গুলি কেড়ে নিল আহাদুনের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন
- নেত্রকোনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:২১ PM , আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১২:২৩ PM
ছেলের স্বপ্ন ছিল বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। তবে তার আগেই দুটি গুলিতে শেষ হয়ে গেল সেই স্বপ্ন। সন্তানকে হারিয়ে এখন পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বাবা-মায়ের চোখে সন্তানের চেহারা এখন শুধুই কল্পনা। ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে আহাদুন।
জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই সংঘর্ষ চলাকালে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় আহাদুন। দুদিন খোঁজাখুঁজির পর ছেলের গুলিবিদ্ধ লাশের সন্ধান পান বাবা মজিবুর রহমান। খোঁজ পেয়ে ২০ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ছেলে আহাদুনের মৃতদেহ শনাক্ত করেন। তবে সেদিন ছেলের লাশ বের করতে পারেননি। পরের দিন ময়নাতদন্তসহ সব কাজ শেষ করে লাশ বের করেন।
মজিবুর রহমান কয়েক বছর আগে কাজের সন্ধানে সপরিবারে ঢাকায় চলে যান। ঢাকার মেরুল বাড্ডার বৈঠাখালী এলাকায় বসবাস শুরু করেন। নিহত আহাদুন তার তৃতীয় সন্তান। সে ঢাকা উত্তর বাড্ডা ইউসেফ গাজী সেকান্দর আলী টেকনিক্যাল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি আহাদুন বাবার ব্যবসায় সহযোগিতা করত।
আহাদুনের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, আমার ছেলেকে দুটি গুলি করেছে। একটি গুলি মাথায়, আরেকটি পায়ে। আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। স্বপ্নটা আর পূরণ হতে দিল না। দুই গুলিতে সব শেষ।
তিনি আরো বলেন, প্রথমে ছেলের খোঁজ পেলেও লাশ বের করতে পারিনি। পরের দিন আইনি জটিলতা শেষে লাশ বের করি। ঢাকা থেকে বাড়ি পর্যন্ত লাশ নিয়ে আসতে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করি তাকে। আমরা গরিব মানুষ, কার কাছে বিচার চাইব। আমার ছেলের মৃত্যুর বিচার কেউ করবে না।
আহাদুনের চাচা আবুল হোসেন বলেন, আহাদুন বিভিন্ন নষ্ট ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ঠিক করতে পারত। সেই সঙ্গে বাবার দোকানে সহযোগিতা করত। দুই গুলিতে সব শেষ হয়ে গেছে। এতটুকু ছেলে কার কী ক্ষতি করেছিল।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান বলেন, নিহতের পরিবারের খোঁজ নিয়েছি। সরকার থেকে যখন যা আসবে তা দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।