শিক্ষার্থীদের জন্য যা প্রয়োজন, তাই করবো
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দ্বিতীয় নারী ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়লা আরজুমান বানু। ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধা সংশ্লিষ্ট কাজে অংশগ্রহণ করতে দেখা যেত তাকে। শিক্ষার্থীদের চাওয়া পাওয়া পূরণে কীভাবে তিনি চেষ্টা করছেন; সেসব নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’র মুখোমুখি হয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি-এস এফ রহমান।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দায়িত্ব পাওয়ার আগেও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে আপনাকে সামনের সারিতে দেখা গেছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর সেটি কিভাবে দেখছেন?
ড. লায়লা আরজুমান বানু: কোন শিক্ষার্থী যেন ক্ষতির সম্মুখীন হোক, সেটা আমি চাই না। এজন্য সব সময়ই নিজেকে তাদের একজন অভিভাবক হিসেবে দেখতে চাই। অভিভাবক হিসেবে যেখানেই হোক, যেভাবেই হোক তাদের যদি উপকার করতে পারি কিংবা কোন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারি তাহলেই নিজেকে সফল মনে করবো।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দায়িত্ব পাওয়ার পর কর্তব্য বেড়ে গেল। এখন কি করতে চেষ্টা করছেন শিক্ষার্থীদের জন্য?
ড. লায়লা আরজুমান বানু: ব্যক্তি ছাত্র থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ছাত্র সংগঠন যারাই আমার কাছে কোন বিষয় নিয়ে এসেছে তাদের জন্য আমি একটা কথা বলেছি, তোমাদের জন্যই এখানে এসে বসেছি বা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তোমরা আমার সন্তানতুল্য আর আমি অভিভাবক। তোমাদের কিছু চাহিদা থাকবে। আমি যে সবকিছুই পূরণ করতে পারব সেটি নয়, একটি সীমাবদ্ধতা থাকবে। আমার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারি তাদের জন্য করব। যা করা প্রয়োজন হবে তাই করব।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার জন্য লাইব্রেরীতে সুযোগ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে আপনার অবস্থান বা পদক্ষেপ নিয়ে যদি বলতেন?
ড. লায়লা আরজুমান বানু: শিক্ষার্থীরা ডিসকাশন রুম খোলা রাখার বিষয়ে একটি দাবি নিয়ে এসেছিল। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে তাদের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি। আমার ছেলে-মেয়েরা আগে ৫৮ ঘন্টা পড়ালেখার সুযোগ পেত; এখন যদি ৭০ ঘন্টা পায় তাহলে অবশ্যই সকলের জন্য ভাল। আমি আবেদন করতে বলেছি। ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের এক্সট্রা কারিকুলার-কো কারিকুলার কার্যক্রমের জন্য কি ধরনের সুযোগ দিচ্ছেন?
ড. লায়লা আরজুমান বানু: কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ব্যায়ামাগার আছে। বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে। হলগুলোতে তাদের জন্য গেমস রুম আছে, শরীরচর্চা করার জন্য ব্যায়ামাগার, লাইব্রেরী ও পত্রিকারুম; অর্থাৎ ছেলেরা যা চায় সবই আছে। আমি মনে করি কোন সমস্যা নেই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নারী শিক্ষার্থীসহ অনেকেই সান্ধ্য আইন বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করছে। আপনি কি ভাবছেন?
ড. লায়লা আরজুমান বানু: নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটা মাত্র বাধ্যবাধকতা আছে যে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে হলে প্রবেশ করতে হবে। তবে বিষয়টি হলো একজন অভিভাবক হিসেবে আমার মেয়ের ক্ষতি হোক সেটি আমি চাই না। কারণ আমাদের সামাজিক অবস্থান এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছায়নি যে, একটা মেয়েও মানুষ, ছেলেও মানুষ। এ সময়সীমা বাড়াতে হলে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নারী শিক্ষার্থীদেরও কিছু প্রশিক্ষন দিতে হবে। সেদিকে আমরা পা বাড়াচ্ছি। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সাপেক্ষে এ সময়সীমা বাড়ানো যাবে। তবে এখ আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাচ্ছি। যাতে আমায় দেখে নারী শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হয়। তাদের আত্মবিশ্বাসটা বাড়ে। অবশ্যই সুযোগ পর্যাপ্ত আছে। তবে তাদের সচেতনতার অভাব রয়েছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আপনাকে।
ড. লায়লা আরজুমান বানু: ধন্যবাদ।