সাক্ষাৎকারে প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি
কুবি সায়েন্স ক্লাব একদিন বিজ্ঞান গবেষণাগারে পরিণত হবে
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ পারভেজ সবুজ। লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার লতিফপুর গ্রামে ১৯৯৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় মুখ সবুজ বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করছেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানভিত্তিক সংগঠন ‘কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাব’ এর প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন ক্যাম্পাসের একমাত্র রক্তদাতা সংগঠন বন্ধুর প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক এবং দ্বিতীয় কমিটির সভাপতি। তারুণ্য এবং বিজ্ঞান নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে কথা বলেছেন তিনি।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন কুবি প্রতিনিধি- শাহাদাত বিপ্লব
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সায়েন্স ক্লাব গঠনের স্বপ্ন দেখেছেন কবে থেকে? প্রতিষ্ঠার গল্প শুনতে চাই।
মাসুদ পারভেজ সবুজ: ২০১৪ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির আয়োজনে জুনিয়র অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভলিন্টিয়ার হিসেবে ছিলাম। এরপর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা অঞ্চলে বিজ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি। তখন থেকেই সায়েন্স ক্লাব গঠনের স্বপ্ন দেখি। এবং তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে আমরা ১৩ জন মিলে ‘কুমিল্লা ইউুনভার্সিটি সায়েন্স ক্লাব’ গঠন করি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সায়েন্স ক্লাব গঠনের উদ্যেশ্য কি ছিল?
মাসুদ পারভেজ সবুজ: আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কাছে বিজ্ঞান মানেই এক ধরণের ভীতিকর বিষয়। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ভয় কাটিয়ে দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানকে মজাদার করে কুমিল্লা অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌছে দেয়া। বিষয়টি বিজ্ঞান হলেও সায়েন্স ক্লাব মূলত সবগুলো বিভাগের একটি প্লাটফর্ম। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কিছু করার প্রয়াস বলা যায়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিজ্ঞানের প্রতিই কেন ঝুঁকলেন?
মাসুদ পারভেজ সবুজ: ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আলাদা আকর্ষণ ছিল। স্কুল, কলেজে থাকাকালীন সময়ে আমার কাছে বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর একাধিক বই থাকতো। এক ধরনের ভালো লাগা বলতে পারেন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সায়েন্স ক্লাবের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম গুলো কী কী?
মাসুদ পারভেজ সবুজ: সায়েন্স ক্লাবের অন্যতম একটি কার্যক্রম হলো স্কুল বিজ্ঞান ক্লাব গঠন। কুমিল্লা এই অঞ্চলে প্রায় বেশ কিছু স্কুলে আমরা বিজ্ঞান ক্লাব গঠন করেছি যাতে শিক্ষার্থীরা কম খরচে সহজ উপায়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারে। এছাড়া প্রতি বছর আমাদের ৫০ থেকে ৬০ টি প্রোগ্রাম থাকে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ব্যাক্তিগত জীবনে এতদূর আসার পিছনে কার অবদান সবচেয়ে বেশী বলে মনে করেন?
মাসুদ পারভেজ সবুজ: অনুপ্রেরণার ক্ষেত্রে আমার বাবা সবসময় আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। বাবা থেকে অনেক কিছু শিখেছি। এখন বাবা নেই। বেঁচে থাকলে আরো অনেক কিছুই শিখা হতো। ২০১৫ সালে আমার বাবা মারা যান।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতে গিয়ে কি কি বাধার সম্মুখীন হয়েছেন?
মাসুদ পারভেজ সবুজ: কাজ করতে গিয়ে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল অডিটোরিয়ামের অভাব। একটি বড় অডিটোরিয়াম থাকলে আরো অনুষ্ঠানের আয়োজনের করা যেত। এছাড়া বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা অনেকটা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছেন। ফেইসবুকে একটু সময় কমিয়ে দিয়ে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কিছু করা যায়। কিন্তু বেশীরভাগই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সায়েন্স ক্লাবের পথচলায় যাদের সাথে পেয়েছেন...
মাসুদ পারভেজ সবুজ: বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সংগঠনের অনুমোদন দিয়েছে। আর কিছু শিক্ষকের সহযোগীতা ছিলো। বিশেষ করে ডীন এবং মডারেটরদের। এছাড়া সবচেয়ে বেশী অবদান আমাদের সায়েন্স ক্লাবের সকল মেম্বারদের, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সংগঠনটি এতদূর আসতে পেরেছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সায়েন্স ক্লাব নিয়ে কী স্বপ্ন দেখেন?
মাসুদ পারভেজ সবুজ: স্বপ্ন দেখি কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাব একদিন বিজ্ঞান গবেষণাগারে পরিণত হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্তদাতা সংগঠন ‘বন্ধু এর প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আপনি। এবং ২য কমিটির সভাপতি ছিলেন। বন্ধু সম্পর্কে কিছু বলুন।
মাসুদ পারভেজ সবুজ: এ অঞ্চলে অনেক মানুষেরই রক্তের প্রয়োজন হলে জোগাড় করতে কষ্ট হতো। ২০১৫ সালে আমরা কয়েকজন মিলে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি। চার বছরে বন্ধু প্রায় পাঁচ হাজার ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ করে দিয়েছে। যা বন্ধুর একটি বড় ধরণের সফলতা।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যেটুকু স্বপ্ন দেখেছেন তার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে বলে মনে করেন?
মাসুদ পারভেজ সবুজ: আসলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নতুন হওয়ায় অনেক কিছু চাইলেও সম্ভব হয় না। তবে আমার ক্ষেত্রে বলবো যা স্বপ্ন ছিল তার বাস্তবায়নে আমি শতভাগ সফল।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পড়াশোনা শেষ করে কী করতে চান?
মাসুদ পারভেজ সবুজ: যে পেশায়ই যাই আমার লক্ষ্য থাকবে দেশের সেবা করা। দেশে জন্য কিছু করতে চাই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ।
মাসুদ পারভেজ সবুজ: আপনাকেও ধন্যবাদ।