সংবাদ সম্মেলনে একদল শিক্ষার্থী

বুয়েটে সক্রিয় হিজবুত তাহরীর-শিবির, প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজে

  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) হিজবুত তাহরীর ও ছাত্রশিবিরের মতো মৌলবাদী সংগঠন যে সক্রিয় তার অভিযোগ করেছিলাম। আজকে আমাদের অভিযোগের সত্যতা বুয়েটের সিসিটিভি ফুটেজ দেয়।

নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতিসহ, সামাজিক অবমাননা ও কালচারাল র‍্যাগিং এর প্রেক্ষিতে প্রেরিত অভিযোগের তদন্ত এবং ক্যাম্পাসে জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বুয়েটের একদল শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলেছেন। আজ সোমবার বিকেল ৪টার দিকে বুয়েট শহীদ মিনারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তারা। এসময় লিখিত একটি বিবৃতি পাঠ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থী, ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর দ্বারা আমাদেরকে  অনলাইন ও সরাসরিভাবে হেনস্তা ও অপমানের শিকার হতে হয়েছে । রাতে একসাথে কাচ্চি খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে মিথ্যাচার রটানো হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এসেছিল এমন বানোয়াট মিথ্যা বুয়েটের চলমান ছাত্রদের ফেসবুক গ্রুপে অজ্ঞাতনামা পোস্ট দিয়ে ভিত্তিহীনভাবে সবার সামনে আমাদেরকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের উপর যে মব জাস্টিস শুরু করে তা আমরা উপাচার্য বরাবর জমা দিয়েছি, তবে কোনো ফায়দা হয়নি।

এর আগে, ২০২৩ সালের ২১ শে জুলাই সুনামগঞ্জে আটককৃত ২৪ বুয়েট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়, আমরা একটি মানববন্ধনের (আগস্ট ৬, ২০২৩) মাধ্যমে তার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছিলাম। কিন্তু এই মানববন্ধনের পরেই বিষয়টি বদলাতে শুরু করে। মানববন্ধনে দাঁড়ানোর কারণে সকল ছাত্রদের ডেকে ডেকে জবাবদিহিতা চাওয়া হয়। বিভিন্নভাবে হলে সিট বাতিল অথবা টার্ম বহিষ্কার এর ভীতি প্রদর্শন করে হলে অরিত্র ঘোষ এবং মিশু দত্তকে আনুমানিক সময় রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত আহসান উল্লাহ হলের কমন রুমে এবং মাঠে জবাবদিহিতা চাওয়া হয়।সবাইকে ডেকে এনে সবার সামনে আমাদের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া একেই সঙ্গে ক্যাম্পাস ও কিছু মানুষ দ্বারা অসংলগ্ন আচরণ আমাদের অপমানের শামিল বলে আমরা মনে করি। খেলাধুলা এমনকি ব্যাচের বা ডিপার্টমেন্টের যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে মানসিকভাবে অত্যাচার চালানো এবং একটা পর্যায়ে আমাদের সাথে স্টাডি ম্যাটেরিয়ালস শেয়ার না করার জন্য ঘোষণা করে একটি দল।  তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর তাদের মতামত চাপিয়ে দেয়। কেউ যদি না মানে তাকেও হেনস্তা করে হবে এমন হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। তদন্ত অনুযায়ী আমরা এর সুষ্ঠু বিচারসহ আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ক্যাম্পাসে হিজবুত তাহরীর ও শিবিরের মতো মৌলবাদী সংগঠন যে সক্রিয় তার অভিযোগ করেছিলাম। আজকে আমাদের অভিযোগের সত্যতা বুয়েটের সিসিটিভি ফুটেজ দেয়। সেই সিসিটিভি ফুটেজে যাদের দেখা গেছে তাদের বিরুদ্ধে খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তারা কি বুয়েটের নাকি বাইরের এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সন্দিহান। যদি তারা বুয়েটের বাইরের হয় তবে তারা বুয়েটের অভ্যন্তরে প্রবেশ কিভাবে করলো? আর যদি বুয়েটের হয় তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের পরিচয় উল্লেখ করে তাদেরকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হোক। 

এছাড়াও টাঙ্গুয়ার হাওরে যারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত থাকার মামলার আসামী তাদের সাথে একই ক্যাম্পাসে একসাথে থাকাটা আমাদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। জঙ্গীবাদের সিক্রেট গ্রুপে আমাদের নাম ও পরিচয় উন্মোচন আমাদের জন্য ভীতিকর এবং আমরা ধারণা করি আমাদের পরিচয় সেখানে উন্মোচিত করার সাথে অবশ্যই বুয়েটের কেউ সংযুক্ত। কে বা কারা এটা করছে এই বিষয়ে লক্ষ্যপাত করার জন্য অনুরোধ জানাই।

তাদেরকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে দ্রুততম সময়ে তুলে দেওয়া যায় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য ততই মঙ্গল বলে আমরা মনে করি। ক্যাম্পাসের এরকম অস্থিতিশীল পরিবেশে জামিনে থাকা আসামীদের সাথে একই ক্যাম্পাসে থাকা যেহেতু খুব ভীতিকর। যতদিন পুলিশ কেসের নিষ্পত্তি হচ্ছে না তাদেরকে সাময়িকভাবে একাডেমিক বহিষ্কার করা হোক। যারা তাদের সাথে জড়িত বা মদতদাতা হিসেবে রয়েছে, তাদেরকে সবকিছুতে রাখার জন্য পিছন থেকে কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকে শনাক্ত করে তদন্তের জন্য গোয়েন্দা নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হোক। সেটা না হলে বুয়েট ক্যাম্পাস সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে  আমাদের মত শান্তিকামী সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপদ আরোও ত্বরান্বীত হবে।


সর্বশেষ সংবাদ