০৭ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৫৭

ক্যাম্পাসে ফিরতে চান ট্রেনে কাটা পড়া শিক্ষার্থী রবিউল আলম

রবিউল আলম  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজতত্ত্ব বিভাগের রবিউল আলম গত ৮ আগস্ট নগরীর ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেন কাটা পড়েন। ঘটনায় তার শরীর থেকে দু’ পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এখন তিনি নিজ বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফে আছেন। সম্প্রতি  রবিউল আলমের সাথে কথা বলেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের  চবি প্রতিনিধি এ এইচ আজহার।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার শরীরের সর্বশেষ অবস্থা কেমন?  

রবিউল আলম: এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠিনি। আরো দুই-এক মাস সময় লাগতে পারে পুরোপুরি সুস্থ হতে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: চিকিৎসায় কেমন খরচ হয়েছে?   

রবিউল আলম: এটা দীর্ঘমেয়াদী ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা। ভালো পরিমাণের টাকা খরচ হয়েছে এখন পর্যন্ত। অনেকেই সহযোগিতা করেছেন। বন্ধু-বান্ধব সবাই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অ্যালামনাই এসোসিয়েশন সবাই সহযোগিতা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮০ হাজার টাকা, অ্যালামনাই থেকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। আর পরিবার থেকেও অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পরিবার এখন অনেক বেশি ঋণগ্রস্ত। প্রায় দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা ধার করেছি। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার টিউশনির টাকায় পরিবার এবং ছোট ভাইদের পড়াশোনা চলতো। এখন কী অবস্থায় আছে তারা?

রবিউল আলম: ছোট ভাইরা এখন কষ্ট করে চলছে। টাকা পয়সা দিতে পারি না। ছোট ভাই একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে পড়ছে। আরেকজন এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে। আমার পিছনে তার অনেক সময় চলে গেছে। এমনকি অনেক সময় রাত জাগতে হয়েছে। শেষে সে নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তারপরও কয়েক জায়গায় পরীক্ষা দিয়েছে। তবে ভালোভাবে প্রস্তুতি না নিতে পারার কারণে  ভর্তি পরীক্ষা ভাল হয়নি। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে যেতে পারছেন না। খারাপ লাগছে কী?

রবিউল আলম: হ্যাঁ, অনেক খারাপ লাগে। আগামী বছর মাস্টার্স পরীক্ষা আছে। সুস্থ হয়েই ক্যাম্পাসে যাবো।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পড়াশোনা শেষ করার পর চবি কর্তৃপক্ষ আপনার চাকরি ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিল। এখন কি খবর ?

রবিউল আলম: বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে আশ্বস্ত করেছিলো চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে। শুনেছিলাম সিন্ডিকেট সভায়ও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যতটুকু জানি আমাদের সমাজতত্ত্ব বিভাগ থেকেও এই ব্যাপারে  একটা আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলো। পরে উপাচার্য স্যার তাদের আশ্বস্ত করেছে। তাই আমি আশাবাদী।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে কেউ আপনার খোঁজখবর নেয় কিনা?

রবিউল আলম: আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট অনেক বেশি কৃতজ্ঞ। আর বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই আমাদের উপাচার্য স্যারকে। উনি আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। প্রক্টর স্যার আমার নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে ধন্যবাদ।

রবিউল আলম: আপনাকেও ধন্যবাদ।