শিক্ষার্থীদের আস্থাভাজন হয়ে উঠছে ঢাবির ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে ইংলিশ ভীতি দূর করতে, স্মার্ট সিটিজেন তৈরির লক্ষ্যে ২০১৯ সালে মাত্র ২০ জন সদস্য নিয়ে পথ চলা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাবের। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন রুম বরাদ্দ না পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে চলে পাঠদান। নানান প্রতিবন্ধকতার চড়াই উতরাই পেরিয়ে পঞ্চম বছরে পা রাখতে যাচ্ছে সংগঠনটি। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের আস্থার পাত্র হতে শুরু করা এই সংগঠনের সদস্যের সংখ্যা এখন ৩ হাজার। সংগঠনের নানা বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ হীরা সরকার। তার কথাগুলো শুনেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুহাইমিনুল ইসলাম।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শুরুতে কি স্বপ্ন নিয়ে এমন একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছেন?
মোহাম্মদ হীরা সরকার: আমরা বিশ্বাস করি স্মার্ট সিটিজেন হতে এবং গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং সহ নিজেকে একজন যোগ্য প্রতিযোগী হিসেবে ইংরেজি ভাষার উপরে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই৷ আমি স্বপ্ন দেখি অক্সফোর্ড, হার্ভাড, এমআইটি, ক্যামব্রিজসহ বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা একদিন পাল্লা দিবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে ইংলিশ ভীতি দূর করে, স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করাই একমাত্র লক্ষ্য বলবো আমি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দীর্ঘ এই চলার পথে আপনারা কেমন সাড়া পেলেন?
মোহাম্মদ হীরা সরকার: ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি প্রতিনিয়ত—বিশেষ করে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ভীষণ আগ্রহী। তবে সকল বর্ষের শিক্ষার্থীরা আমাদের ক্লাবের সদস্য হতে পারে। প্রতিবছর প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী আমাদের ক্লাবের আনুষ্ঠানিক সদস্য হয়৷
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনারা শিক্ষার্থীদের কি কি সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন?
মোহাম্মদ হীরা সরকার: আমরা আমাদের ক্লাবের মেম্বারদের আইইএলটিএস কোর্স, স্পোকেন ইংলিশ, ডিবেটিং, পাবলিক স্পিকিং, কমিউনিকেশন ইংলিশ, রিডিং স্কিল ডেভেলপমেন্ট, পাবলিক ম্যানেজমেন্ট, প্রোগ্রাম অ্যারেঞ্জমেন্ট হাতে কলমে শিখিয়ে থাকি৷
এছাড়া ক্লাব হ্যান্ডনোট, বই, লেকচার শিট সবই সরবরাহ করে থাকে ৷ পাশাপাশি রয়েছে ৫০০ ইংরেজি বইয়ের লাইব্রেরি। যেকোনো বই পড়ার অনন্য সুযোগ রয়েছে সদস্যদের। ক্লাব কম্পিটিশন, ফিল্ড ওয়ার্ক, শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন সুযোগ থাকবে সদস্যদের। কোর্স শেষে থাকবে সার্টিফিকেট।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কারা কারা এই ক্লাবের সদস্য হতে পারে ?
মোহাম্মদ হীরা সরকার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই আনুষ্ঠানিক সদস্য হতে পারে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যেকোনো স্কুলকলেজের শিক্ষার্থীদেরও রয়েছে ক্লাবের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও ওয়ার্কশপে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাদের ক্লাসের প্রক্রিয়া কেমন? কয়টা ক্লাস, সপ্তাহে কতটি ক্লাস? শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ক্লাস শিডিউল নির্ধারণ করেন কীভাবে ?
মোহাম্মদ হীরা সরকার: আমরা সপ্তাহে ৩ দিন ক্লাস নিয়ে থাকি। শুক্রবার শনিবার সোমবার সকাল বেলা টিএসসিতে ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থেই বন্ধের দিনগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে এমন রুটিন ঠিক করা হয়েছে ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভবিষ্যতে সংগঠন নিয়ে আপনাদের কি কি পরিকল্পনা রয়েছে?
মোহাম্মদ হীরা সরকার: আইইএলটিএস কোর্স, অ্যাকাডেমিক প্রেজেন্টেশন কোর্স, স্মার্ট প্রেজেন্টেশনসহ এককথায় স্মার্ট সিটিজেন হওয়ার জন্য যা প্রয়োজন সবকিছুই রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সংগঠন নিয়ে চলার পথে আপনারা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন কি না?
মোহাম্মদ হীরা সরকার: আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমরা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অফিস বরাদ্দ পাইনি। যেহেতু আমাদের সেশন কিংবা ওয়ার্কশপগুলো অনেক সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে তাই আমাদের ক্লাবের অফিস ও ওয়ার্কশপ পরিচালনার জন্য কক্ষের প্রয়োজন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কীভাবে একজন শিক্ষার্থী আপনাদের ক্লাবের সদস্য হতে পারবে?
মোহাম্মদ হীরা সরকার: চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি আমরা আমাদের ক্লাবের নতুন সেশনের সদস্য সংগ্রহ শুরু করেছি। এই সেশন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত চলবে। সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত কলাভবনের সামনে আমাদের ১টি বুথ থাকবে। সদস্য হতে পারবেন ১ম বর্ষ থেকে শুরু করে যেকোনো বর্ষের শিক্ষার্থী। সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়ায় শুধু আমাদের ক্লাবের ফরম পূরণ করতে হবে৷ সাথে ১হাজার টাকা দিয়ে পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দিতে হবে।
আমাদের একটা ওয়ার্কশপ ৬ মাসের মাসে ২০০ টাকা করে টোটাল ১২০০ টাকা। আমরা শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ১ হাজার টাকা করেছি। ২টা কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে। একবার সদস্য হলে আর কোনো চার্জ বা ফি প্রদান করতে হবে না। একবার সদস্য হলে আর কোনো চার্জ বা ফি প্রদান করতে হবে না। অনলাইন এবং অফলাইন যেকোনো মাধ্যমেই ক্লাস করার সুযোগ আছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আপনাকে। পত্রিকার সাথেই থাকবেন।
মোহাম্মদ হীরা সরকার: আপনাদেরকেও ধন্যবাদ ।