২০ আগস্ট ২০২৩, ১৭:৫৪

প্রাইভেট জবে ব্যর্থ হয়ে প্রথম বিসিএসেই প্রশাসন ক্যাডার জাবির ফারাজ

ফারাজ হাবীব খান  © টিডিসি ছবি

ফারাজ হাবীব খান। সম্প্রতি প্রকাশিত ৪১তম বিসিএসের চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা এই শিক্ষার্থী বর্তমানে কৃষি ও পরিবেশ অডিট অধিদপ্তরের অডিটর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের কাছে বিসিএস-যুদ্ধ জয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন তিনি।

ফারাজ হাবীব খান বলেন, অনেকের মতো আমিও ভাবতাম, বিসিএস এক অসম্ভব যাত্রা! যারা ক্যাডার হয় তারা ভিনগ্রহবাসী, হয়তো তারা সারাদিনই পড়াশোনা করে! সেই ভয় থেকেই প্রথমবার বিসিএস দেয়া থেকে পিছিয়ে আসি। বেসরকারি চাকরি খুঁজতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। তখন অনুধাবন করি, বিসিএস ছাড়া আসলে তেমন বিকল্প আমাদের হাতে নেই। 

তিনি জানান, ২০২০ সালের শুরুর দিকে একটি কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার দুই মাসের মধ্যেই করোনা অতিমারিতে সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। পরে বইপত্র নিয়ে গ্রামে চলে গিয়েছিলেন তিনি। লকডাউনের দীর্ঘদিন ঘরে বসে নোট করতেন, কখনো পড়তেন, আবার কখনো হতাশ হতেন তিনি।

“কারণ আমার বন্ধু নেই, চাকরি নেই, অর্থবিত্ত নেই, বাইরে বেরুতে নেই, স্বপ্ন নেই, পৃথিবী আবার স্বাভাবিক হবে তার নিশ্চয়তা নেই! শুধু পাশে ছিল মহান আল্লাহর কৃপা আর মায়ের ভালোবাসা ও সমর্থন। করোনার মাঝেই অনুষ্ঠিত হয় ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা। বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির দ্বারা ২০২১ ও ২০২২ সালে দুইটি সরকারি চাকুরি পাই। অবশেষে ২০২৩ সালে পরম প্রতিপালকের ভালোবাসা ও অনুগ্রহে সেই কাঙ্ক্ষিত ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলাম।”

ফারাজ বলেন, বিসিএসে সফল হতে চাইলে শুধু প্রচলিত গাইডবই আর মুখস্তবিদ্যা কার্যকর নয়। দরকার একাগ্রতা, সৃজনশীলতা আর প্রচন্ড ধৈর্য!

যেভাবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম
বড় বড় বই না পড়ে ছোট বই পড়তাম। মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ভিন্ন ভিন্ন খাতায় নোট করে রাখতাম। নিজে নোট করা ও সিলেবাস বুঝে পড়া জরুরি।

যেভাবে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম
অনেকের মতে গণিত ও বিজ্ঞানের ২০০ নম্বর হচ্ছে লিখিত পরীক্ষার ট্রাম্পকার্ড। আমি গণিত ও বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ সময় না দিয়ে বাকি ৭০০ নম্বরের দিকে বেশি মন দিই। সৃজনশীলতা ও বিশ্লেষণী ক্ষমতার সাহায্যে রচনা, সাহিত্য, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতেও খুব ভালো নম্বর তোলা যায়। আমাদের লেখায় স্বকীয়তা, নিজস্বতা থাকা চাই। তাই প্রচলিত গাইডবই না পড়ে প্রচুর মৌলিক বই, নিবন্ধ, সংবাদপত্র ও ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়েছিলাম। লেখনীতে ভিন্নতা আনতে প্রচুর নোট করতাম। পর্যাপ্ত তথ্য, উদ্ধৃতি, চিত্র ও বিশ্লেষণ থাকা বাঞ্ছনীয়।

যেভাবে মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম
নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়তাম। প্রচলিত গাইডবই পড়ে ভাইভায় ভালো করা সম্ভব নয়। সাহিত্য, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, ইতিহাস ইত্যাদি বিষয়ে বই পড়তাম ও নোট নিতাম। ভাইভায় ভালো করতে শব্দচয়ন, উচ্চারণ, উপস্থাপন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সম্যক ধারনা থাকা আবশ্যক।