কর্মক্ষেত্রে দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরির লক্ষ্যে গুণগত শিক্ষা প্রদান করছে ইউআইইউ’র ফার্মেসি বিভাগ
ড. তাহমিনা ফয়েজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ থেকে বি. ফার্ম. ও ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি এন্ড ফার্মাকোলজি বিভাগ থেকে এম. ফার্ম. সম্পন্ন করেছেন। পিএইচডি করেছেন জাপানের নাগোয়া ইউনিভার্সিটিতে মলিকুলার বায়োলজি বিষয়ে দেশটির বিখ্যাত ফার্মাসিস্ট অধ্যাপক কেনজি কাদোমাতসু’র তত্ত্বাবধানে। পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরে তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পাঁচ বছর কর্মরত ছিলেন।
২০২৩ সালে আমেরিকা থেকে পোস্টডক সম্পন্ন করে তিনি সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ইউআইইউ ফার্মেসি বিভাগে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। দেশে এবং দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাসহ নানা অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এই সহযোগী অধ্যাপক সম্প্রতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুখোমুখি হয়েছেন দেশের উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, ফার্মেসি শিক্ষা এবং ওষুধ শিল্পখাতসহ নানা বিষয় নিয়ে। গল্প-আলাপে তার চৌম্বক অংশ তুলে ধরেছেন খাঁন মুহাম্মদ মামুন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা কেন ইউআইইউ’র ফার্মেসি বিভাগকে তাদের পছন্দের তালিকায় রাখবে? এখানে কী কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) ফার্মেসি বিভাগ পড়াশোনা, সিলেবাস, হাতে-কলমে শেখার সুযোগ এবং গবেষণায় দেশের সবচেয়ে আধুনিক এবং সমৃদ্ধ একটি বিভাগ। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় অত্যাধুনিক ল্যাব রয়েছে যেখানে তারা হাতে-কলমে শেখার সুযোগ পাচ্ছে। এসব ল্যাবে সবচেয়ে আধুনিক এবং সময়োপযোগী যন্ত্রপাতি রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অত্যাধুনিক ল্যাব ও যুগোপযোগী ফার্মেসি শিক্ষা প্রদানে ইউআইইউ’র ফার্মেসি বিভাগ
ফার্মেসি শিক্ষায় মৌলিক বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখা বাধ্যতামূলক—সেজন্য আমাদের সব আয়োজন রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য। ইউজিসি এবং ফার্মেসি কাউন্সিল অব বাংলাদেশ অনুমোদিত এ প্রোগাম শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে আপডেটেড করে সাজানো হয়েছে এবং এখানে অধ্যয়নের সুযোগ পেলে শিক্ষার্থীরা চাকুরির বাজারে উপযোগী ও দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে পারবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় বিবেচনায় কেন ইউআইইউ’র ফার্মেসি বিভাগ এগিয়ে থাকবে?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: এখানকার শিক্ষার পরিবেশ এবং মানের কারণে শিক্ষার্থীরা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় এগিয়ে থাকবে। এছাড়া এখানকার ল্যাব সুবিধা, গবেষণার সুযোগ, সেন্ট্রাল ও সেমিনার লাইব্রেরি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক, পড়াশোনার মান, আপডেটেড সিলেবাস, দক্ষ শিক্ষক-গবেষকসহ সব ধরনের সুবিধাই শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে। যেখানে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভর্তির পর তাদের জন্য ল্যাব স্থাপন বা অন্যান্য সুবিধাদি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়, সেখানে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন সব আয়োজন শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পন্ন করেছি।
এককথায় শিক্ষার্থীরা ফার্মেসি শিক্ষায় দেশের সবচেয়ে সুবিধাসম্পন্ন এবং আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউআইইউ’র ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে কর্মক্ষেত্রের জন্য উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
এছাড়াও আমরা প্রথমবারের মত শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে ৩ মাসের নন-ক্রেডিট ‘হসপিটাল ট্রেনিং’ এর সুযোগ রেখেছি। ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে হসপিটাল ফার্মাসিস্ট, ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট, কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা এখানে নিজেদের মেধাকে আরও বেশি শানিত করার সুযোগ পাবে। বর্তমানে আমাদের বিভাগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:১২।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রাযুক্তিক সময়ের পরিবর্তন বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখার সুযোগ ও দক্ষ করার চ্যালেঞ্জ রয়েছে—সে বিবেচনায় ইউআইইউ’র ফার্মেসি বিভাগ শিক্ষার্থীদের কতটুকু হালনাগাদকৃত সিলেবাসের সাথে পরিচিত করতে পারছে এবং শিক্ষার্থীরা আসলে কতটুকু শিখতে পারছে?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: আমাদের সিলেবাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকা ও কানাডাসহ পৃথিবীর নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস ও কারিকুলামের আদলে সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের হাতে-কলমে শেখানোর জন্য আমাদের ল্যাবগুলোতে সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্রপাতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজার উপযোগী গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে অনন্য ইউআইইউ’র স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্স
এখান থেকে শিক্ষার্থীরা ওষুধ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ গবেষণা করার সুযোগ পাবে। এককথায় ফার্মেসি শিক্ষায় দেশের সবচেয়ে সুবিধাসম্পন্ন এবং আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউআইইউ’র ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে কর্মক্ষেত্রের জন্য উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ইউআইইউ’র ফার্মেসি বিভাগে উচ্চশিক্ষার ব্যয়, স্কলারশিপ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কেমন?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: ইউআইইউ’র শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ এবং টিউশন ফি ওয়েভারের সুযোগ দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। মেধাবী শিক্ষার্থীদের আমরা সবসময়ই উৎসাহিত করি—তাদের জন্য শতভাগ স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি ইউআইইউ’তে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন স্কলারশিপের জন্য সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এন্ড কো-অপারেশন বিভাগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি গবেষণার বাতিঘর ইউআইইউ’র সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এখানে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি গবেষণার সুযোগ কেমন?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: আমাদের সব ধরনের উচ্চ মানের মেশিনারিজ রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য। তারা পাঠ্য বিষয়গুলো ব্যবহারিক কোর্সের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষকদের সাথে সম্মানীসহ রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট (RA) হিসেবে কাজ করে শেখারও সুযোগ পাবে। আমাদের শিক্ষকরা পাঠদানের পাশাপাশি গবেষণাও করে থাকেন। ফলে শিক্ষার্থীরা শেখার পাশাপাশি গবেষণায় আগ্রহী হলে তারাও সর্বোচ্চ সুযোগ পাবেন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক, পড়াশোনার পরিবেশ এবং শিক্ষকদের দক্ষতা কেমন?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: আমাদের শিক্ষকরা সবসময়ই শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক। ফলে এখানে শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের একটি হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আর ইউআইইউ’র পরিবেশ সবসময়ই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য সর্বোচ্চ উপযোগী। এখানকার পড়াশোনার পরিবেশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বেশ সন্তুষ্ট। আর আমাদের শিক্ষকরা দেশের শীর্ষ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তাদের অধ্যয়ন সম্পন্ন করেছেন এবং সর্বোচ্চ মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। ফলে তাদের কাছ থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরাও আরও অনেক বেশি শেখার সুযোগ পাচ্ছে।
এখানকার ল্যাব সুবিধা, গবেষণার সুযোগ, সেন্ট্রাল ও সেমিনার লাইব্রেরি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক, পড়াশোনার মান, আপডেটেড সিলেবাস, দক্ষ শিক্ষক-গবেষকসহ সব ধরনের সুবিধাই শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সামগ্রিক বিচারে দেশের উচ্চশিক্ষা খাত নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী? আমরা কি সময়োপযোগী এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে পারছি?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: আমাদের দেশে ইন্ড্রাস্ট্রি এবং একাডেমিয়ার মধ্যে একটি দূরত্ব রয়েছে। আমাদের একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলো যখন ইন্ড্রাস্ট্রির সাথে একসাথে কাজের সুযোগ পাবে—তখন ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা এবং সুযোগ বোঝা সহজ হবে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদানুযায়ী উপযুক্ত হিসেবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে পারবে। এটি আমাদের দেশে চলমান সংকটের সমাধান দিতে পারে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বর্তমানে দেশে ওষুধ শিল্প একটি প্রতিষ্ঠিত খাত। বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত ওষুধ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরাই ওষুধ শিল্পে অবদান বেশি রাখছে—সেক্ষেত্রে এ খাতে যুগোপযোগী উন্নতির জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আসলে কী করতে পারে?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: বর্তমানে দেশে ৩৫০ টির বেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানিতে উৎপাদিত ওষুধ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এতে অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা যোগ হচ্ছে। ১৯৮২ সালে ড্রাগ কন্ট্রোল অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে ফার্মাসিস্টরা ফার্মেসি কোম্পানিতে কাজের বিশাল সুযোগ পেয়ে এক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নয়নের স্বাক্ষর রেখেছে। একসময় ওষুধ আমদানির দেশ থেকে এখন ১৬০ টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছি আমরা। এই কৃতিত্বের অংশীদার নির্দ্বিধায় ফার্মাসিস্টবৃন্দ।
আরও পড়ুন: এমআইটি-হার্ভার্ডের মতো গবেষণাগারের সুযোগ ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে
বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৩০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ ফার্মেসি কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদনপ্রাপ্ত। কিন্তু পর্যাপ্ত ল্যাব ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা না থাকার ফলে মান নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় পিসিবি কর্তৃপক্ষ গতবছর বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে সাময়িকভাবে তাদের ফার্মেসি প্রোগ্রামে ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। বর্তমানে ইউআইইউ সহ বেশ কিছু প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুণগত ফার্মেসি শিক্ষা প্রদান করছে। ফার্মেসির মেধাবী শিক্ষার্থীরা সময়োপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে ফার্মাসিস্ট হিসেবে এই শিল্পকে দেশে ও বিদেশে সুনাম অর্জন করতে সহায়তা করছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার শৈশব-কৈশোর, বেড়ে ওঠা এবং পরিবারের গল্প শুনতে চাই। পাশাপাশি আপনার পড়াশোনা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাই।
ড. তাহমিনা ফয়েজ: আমার শৈশব এবং কৈশোর ঢাকাতেই কেটেছে। স্কুল-কলেজ শেষে আমি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় – দুটিতেই ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হই। সেখান থেকে বি ফার্ম এবং এম ফার্ম করি। এম ফার্মে পড়াশুনার পাশাপাশি আমি ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসে কাজ করেছি।
ইউআইইউতে শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যাধুনিক ল্যাব ফ্যাসিলিটি রয়েছে—সেখানে ওষুধ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এরকম প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্ড্রাস্ট্রির সাথে সরাসরি কাজ করতে পারলে নতুন কিছু করা সম্ভব হবে।
এরপর আমি জাপানে মনোবশু স্কলারশিপ নিয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করি। দেশে ফিরে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ফার্মাসিউটিক্যাল সাইন্সেস বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করি। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে পোস্ট ডক শেষ করে ২০২৩ সালে দেশে ফিরে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ফার্মেসি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ওষুধ শিল্পের বিকাশের ফলে এখন আমাদের মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই তৈরি হচ্ছে। কিন্তু উচ্চ প্রযুক্তির বিদেশি ওষুধ এখনও বিপুল পরিমাণে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক উপায়ে দেশে আসছে। এ সমস্যাটি দূর করার উপায় কী?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: এক্ষেত্রে আসলে আমাদের দেশে আরও বেশি গবেষণা এবং উদ্ভাবন জরুরি। আমাদের দেশেই বর্তমানে প্রায় সব ধরনের ওষুধই উৎপাদিত হচ্ছে। এ উৎপাদন আরও বাড়ানো উচিত—বিশেষ করে যেসব ওষুধ আমাদের আমদানি করতে হয়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বাংলাদেশে ওষুধের কাঁচামালের সংকট রয়েছে। প্যাটেন্ট সুবিধাও ভবিষ্যতে থাকবে না। এটি সমাধানে একাডেমিক জায়গা থেকে নীতি নির্ধারণী পর্যায় এবং শিল্পখাতকে সংযুক্ত করে কাজ করার সুযোগ রয়েছে কিনা?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: এক্ষেত্রে দেশের ইন্ড্রাস্ট্রিগুলো একাডেমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সমন্বয় করে কাজ করলে নতুন নতুন গবেষণা এবং উদ্ভাবন সম্ভব হবে। যা আমাদের শিল্পকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। বর্তমানে একটি ওষুধ প্রস্তুত করতে হলে তার সম্পূর্ণ মডিউল জমা দিতে হয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে।
আরও পড়ুন: ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জে যেভাবে শ্রেষ্ঠত্বের জয়মালা বুঁনলো ইউআইইউ
তারপর তারা এটি যাচাই-বাছাই শেষে অনুমোদন প্রদান করেন। আমাদের ইউআইইউতে অত্যাধুনিক ল্যাব ফ্যাসিলিটি রয়েছে—সেখানে ওষুধ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এরকম প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্ড্রাস্ট্রির সাথে সরাসরি কাজ করতে পারলে নতুন কিছু করা সম্ভব হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বাংলাদেশে ওষুধ গ্রহণে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসচেতনতার বিষয়টি বহুল আলোচিত। আবার অনেক চিকিৎসক অতিরিক্ত ও ভুল ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন। প্রযুক্তির প্রয়োগ ও যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এ বিষয়ে কিছু করা যায় কিনা?
ড. তাহমিনা ফয়েজ: বিষয়টি নিয়ে সমন্বিত কাজ করা যেতে পারে। চিকিৎসকদের পাশাপাশি দেশের চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রগুলোতে যদি একজন রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্ট থাকেন তাহলে ওষুধের ভুল প্রয়োগের সুযোগ অনেকাংশে কমে যাবে। পাশাপাশি ফার্মেসি বা ওষুধ বিপণন কেন্দ্রগুলোতেও যদি ফার্মাসিস্টরা কাজ করতে পারেন তাহলেও এটি কমানো সম্ভব হবে। এসব ক্ষেত্রে আমাদের সমন্বিত সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।