মুক্তিযোদ্ধা কোটা
৩০ শতাংশের চেয়ে কম হলে মানবো না
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র জারির পর বুধবার বিকাল থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। দাবি আদায়ে আজ শাহবাগে মহাসমাবেশ করবেন তারা। আন্দোলনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক শেখ আতিকুর বাবুর সাথে কথা বলেন আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক নূর হোসেন ইমন
টিডিসি: আপনারা কেন আন্দোলন করছেন?
শেখ আতিকুর বাবু: দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে আমাদেরকে পতাকা উপহার দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরকে সম্মানস্বরূপ কোটা দিয়েছেন। আমরা এই মুক্তিযোদ্ধা কোটার পূনর্বহাল চাচ্ছি। আমাদের দাবি ৬টি। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটির প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিসিএসসহ সব চাকরির পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে, স্বাধীনতাবিরোধী- রাজাকার ও তাদের বংশধরদের চিহ্নিত করে সরকারি সব চাকরি থেকে বহিষ্কার, নাগরিকত্ব বাতিল ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনুকূলে ফেরত নিতে হবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
টিডিসি: আপনাদের আন্দোলনে কী সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও সন্তানের সম্পৃক্ত হচ্ছে?
শেখ আতিকুর বাবু: ৩ অক্টোবর থেকে আমরা আন্দোলন শুরু করি। সেদিন আমাদের ডাকে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও তাদের সন্তানেরা আন্দোলন করেছে। ৬ তারিখ আমরা শাহবাগে মহাসমাবেশ করব। সেদিন সারাদেশ থেকে মানুষজন আসবে।
টিডিসি: আপনারা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা কী মনে করেন না স্বাধীনতার এতো বছর পরে এসেও কোটা একটি বৈষম্য?
শেখ আতিকুর বাবু: এ জায়গাতে আমরা কোনো অসামঞ্জস্যতা বা বৈষম্য দেখছি না। চাকরিতে প্রিলিমিনারীর ক্ষেত্রে সমপরিমাণ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাকে পাশ করতে হয়। রিটেনের ক্ষেত্রে সমপরিমাণ পাশ করতে হয়। এক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য নাই।
টিডিসি: সরকার চাকরিতে বিশেষ নিয়োগের সুযোগ রেখেছে। এর মাধ্যমে যদি সরকার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় সেক্ষেত্রে আপনারা কী বলবেন? বিশেষ নিয়োগটাকে কিভাবে দেখছেন?
শেখ আতিকুর বাবু: বিশেষ নিয়োগ একটি সময়ের আবেদনে হয়। কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে নিয়োগ সেটার জন্য কোটার ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে এদেশে কোটা চালু হয়ে হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর কোটা ব্যবস্থা চালু রাখে নেই তারা এবং সে সুষ্ঠু ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কোনো নিয়োগ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সেটি চালু করেন। তারপর দেখা গেছে যে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বয়সও শেষ। তাই তিনি নাতি-পুতিদের কোটার অর্ন্তভূক্ত করেন।
টিডিসি: অনেক সময় দেখা গেছে, প্রার্থীর অভাবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূর্ণ হয়না। সেক্ষেত্রে যদি সরকার কোটা কমিয়ে ১০ বা ২০ শতাংশ করে তাহলে আপনারা কী তা মেনে নেবেন?
শেখ আতিকুর বাবু: কোটা যদি পূর্ণ না হয় সেক্ষেত্রে মেধা তালিকা থেকে নেয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই কোটা কারো জন্য প্রতিবন্ধকতা নয়। আমরা ৩০ শতাংশ কোটার দাবিতেই আন্দোলন করছি। সরকার যদি ৩০ শতাংশ এর কমও দেয় তাহলে তা আমরা মেনে নেব না।
টিডিসি: আপনাকে ধন্যবাদ।
শেখ আতিকুর বাবু: আপনাকেও ধন্যবাদ।