ করবেন কিনা?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: হ্যাঁ, এটা করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। উপাচার্য মহোদয় স্বয়ং নিজেই এ ব্যাপারে আমাদের আইডিয়া প্রদান করেছেন। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একটি শক্তিশালী অবকাঠামো তৈরী ও সর্বপরি সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েকটি প্রকল্পের জন্য ই-টেন্ডার ছাড়া হয়। কিন্তু শেষ পযন্ত তা উঠিয়ে নিয়ে আবার ওপেন টেন্ডার ছাড়া হয়। কেন এটি করা হয়েছিল?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: সাধারণত সব প্রকল্পের জন্য ই-টেন্ডার ছাড়া লাগে না। যেসব প্রকল্প ৫০ লক্ষ টাকার উপরে আমার সেগুলোর জন্যই সাধারণত ই-টেন্ডারিং এর মাধ্যমে টেন্ডার আহ্বান করে থাকি। সম্প্রতি কয়েকটি প্রকল্পের জন্য আমরা ওপেন টেন্ডারিং এর মাধ্যমে টেন্ডার আহ্বান করেছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: টেন্ডার বিতরণের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন বা বহিরাগতরা অনেক সময় সমস্যা সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে আপনি কখনো কোন বাধার সম্মুখীন হয়েছেন কিনা?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: না, এখনো পর্যন্ত কোন সমস্যার সম্মুখীন হইনি। এ বিষয়ে কারোর কাছ থেকে কোন অসহযোগীতা পাইনি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও আবাসিক হল সমূহে পানি সংকট দেখা দেয়। এসব সমস্যার জন্য মূলত দায়ী কে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নাকি প্রকৌশল অফিস? এ ব্যপারে কি বলবেন?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: এটার জন্য মূলত কেউই দায়ী না। কারণ মাঝে মাঝে ন্যাশনাল গ্রীডে বিদ্যুৎ এর সমস্যা হয়। তখন আমাদের ক্যাম্পাসেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট সৃষ্টি হয়। আর হলের পানি সংকটের মূল কারণ হলো, আমাদের যেসব পাইপ লাইন রয়েছে তা অধিকাংশই পুরাতন হয়ে গেছে। যে কারণে মাঝে মাঝে কিছু সমস্যা হয়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এসব সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য আপনারা কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: হ্যাঁ, এসব সমস্যার টেকসই সমাধানে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে যাতে কোন বিদ্যুৎ বিভ্রাট না হয় সেজন্য ৫০০ কেভি’র নতুন সাব স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আর হলের পানির সমস্যা দূরীকরণে নতুন লাইন স্থাপন করা হচ্ছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে কি বলেতে চান?
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: আমি যাতে আমার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারি এজন্য সকলের সহযোগীতা চাই। আরেকটি বিষয়ে আমি সবসময়ই অঙ্গিকারবদ্ধ। সেটা হলো দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি আমার কাজের মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাই। সৃষ্টিতেই আমার আনন্দ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আপনাকে।
ইঞ্জি: আলিমুজ্জামান টুটুল: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।