‘তারুণ্য’ সভাপতি আরমান
শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে চাই
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অন্যতম বৃহৎ সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘তারুণ্য’। ‘অবারিত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত তারুণ্য’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৯ সালে যাত্রা অরাজনৈতিক এ সংগঠনটির। পথচলার শুরু থেকেই ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিনামূল্যে রক্তদান ও ইয়ুথ লিডারশিপ ট্রেনিংসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তারুণ্য ও তরুণ প্রজন্ম নিয়ে সম্প্রতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কথা বলেছেন ‘তারুণ্যে’র সভাপতি আরমান রেজা জয়।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এ আর রাশেদ
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শুরুতেই আপনাদের লক্ষ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাই...
আরমান রেজা জয়: স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের মাধ্যমে তরুণদের সামজিক দায়িত্ববোধ ও নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন করে গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পরই ‘তারুণ্য’ একটি বহুমাত্রিক সংগঠন হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করে। আমরা প্রধানত বিনামূল্যে রক্তদান ও মুমূর্ষু রোগীর জন্য রক্তদাতা সংগ্রহের কাজ করে থাকি। এর পাশাপাশি ইয়ুথ লিডারশিপ ট্রেনিং, তরুণদের আত্মোন্নয়ন ও শিক্ষামূলক সেমিনার, শীতবস্ত্র বিতরণ, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতা, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে আনন্দভোজ, গরীব ও শ্রমজীবিদের নিয়ে ইফতার আয়োজন করে থাকি। এছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে থাকি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি বললেন যে, তারুণ্যের কার্যক্রমের বড় অংশজুড়েই রয়েছে রক্তদান কর্মসূচী। এক্ষেত্রে রক্তদাতাদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পান?
আরমান: বর্তমানে আমাদের প্রায় ছয়শতাধিক ডোনার রয়েছেন। রক্তদাতাদের বড় অংশেই বয়সে তরুণ। আসলে কারো কাছ থেকে বল প্রয়োগ করেতো রক্ত সংগ্রহ করা যায় না। সবাই স্বতস্ফূর্তভাবে রক্তদান করে। পাশাপাশি আমরাও শিক্ষার্থীদের রক্তদানে উৎসাহিত করার চেষ্টা করি। প্রতিদিন গড়ে ৪ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে থাকি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পথচলার প্রায় এক দশক পার করল তারণ্য। লক্ষ্যমাত্রার কতটুকু অর্জন করতে পেরেছেন বা পারছেন?
আরমান: আমাদের লক্ষ্যের বিষয়ে প্রথমেই আপনাকে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। বুঝতেই পারছেন তরুণদের নিয়ে আমরা যে কাজটি করছি, তা একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের কাজের ধরন ও পরিধি প্রতিনিয়তই বাড়ছে। সামনের দিনে তা আরো প্রসারিত হবে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় বলে রাখি, আসলে তারুণ্যের স্বেচ্ছাসেবকরা পড়ালেখা শেষ করে কর্মক্ষেত্রেও সফলতার সাথে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক কার্যক্রমে অবদান রাখছেন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেমন সহযোগিতা পান?
আরমান: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তারুণ্যের কাজকে সবসময়ই উৎসাহিত করে। তারুণ্যের বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে নিষ্কন্টক অনুমোদন ও নানাভাবে সহযোগিতা করে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালেয় প্রশাসনের কাছে তারুণ্য পরিবার কৃতজ্ঞ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: একটি সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা থাকে। এ ধরনের কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে?
আরমান: সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অফিসকক্ষ না থাকায় আমাদের বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বর্তমান প্রশাসনের ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। আশা করছি শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়া তেমন কোন তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়নি। আগামীদিনেও ভালোভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ‘তারুণ্য’ সংগঠনকে নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আরমান: আমরা একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার কাজ করছি। খুব শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য তা উন্মুক্ত করা হবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে সাহিত্য-প্রবন্ধের পাঠাভ্যাস গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এর মাধ্যমে আমরা ইতিবাচক তরুণসমাজ গঠনে আরো একধাপ এগিয়ে যাবো।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে ধন্যবাদ।
আরমান রেজা জয়: আপনাদেরকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।