জাতীয় সংসদ নির্বাচন

দলের অনুমতি নিয়ে এলাকায় গিয়েছি, নবযাত্রা সূচিত হবে: আকরাম

ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান  © টিডিসি ফটো

আকরামুল হাসান মিন্টু। ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক পদে। এর আগে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রদলের সভাপতি পদেও ছিলেন।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১৯৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নরসিংদী-৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে লড়তে চান এ ছাত্রনেতা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গতি-প্রকৃতি ও সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ে কথা বলেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- নাজমুস সাদাত

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে দল মনোনয়ন দেবে কেনো? দল ও নির্বাচনী এলাকার মানুষের জন্য আপনার অবদান কী?

আকরামুল হাসান: আমি ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। দীর্ঘ পথচলায় ২০১৪ সালে আমাকে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে বিশেষ করে ১/১১ তে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছি। এজন্য গত ৪ বছরে শতাধিক মামলার আসামী হতে হয়েছে আমাকে। করতে হয়েছে কারাবরণ। আমার পিতা আলহাজ্ব মোঃ সুলতান উদ্দিন মোল্লা নরসিংদী জেলা বিএনপির সিনিয়র সভাপতি ও শিবপুর উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনিও দীর্ঘদিন যাবত বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত, একাধিক মামলার আসামী। এলাকায় ব্যক্তিগতভাবে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেছি, সাড়াও পেয়েছি। ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেছি সাধ্যমতো। অসুস্থ ও দরিদ্রদের সহযোগিতা করেছি। রক্ত ম্যানেজ করে দেওয়া, মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা ও মাদকের বিরুদ্ধে এলাকায় জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। খেলাধুলায় উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করেছি। এসব বিবেচনায় দল ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে আমাকে বেছে নিতে পারে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছেন? কেমন হবে?

আকরাম: নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে সরকারের ভয় আছে। লুটপাট, দুর্নীতি, দুঃশাসনের কারণে জনগণের যে অনাস্থা তাতে সরকার নার্ভাস। তবে আমি আশাবাদী গণতন্ত্রপ্রিয় জনগণ সকল অপকৌশল, ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে গণতন্ত্রের নবযাত্রা সূচিত করবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভোটের মাঠে দাঁড়াতে পারবেন? আপনাদের এজেন্ট কেন্দ্রে থাকবে?

আকরাম: স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় দেখা গেছে বিএনপির এজেন্টরা সরকার দলের সন্ত্রাসী ও প্রশাসনের হামলা, ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের মাঠে থাকতে পারেনি। এজেন্টরা কেন্দ্রে যেতে পারেনি, কেন্দ্রে থাকতে পারেনি। কারণ ওইসব নির্বাচনের পরেরদিনও একই সরকার ক্ষমতায় থাকে। তাদের ভীতিটা ছিল সেখানে। কিন্তু কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচন সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিজয়ী হলে এই জালিম সরকার ও তার অপশাসনের অবসান ঘটবে। সুতরাং এই নির্বচানে সকল চাপ, হুমকি উপেক্ষা করে দলের নেতাকর্মী, জনগণ মাঠে থাকবে। এজেন্টরা কেন্দ্রে থাকবে। আর যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বিজয় ছিনিয়ে আনার সক্ষমতা শিবপুরের জনগণের আছে।

 বিএনপি থেকে নরসিংদী-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য।

নরসিংদী-৩ আসনের এই মনোনয়ন প্রত্যাশী বলেন, এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার নির্বাচন।এবারের নির্বাচন আমাদের নেতা আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে দেয়ার নির্বাচন।এই নির্বাচন অবরুদ্ধ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নির্বাচন।সংসদ নির্বাচনে তরুণ যুবসমাজকে সংঘবদ্ধ করে এই চালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুতি নিয়েছি। এই লড়াইয়ে জিততেই হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভোটারদের কি বার্তা দিতে চান? এলাকার জন্য কি করবেন?

আকরাম: প্রথমত শিবপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করবো। কৃষি ও ক্ষুদ্র কুঠির শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনৈতিকভাবে এলাকার মানুষকে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে অগ্রাধিকার থাকবে। এলাকার মানুষ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হলে সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূল সম্ভব। পাশাপাশি গণশিক্ষা কার্যক্রম ও শতভাগ স্বাক্ষরতা নিশ্চিত করবো। আমি তরুণ, আমার কর্মস্পৃহা আছে। দীর্ঘদিন জনগণের সাথে থাকতে হবে, সেজন্য প্রতিশ্রুত পালনে আমার দায়বদ্ধতা থাকবে বেশি। 

আমার নির্বাচনী এলাকা শিবপুরে ২০০১ সালে বিএনপির সংসদ সদস্য প্রয়াত মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূইয়ার নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। পরবর্তীতে শিবপুরের এমপি হয়েছেন আওয়ামী লীগের দুইজন ব্যবসায়ী রাজনীতিক। রাজনীতি সচেতন শিবপুরবাসী এজন্য রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী রাজনীতিবিদের সেবা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের তফাত অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে। আমি মনে করি, জাতীয় রাজনীতিতে আমার ভূমিকার কারণে শিবপুরবাসী দীর্ঘমেয়াদে শিবপুরের উন্নয়ন ও জনগণের সেবা করার সুযোগ করে দেবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছাত্রদলের দায়িত্বে থেকে পূর্বে কেউ নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হয়েছেন?

আকরাম: ২০০১ সালে নাসিরউদ্দিন পিন্টু ছাত্রদলের সভাপতি থাকা অবস্থায় ঢাকা থেকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হয়েছেন। এর আগে ১৯৯১ সালে ছাত্রদলের আহবায়ক থাকা অবস্থায় নির্বাচন করে আমান উল্লাহ আমানও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: একদিকে আপনি নিজে একটি আসনে নির্বাচন করতে চান, অন্যদিকে সারাদেশের নির্বাচনে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনার ভূমিকা পালন করতে হবে। কীভাবে সমন্বয় করবেন?

আকরাম: সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্দিষ্ট মেয়াদের অতিরিক্ত ২ বছরেরও বেশি দায়িত্ব পালন করেছি। ২ বছর পর সভাপতি হলেও তার মেয়াদও শেষ হতো। তাছাড়া দলের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হয় এলাকার সাথে সম্পর্ক করতে। দলের অনুমতি সাপেক্ষে এলাকায় গিয়েছি। নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসন যেমন নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যায়, তেমন ছাত্রদল বা সংগঠন স্থানীয় প্রার্থীর অধীনে থাকে, কাজ করে। কেন্দ্র থেকে সারাদেশে ভূমিকা রাখার তেমন সুযোগ থাকে না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আকরাম: আপনাকেও ধন্যবাদ।


সর্বশেষ সংবাদ