ছোটবেলার ঈদ ‘বড়বেলা’য় ফিরিয়ে আনা যায় না
ঈদ অর্থ আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। এই খুশির মাত্রা বেড়ে যায় প্রিয়জনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারলে। তাইতো ঈদের ছুটিতে নাড়ীর টানে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। তবে সবার ভাগ্যে পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দে মাতোয়ারা হবার সুযোগ থাকেনা।
তেমনই একজন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের বিদেশি শিক্ষার্থী মীর মুতইয়াব হিলাল। উচ্চশিক্ষার জন্য নিজ দেশ ভারতের জম্মু-কাশ্মীর ছেড়ে কয়েকশো মাইল দূরে পাড়ি জমিয়েছেন বাংলাদেশে। ভিনদেশের মাটিতে কেমন কাটবে তার ঈদ, কেমনই বা তার ঈদ প্রস্তুতি এমনই বিভিন্ন দিক নিয়ে তার সাথে আলাপ করেছেন হাবিপ্রবি প্রতিনিধি রিয়া মোদক-
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঈদের কেনাকাটা শেষ?
মীর মুতইয়াব হিলাল: এবার ঈদের কেনাকাটা করিনি। পরে হয়তো কিছু পাঞ্জাবি কিনবো। আর আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনরা ওদিকে অনেক কষ্টে আছে। তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শনের জন্য এবার ঈদ উদযাপন কিছুটা কমিয়ে এনেছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি তো কাশ্মীরের অধিবাসী। আপনার অঞ্চলে ঈদ উপলক্ষ্যে বিশেষ কোন ঐতিহ্য আছে?
মীর মুতইয়াব হিলাল: কাশ্মীরে এমন কোন অনন্য ঐতিহ্য নেই যা আমরা ঈদের সময় অনুসরণ করি। আমরা কেবল মধ্যাহ্নভোজ এবং রাতের খাবারের জন্য সুস্বাদু খাবার তৈরি করি। বিশেষ বেকারি এবং নতুন জামাকাপড় কিনি যা আমার মনে হয় সারা বিশ্বের সর্বত্র করা হয়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঈদ এখন কেমন লাগছে?
মীর মুতইয়াব হিলাল : সত্যি কথা বলতে কি, বড় হয়ে ঈদ আর আগের মতো মনে হয় না। ছোটবেলায় ঈদের সালামী পেতে এবং নতুন জামাকাপড় কেনার ব্যাপারে আগ্রহ থাকতো। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেই আগ্রহ আর নেই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছোটবেলার প্রসঙ্গ থেকে বলি, ছোটবেলার ঈদের দিন কীভাবে কাটতো?
মীর মুতইয়াব হিলাল : ছোটবেলার ঈদের নানান স্মৃতি মনে পড়ে। এর মধ্যে ঈদের ১ম ও ২য় দিন নতুন জামাকাপড় পড়ে ঘুরতাম, মজাদার খাবার খেতাম। আমি যদি আমার বাড়িতে থাকতাম তবে আমি সাধারণত আমার মামা ও খালাদের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঈদুল ফিতরের মূল শিক্ষা কী হওয়া উচিত?
মীর মুতইয়াব হিলাল : আমার কাছে ঈদুল ফিতরের প্রধান শিক্ষা হল আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন তার জন্য কৃতজ্ঞ হওয়া এবং যদি আপনার সামর্থ্য থাকে তবে অন্যকে সাধ্যমত সাহায্য করা।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পরিবার ছাড়া কি এবারই প্রথম ঈদ?
মীর মুতইয়াব হিলাল : না। আমার পরিবারের সদস্যদের ছাড়া প্রথম ও স্মরণীয় ঈদ ছিল ২০২২ সালের ঈদ। কারণ সেবছর পড়াশোনার জন্য বাংলাদেশে আসি। জীবনের খারাপ সময়ের মধ্যে সেসময়গুলো অন্যতম। নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া ছিলো বড় চ্যালেঞ্জ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এবারের ঈদ তো ক্যাম্পাসেই কাটছে। এই ঈদের ছুটিতে আপনার পরিকল্পনা কি?
মীর মুতইয়াব হিলাল : আমি আমার কাশ্মীরি সহপাঠীদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে ঢাকায় যাবো। তারা সেখানে বিভিন্ন কলেজে পড়ছে। এটি আমার জন্য সুখ এবং একতার অনুভূতি তৈরি করবে। ছোটখাটো পুনর্মিলনও হয়ে যাবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঈদ উপলক্ষ্যে আপনাদের জন্য কোন আয়োজন থাকে?
মীর মুতইয়াব হিলাল : তারা শুধু ঈদের দিন দুপুরের খাবার দেন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঈদে প্রিয়জনদের উদ্দেশ্যে কোন বার্তা যদি দিতে চান
মীর মুতইয়াব হিলাল: আমার বার্তা সবাইকে ঈদ মোবারক। এই ঈদ সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ শান্তি ও মুক্তি। আমিন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার ঈদ আনন্দময় কাটুক, ভালো থাকবেন
মীর মুতইয়াব হিলাল : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।