ক্যাডার তারিফের বিসিএস— মিশন ৪১, চ্যালেঞ্জ ৪৩ ও ফাইনাল ৪৪
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. তারিফ আল তাওহীদ। সম্প্রতি প্রকাশিত ৪৩তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফলে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। তার বাড়ি লালমনিরহাটের পাটগ্রামে।
একসময় নিজেই ছিলেন বিসিএস বিদ্বেষী। তাই প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ করার আগ পর্যন্ত কোনো ধরনের চাকরির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন নি। তবে পড়াশোনা শেষ করে বাবা-মা, স্ত্রী আর ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় বিসিএস যুদ্ধে নেমে পড়েন। টার্গেট নিয়েছিলেন যে কোনো ক্যাডার নয় শুধু প্রশাসন ক্যাডারই তার একমাত্র লক্ষ্য। সেই ব্রত থেকে প্রতিটি বিসিএসের আলাদা নাম দিয়ে একরকম মিশন শুরু করে নিজের লক্ষ্যে অধিষ্ঠিত হন তিনি। সেই স্বপ্ন জয়ের গল্প শুনিয়েছেন তারিফ। সেই সঙ্গে পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে একজন বিসিএস ক্যাডার প্রত্যাশী নিজেকে তৈরি করবেন। তার বিসিএস জয়ের গল্প এবং বিসিএস প্রত্যাশীদের দেওয়া পরামর্শ শুনেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের নিজস্ব প্রতিবেদক—মো. নূর এ আলম নুহাশ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার শিক্ষাজীবন ও পরিবার সম্পর্কে জানতে চাই।
মো. তারিফ আল তাওহীদ: আলহামদুলিল্লাহ, আমার শিক্ষাজীবনের প্রতিটি স্তর নিয়ে আমি গর্বিত ও খুশি এবং প্রতিটি ধাপ আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। আমার লেখাপড়াটা ছিল মূলত ঐচ্ছিক কাজ বাকি শিক্ষামূলক কাজগুলো ছিল আদর্শিক। সহজ কথা বললে আমার শিক্ষাজীবনের অন্য নাম আনন্দ।
আমার বাবা একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, মা পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট হেলথ ইন্সপেক্টর, বড় ভাই দহগ্রাম সরকারি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক এবং আমার স্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত। আমার প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শেষ করেছি তাহেরা বিদ্যাপীঠ ও পাটগ্রাম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। অত:পর পাটগ্রাম টি এন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি এবং টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স (সিপিএস) থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কখন থেকে বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করেছেন? আপনার এই যাত্রায় অনুপ্রেরণা কে ছিল?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: আলহামদুলিল্লাহ। মহান আল্লাহ তায়ালা আমার পথ প্রদর্শনকারী। পড়াশুনা শেষ করে ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে মূলত প্রস্তুতি শুরু করি। আমার প্রথম বিসিএস শুরু হয়েছিল ৪১তম বিসিএস দিয়ে। ওই বিসিএসে আমি নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলাম।
আগে আমি বিসিএস বিদ্বেষী ছিলাম। যারা এর প্রস্তুতি নিতেন তাদের সাথে এই নিয়ে মজা করতাম। কিন্তু যখন আমি ২০১৯ সালে যখন আমার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষ করি, তারপর আমার মা আর স্ত্রীর চাপে মূলত এই পথ বেছে নেয়া। আমার বাবা ও ভাই ও ছিল আমার এই পথে আশার নীরব সাপোর্টার। সেই সঙ্গে ঢাকায় কাজিপারা ও মিরপুর-১০ এ যে বাসাগুলোয় থাকতাম তার পরিবেশের কারণে বিসিএস একরকম আমার মাথায় গেঁথে গিয়েছিল। আর আমার আশেপাশে অধিকাংশই বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীরা ছিল যা আমার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যথাযথ পরিবেশ তৈরি করেছিল।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অন্য কোনো চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: এডমিন ক্যাডারকে প্রাধান্য দিয়েই আমি প্রস্তুতি শুরু করি। বিসিএস যাত্রায় অন্য কোনো চাকরির প্রস্তুতি আমি কখনও করিনি। নিজেকে যাচাইয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা দিয়েছি শুধু। ৪১, ৪৩ ও ৪৪ বিসিএসের মাঝখানে অসংখ্য সরকারি চাকরির পরীক্ষার কোনোটিতে আমি অংশ নেই নি। সেগুলোতে আমার কোনো আকর্ষণ ছিল না।
আমি স্থির করেছিলাম হয় ছক্কা না হয় অক্কা। এর মানে হয় আমি ক্যাডার হবো না হয় মার্ডার। তাই এমনভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি যাতে ক্যাডার হয়েই বের হয়ে আসি। প্রস্তুতির সময় আমি অনেকটা একগুঁয়ে ছিলাম। আমি বিসিএসগুলোর আলাদা নামকরণ করেছিলাম। যেমন, মিশন ৪১, চ্যালেঞ্জ ৪৩ এবং ফাইনাল ৪৪।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কীভাবে শুরু করেছিলেন? আপনার প্রস্তুতির বিশেষ কোনো টেকনিক ছিল কি-না, কোন বিষয়টি আপনাকে প্রস্তুতি এগিয়ে রেখেছিল বলে মনে করেন?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: কীভাবে শুরু করা উচিত সেটা বুঝতে না পেরে প্রথম দুই তিন মাস বেশ এলোমেলোভাবে পড়েছিলাম। পরবর্তীতে আমি সব ঠিক করে ফেলি। শুরু থেকেই বিসিএসের প্রত্যেকটা ধাপেই আমি সমান প্রস্তুতি নিয়েছি। আমার রুটিন ছিল এক বিষয় একটানা শেষ না করা পর্যন্ত আমি অন্য বিষয় শুরু করতাম না। যে বিষয়গুলো তেমন গুরুত্বপূর্ণ না সেগুলোতে মিনিমাম প্রস্তুতি রাখতাম।
আমার বই খুবই সীমিত। এইটা আমার অন্যতম টেকনিক বলা যেতে পারে। কোনো বই শেষ না করে আমি অন্য বই কিনিনি। আর পড়ার সময় এমন ভাবে দাগ দিতাম যাতে পরবর্তীতে আর পড়তে না হয়। তাই এমনও হয়েছে আমি একই বই কয়েকবার কিনেছি। বই আমি নতুন অবস্থায় পড়ে ফেলতাম। কারণ বই নতুন অবস্থায় পড়তে যেমন ভালো লাগে তেমনি পড়াগুলো তাজা হয়ে মাথায় গেঁথে যায়। এছাড়া আমি আমি প্রচুর পত্রিকা পড়তাম যা আমাকে বিসিএস জীবনে অনেক অগ্রসর করে দিয়েছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ক্যাডার চয়েসটা কীভাবে করেছিলেন? কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে ক্যাডার চয়েজ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: আমি ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স এর শিক্ষার্থী ছিলাম। তাই এডমিন ক্যাডার প্রথমে রেখেছিলাম। এছাড়া অতীত জীবনকে বিশ্লেষণ করে প্রশাসন ক্যাডার ছিল আমার সর্বোচ্চ পছন্দ। আর প্রশাসন ক্যাডারের কাজ যেমন- সমন্বয়, সংগঠন ও নেতৃত্ব। এসব বিষযে আল্লাহর রহমতে আমি যথেষ্ট দক্ষ ও পাক্কা। এই বিশ্বাস থেকেই মূলত আমি প্রশাসন ক্যাডারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি।
ভবিষ্যতে যেনো আফসোস করতে না হয় এমনভাবে ক্যাডার চয়েস দিতে হবে। সময়ের সাথে সাথে রুচি অভিরুচি পরিবর্তন হয়ে যায়। এইটা মাথায় রেখে ক্যাডার চয়েস দিতে হবে। প্রতিটি ক্যাডার সমান তবে কর্মক্ষেত্রে সব ক্যাডার সমান প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না তা মনে রেখেই ক্যাডার চয়েস দেওয়া উচিত।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রিলিমিনারি, রিটেন ও ভাইভাতে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: বিসিএস যাত্রায় সব থেকে বর্ণিল পর্যায় হলো প্রিলি। প্রত্যেকটি প্রিলি পরীক্ষার প্রস্তুতি, পরীক্ষা এবং ফলাফল আমার কাছে বেশ আনন্দের ছিল। এই লেভেলে আমাদের পড়াশোনা ছিল রিভিশন নির্ভর, খুবই সংক্ষিপ্ত ও প্রয়োজনীয়।
বিসিএসে সব থেকে চাপের যাত্রা হচ্ছে লিখিত এর প্রস্তুতি। সমুদ্র পরিমাণ পড়াকে হৃদে পরিণত করার নাম লিখিত। প্রতিটি প্রশ্ন কীভাবে লিখবো তা নিয়ে আমি খুব ভাবতাম, প্রচুর লিখতাম। কম বা বেশি যায় হোক তবে প্রাসঙ্গিক লিখতাম। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি প্রশ্নকে সমান গুরুত্ব দিয়ে লিখতাম। লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো টাইম ম্যানেজমেন্ট। সময় ভাগ করে একটি প্রশ্নে যতটুকু সময় থাকে ততটুকুই লিখতাম। সেই সঙ্গে বাংলা ও ইংরেজি লেখার ক্ষেত্রে হাতের লেখা ভালো রাখার চেষ্টা করতাম সবসময়।
আমার কাছে মনে হয় কি, কেন, কীভাবের অপর নাম ভাইভা। সব থেকে তৃপ্তি নিয়ে মূলত আমি ভাইভা নিয়ে লেখাপড়া করেছি। প্রথমে ভাইভার জন্য প্রয়োজনীয় একটা বাউন্ডারি তৈরি করেছি। ভাইভার প্রস্তুতি নিতে নিতে কিছু অভ্যাস গড়ে ওঠে যেমন- বই পড়া, নতুন জায়গা দেখা, ইংরেজিতে কথা বলার চেষ্টা করা, গুছিয়ে কথা বলা।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: একজন শিক্ষার্থী কখন থেকে এবং কীভাবে বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করবে?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: আমি মনে করি, কোনো শিক্ষার্থী বিসিএসের প্রস্তুতি যে কোনো সময় থেকেই শুরু করতে পারেন তবে শিক্ষা জীবন শেষ হলে যেন আর সময় নষ্ট না করেন। কারণ শিক্ষা জীবনে থাকা অবস্থায় অনেক কাজ থাকতে পারে। টার্গেট থাকতে হবে প্রথম প্রিলিতেই যেন পাস করতে পারেন। এজন্য প্রস্তুতি যখন থেকেই শুরু করেন সেটা যেন গুছানো হয়। অনেকে দেখা যায় দুই তিনটা প্রিলিতে পাস করতে পারছে না। এরপর পাস করলে হতাশা বাড়বে। এজন্য প্রথম প্রিলিতে পাস করা গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে অন্যান্য কাজগুলো সহজ ও তাড়াতাড়ি হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: একজন শিক্ষার্থী প্রিলি, রিটেন ও ভাইভার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিবেন?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: প্রথমত পড়া হবে সংক্ষিপ্ত কিন্তু ত্রুটিহীন। দ্বিতীয়ত, এক জিনিস বারবার পড়া। অর্থাৎ রিভিশন নির্ভর পড়া। গরুর যেমন জাবর কাটার অভ্যাস আছে তেমনি বিসিএসে প্রস্তুতি গ্রহণকারীদের জাবর কাটার অভ্যাস থাকতে হবে। যেদিন পরীক্ষার তারিখ প্রকাশিত হবে, সেদিন থেকে পরীক্ষার আগ পর্যন্ত পরিকল্পনা নিয়ে সমস্ত সিলেবাস রিচ করতে হবে। সেই সঙ্গে মডেল টেস্ট, লাইব্রেরি ওয়ার্ক কিংবা গ্রুপ ভিত্তিক লেখাপড়া অত্যন্ত জরুরি। আর মানচিত্রে হাফেজ হতে হবে।
বিসিএসে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় শুধুমাত্র প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন কারো সাথে আড্ডা দেওয়া যাবে কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে আড্ডা দেওয়া যাবে না। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে এই সময়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া যাবে না। এছাড়া সীমিত প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। যদি মনে হয় প্রযুক্তির ব্যবহার পড়াশোনার ক্ষতি করছে তাহলে প্রিলি ও রিটেন শেষ করে যেন এর ব্যবহারে অগ্রসর হয়।
নিয়মিত নামাজ ও প্রার্থনার মধ্যে থাকতে হবে। তাহলে মানসিক অবস্থা ভালো থাকবে। আর অপ্রয়োজনীয় ফেসবুক, ইউটিউব, তর্ক, বির্তক সব বাদ দিতে হবে। পড়াশোনা শুধু হবে মেজর বিষয়। অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় যেমন- খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, ঘুরাঘুরি, আরাম এইগুলা হবে নন-মেজর। ভকাবুলারি, প্রিপোজিশনের মতো খিটখিটে বিষয়গুলোকে শর্ট লিস্টেড করতে হবে। সীমিত আকারে করে বারবার পড়লেই যথেষ্ট।
শিক্ষার্থীদের আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটি হচ্ছে ডু অর ডাই নীতি। মনে রাখতে হবে যে আমি একটা চাকরি করবো। সেই ক্ষেত্রে প্রিলি, রিটেন এবং ভাইভা দিয়ে আমাকে চাকরিটা নিতে হবে। পাণ্ডিত্য এইখানে জরুরি বিষয় নয়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রিলি আর রিটেনের একসাথে প্রস্তুতি নেয় না অনেকে, অনেকে আবার নেয়, এক্ষেত্রে দ্বিধা-দ্বন্দে অনেকে ভালো প্রস্তুতি নিতে পারেনা। এ বিষয়ে আপনার পরামর্শ কি?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: আমি মনে করি যার প্রিলি যত শক্তিশালী তার লিখিত ততই মজবুত হবে। কারণ প্রিলির সাথে রিটেনের অনেক পড়া প্রায় একই। তাই কারো যদি সময় কম থাকে তাহলে প্রিলিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পড়া। এমনভাবে পড়া যাতে একই টপিক রিটেন প্রস্তুতির জন্য অনেকটা সহজ হয়ে যায়। যদি সময়ও থাকে তারপরেও স্বল্প মাত্রায় রিটেনের প্রস্তুতি নেওয়া যাবে কিন্তু বৃহৎ মাত্রায় করা যাবে না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভাইভার জন্য নির্দিষ্ট কোনো গাইডলাইন আছে কি? এ বিষয়ে আপনার পরামর্শ কি থাকবে?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: ভাইভার ক্ষেত্রে কোনো বিসিএসে সময় বেশি পাওয়া যায় কোনোটিতে আবার কম। এ জন্য প্রথমে একটা বাওন্ডারি তৈরি করতে হবে। আর যে প্রশ্নগুলো সেই সময়ের ভাইভার সময় করা হচ্ছে সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। এ সময় সব ধরনের বই পড়ার দরকার হবে না। যেমন- বঙ্গবন্ধু বা জাতির পিতা ভিত্তিক বইগুলো যেন দখলে থাকে। পুরো সিলেবাস যেহেতু অনেক বিশাল তাই কোনো কিছু একেবারেই যাতে ছেড়ে দেওয়াও না হয়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিসিএসে আসার জন্য একজন শিক্ষার্থী কোন ইথিক্যাল বিষয় মাথায় রাখবে?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: একজন শিক্ষার্থী শিক্ষা জীবনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই শিক্ষিত হন। তাই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার যে মানসিকতা এবং সামর্থ্য তা ইথিক্যালি মাথায় সেট করতে হবে। দুর্নীতি এবং নেগেটিভ বিষয়গুলো সমাজে থাকবে। আমরা যদি নিজ দায়িত্বটুকু ঠিকভাবে পালন করতে পারি তাহলে দেশে আর দুর্নীতি থাকবে না। ইথিক্স বা নৈতিকতার বিষয়গুলো মানুষ তার প্রত্যেক ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারে। যদি আমি ক্যাডার নাও হতাম তাহলেও আমাকে ইথিক্সের ব্যবহার করতে হতো। আর এখনও করতে হবে। আশা করি নিজের সর্বোচ্চটা দিতে পারলেই যে কোনো জায়গায় সর্ব উচ্চতায় যাওয়া সম্ভব।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
মো. তারিফ আল তাওহীদ: আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া যে আল্লাহ তায়ালা আমাকে এডমিন ক্যাডার বানিয়েছেন। তাই আল্লাহর কাছে দোয়া যেন তিনি আমাকে এই চাকরি থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যান। আর যেহেতু এইটা আমার একমাত্র চাকরি হতে যাচ্ছে তাই আমার আশা থাকবে আমি, আমার পরিবার এবং পরবর্তী প্রজন্ম যাতে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ পাই।
সর্বশেষ বলতে চাই, জাতির পিতার এই উক্তিটি পুরো বিসিএস যাত্রাতে আমার সঙ্গী ছিল—
“Great things are achieved through great sacrifices”