‘সন্ধ্যাকালীন কোর্স নেয়াতে পাঠদানের মান আরও বাড়ে’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০১৮, ০৯:৩৩ AM , আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮, ১০:৩৪ PM
রাজধানীর সদরঘাটে অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) যাত্রা দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যতিক্রমী। ২০০৫ সালে সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাশ করার মাধ্যমে জগন্নাথ কলেজ থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে ১৮৫৮ সালে। বর্তমানে প্রায় ২২ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এবং ৭০০ জন শিক্ষক রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্য, সংকট ও সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইরফান হক।
প্রশ্ন: ভিসি হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে জবিতে দায়িত্ব পালন করছেন আপনি; ৬ বছরের মধ্যে কি ধরনের পরিবর্তন করতে পেরেছেন?
মীজানুর রহমান: পরিবর্তনতো অবশ্যই করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুপাত খুবই কম ছিল। প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থীদের বিপরীতে ৩০০ শিক্ষক ছিল। বর্তমানে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৭০০। আমাদের মূল পরিবর্তনটা হয়েছে শিক্ষা এবং একাডেমিক খাতে। শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এখানে সুযোগ পেয়ে থাকে। তাছাড়া রাজধানীতে হওয়ায় অবিভাবকদের কাছে খুব আগ্রহের স্থল হচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে মেধাবীরা এখানে পড়ার সুযোগ পায়। আমরা সবচেয়ে মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ দিচ্ছি। এছাড়া
প্রশ্ন: জগন্নাথ কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা। এ সর্ম্পকে কিছু বলবেন?
মীজানুর রহমান: ২০০৫ সালে সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাশ করার মাধ্যমে জগন্নাথ কলেজ থেকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। তবে কলেজের শিক্ষকরা ২০১১ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করতেন। প্রকৃতপক্ষে এটি বিশ্ববিদ্যালয় হয় কলেজের শিক্ষকরা যাওয়ার পরেই। সেই অর্থে এই বিশ্ববিদ্যালয়েল বয়স মাত্র ৭ বছর। সেজন্য এটি দেশের নবীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বলা যায়। তবে নবীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি অনেকদূর এগিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে, কলেজ শুধু জ্ঞান বিতরণ করে কিন্তু জ্ঞান আহরণ করে না বা সৃষ্টি করে না। অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মূল উদ্দেশ্যই থাকে জ্ঞান আহরণ করা অর্থাৎ গবেষণা করা। গবেষণা করার কাজটি এমফিল ও পিএইচডি’র মাধ্যমে হয়ে থাকে। ২০১২-১৩ সেশন থেকে গত ৬ বছর যাবত এটা শুরু করেছি। ফলে আমাদের অনেক এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থী আছে। এদের কয়েকজনকে ডিগ্রী প্রদান করা হয়েছে। আগামী একাডেমিক কাউন্সিলেও বেশ কয়েকজনকে ডিগ্রী দেয়া হবে।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য কি ধরণের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে?
মীজানুর রহমান: আমাদের প্রতিটি বিভাগে গবেষণার একটি ধারা চালু হয়েছে। শিক্ষকদের গবেষণা কাজে মনোনিবেশের জন্য গবেষণার জন্য যে ফান্ড দেয়া কথা ছিল তা এক সময় খুবই কম ছিল। আমি আসার পর গবেষণার বার্ষিক বাজেট মাত্র ৫ লক্ষ টাকা দেখেছি। তবে গত বছর সেটি ছিল ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা এবং চলতি অর্থ বছরে তা প্রায় ২ কোটি টাকা করা হবে। তাছাড়া ১ বছর মেয়াদী গবেষণা প্রকল্পের আওতায় আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে ১৪০ জন শিক্ষক কাজ করছেন। এর বাইরেও সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, হেকেপ প্রকল্পের মাধ্যমেও অনেকগুলো গবেষণা প্রকল্প চলছে। তবে খুব বড় ধরনের গবেষণা করার জন্য যে ধরনের বিজ্ঞান ল্যাবরেটরী নেই। আমি যে বিষয়টির গুরুত্ব দিচ্ছি, তা হলো গবেষণা ও শিক্ষার মান উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজটের অবস্থাটি কেমন?
মীজানুর রহমান: একটা সময় সেশনজট ছিল। ৪ বছরের স্নাতক শেষ করতে ৬ থেকে ৭ বছর লাগতো। কিন্তু গত ৩ বছর যারা ভর্তি হয়েছে তাদের সেশনজটের সমস্যায় পড়তে হয়নি। তবে পুরাতন কিছু বিভাগে ফলাফলের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়ে গেছে, নতুন বিভাগসমূহে কোনো সেশনজট নেই। আশা করি, ৪ বছরের স্নাতক ৪ বছরেই শেষ করতে পারবে।
প্রশ্ন: এবার থেকে জবি ভর্তি পরীক্ষা লিখিতভাবে নেয়ার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে পরীক্ষা পদ্বতিটা কেমন হবে?
মীজানুর রহমান: আগে ভর্তি পরীক্ষা লিখিত নেয়া হত। মাঝখানে ‘বৃত্ত ভরাট’ পদ্ধতি চালু করি। এ বছর থেকে আমরা আবার লিখিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা চালু করবো। এটা হবে এইচএসসি পরীক্ষার আদলেই। সেক্ষেত্রে এইচএসসি পরীক্ষায় যে ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় সে ধরনের পদ্ধতিতেই হবে। ১০০ মধ্যে ৭২ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে দেড় ঘন্টায়। বর্ণনামূলক প্রশ্ন বা রচনামূলক প্রশ্ন থাকবে।
প্রশ্ন: জবিতে ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীর অনুপাত তুলনামূলক কম কেন?
মীজানুর রহমান: এটার অন্যতম কারণ আবাসন সংকট। তাছাড়াও অবস্থানগত কারণও রয়েছে। আমাদের আবাসন ব্যবস্থা শূন্যের কোটায়। ছেলেরা হয়তো মেসে থেকে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে কিন্তু অধিকাংশ মেয়েদের পক্ষে সেটা সম্ভব হয়ে উঠে না। এক সময় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপাতের চেয়ে আমাদের চিত্রটা খুবই খারাপ ছিল। এটি ছিল শতকরা ১৪ থেকে ১৫ শতাংশের মতো। কিন্তু এখন তা ৩০ শতাংশের কাছাকাছি। এটা হওয়া উচিত ছিল প্রায় ৫০ শতাংশের মতো।
প্রশ্ন: আবাসন সংকট নিরসনে কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে কিনা?
মীজানুর রহমান: আমাদের আবাসন সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য আমাদের একটি বেদখলে থাকা জমি উদ্ধার করে ছাত্রী হল নির্মাণ শুরু করছি। যার অবকাঠামো তৈরি হয়ে গেছে এখন ভেতরের কাজ চলছে। আশা করি, আগামী ৭-৮ মাসের মধ্যে এক হাজারের মতো ছাত্রী ওই হলে থাকতে পারবে। যাদের ঢাকা শহরে থাকার জায়গা নেই, তারা সেখানে থাকার জায়গা পাবেন।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-গবেষকদের জন্য গ্রন্থাকারের কি ধরণের সুবিধা রয়েছে?
মীজানুর রহমান: বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার সুবিধার যতটুকু আছে ততটুকই ব্যবহৃত হয় না। এটা শুধু আমাদের দেশে নয় সারা পৃথিবীতেই গ্রন্থাগারে ব্যবহারকারীদের যাওয়া কমে গেছে। ডিজিটালের যুগে কম্পিউটার-ইন্টারনেট থাকায় এটা হয়েছে। এজন্য আমরা হার্ডকপির বই-পুস্তক কেনার চেয়ে ডিজিটালাইজড করার কথা চিন্তা করছি। বিশ্ব ব্যাংকের বিডিরেন্ট প্রকল্পের অধীনে অধিক দ্রতগতির ইন্টারনেট সংযোগ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। ফলে আমাদের ক্যাম্পাস সম্পূর্ণ এর আওতাধীন থাকবে। তাছাড়া ডিজিটাল লাইব্রেরী করার জন্য আমরা বই কেনার চেয়ে ই-বুক কেনার উপর জোর দিচ্ছি।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রসংসদ নির্বাচন দেয়ার কথা ভাবছে কিনা? ছাত্রসংসদের অনুপস্থিতিতে ক্যাম্পাসের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের অবস্থা কেমন?
মীজানুর রহমান: আপাতত নেই। এখন নির্বাচন দিলে একতরফা নির্বাচন হবে। তবে ছাত্রসংসদের অনুপস্থিতিতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড থেমে নেই। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিলে ছাত্রসংসদের কাজগুলো করে যাচ্ছি।
প্রশ্ন: ২০ অক্টোবর জবির ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এদিন বিশেষ কোন আয়োজন থাকবে কিনা?
মীজানুর রহমান: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রতিবছর ক্যাম্পাসে র্যালি, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য বিষয়ও নির্ধারণ করা হয়। এবছরও এসব আয়োজন থাকবে।
প্রশ্ন: সন্ধ্যাকালীন কোর্স নিয়ে প্রশাসনের ভাবনা কেমন?
মীজানুর রহমান: দুপুর তিনটার পর নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্লাশ শেষ হয়ে যায়। এরপরতো খালি থাকে। এজন্য আমি মনে করি, সন্ধ্যাকালীন কোর্সের জন্য ক্লাস ব্যবহার করা যেতে পারে। যারা এ কোর্সে পড়তে আসে তারাতো আমাদেরই ছেলে-মেয়ে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে পড়াশুনার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে, সেখানে এখানে পড়াতো অনেক ভালো। আরেকটি বিষয় হলো, যারা এসব কোর্সে পড়ে তাদের থেকে যে টিউশন ফি নেয়া হয়, এটা দিয়ে শিক্ষকরা অতিরিক্ত কিছু সম্মানী পেয়ে থাকে; বাকি টাকা ক্লাসরুম, ল্যাবরেটরী উন্নয়নসহ নানা উন্নয়ন করা হয়। যা নিয়মিত শিক্ষার্থীরাও ব্যবহার করেন।
প্রশ্ন: সন্ধ্যাকালীন কোর্স নেয়াতে শিক্ষকরা নিয়মিত শিক্ষার্থীদের প্রতি মনোযোগ কমিয়ে দেন। এ ধরণের অভিযোগে বিষয়ে আপনা মন্তব্য?
মীজানুর রহমান: আমি এটা সঙ্গে একমত নয়। আমি মনে করি, শিক্ষকরা সন্ধ্যাকালীন কোর্স নেয়াতে এতে পাঠদানে মান আরো বাড়ে। কারণ এসব কোর্স পড়াতে গেলে বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়, যা নিয়মিত শিক্ষার্থীদের এককভাবে পড়াতে গেলে নিত না। ফলে এতে পাঠদানের মান বাড়ার সম্ভাবনায় বেশি। আমাদের ৬ থেকে ৭টি বিভাগে সন্ধ্যাকালীন কোর্স চালু রয়েছে। অথচ এসব বিভাগে কোনো সেশনজট নেই।
প্রশ্ন: এরকম পরিবেশে কি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে?
মীজানুর রহমান: ২৪-২৫ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মাত্র ৭ একর জায়গার এ ক্যাম্পাস। তাছাড়া আশপাশে বাজার-মার্কেট। এ ধরণের জায়গায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে না। এজন্য বছর দুয়েক আগে আমদের নিজস্ব উদ্যোগে কেরানীগঞ্জে প্রায় ৭-৮ একর জায়গা কিনেছিলাম। সরকারের কাছে প্রায় পৌনে ৩’শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প উপস্থাপন করেছিলাম। এখানে হল এবং একাডেমিক ভবন হওয়ার কথা ছিল। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে অনুমোদনের জন্য যখন একনেকে গেল, তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন এক জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরেক জায়গায় হল-একাডেমিক ভবন হতে পারে না। তখন একনেকের সিদ্ধান্ত হলো এই বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের জন্য একে স্থানান্তর করতে হবে।
প্রশ্ন: ভবিৎষতে কেরানীগঞ্জে ক্যাস্পাস স্থানান্তর নাকি সম্প্রসারণ করা হবে?
মীজানুর রহমান: ভবিৎষতে ক্যাম্পাস কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হবে। সম্প্রসারণ করার কোনো সুযোগ নেই। কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নে প্রায় ২০০ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকার আমাদেরকে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ১৮ শত কোটি টাকার একটি প্রকল্প সরকারের কাছে উপস্থাপন করছি। ওটা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় জমির উন্নয়ন করা হবে। আর এটির প্রথম ধাপ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন তা অনুমোদন করেছে। পরে এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাবে এবং সেখানে থেকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং সর্বশেষ একনেকে উঠবে।
প্রশ্ন: থার্মিক্স গ্রুপের একটি হল দেয়ার কথা ছিল? এখন কি অবস্থা?
মীজানুর রহমান: সরকারের কাছে যেহেতু একটি প্রকল্প উপস্থাপন করেছি তাই এটা আর হবে না। কারণ এটা করার কথা ছিল আমরা যেখানে জায়গা কিনেছিলাম সেখানে। কিন্তু সেখানে আর কিছু হচ্ছে না। ফলে এ প্রকল্পের মধ্যে প্রাইভেট কিছু ঢুকার সুযোগ নেই। তবে তারা চাইলে অন্য কাজ করতে পারে। আমাদের পরিবহনে গাড়ি দিকে পারে।
প্রশ্ন: বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভর্তির ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে?
মীজানুর রহমান: প্রথমদিকে বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভর্তির ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখিনি। তবে বর্তমানে আগ্রহ বাড়ছে। গতবারও কয়েকজন বিদেশী শিক্ষার্থী ইংরেজী ও গণিত বিভাগে ভর্তি হয়েছে। আশা করি, আগামীতে এ সংখ্যাটা বাড়বে।
প্রশ্ন: জবিকে ব্রান্ডিং এর বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?
মীজানুর রহমান: ৫-৬ আগে বেশিরভাই এটিকে জগন্নাথ কলেজ হিসেবে চিনতো। বর্তমানে সেটি নেই। আস্তে আস্তে এই পরিবর্তনটা হয়েছে। আমরা সবসময়ই চেষ্টা করছি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে মিডিয়াসহ সব জায়গায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে। এটি সম্মানজনক স্থান করে নিয়েছে বিভিন্ন কর্মকান্ডের মধ্যদিয়ে। ক্যম্পাসে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মধ্যদিয়ে একটি সাংস্কৃতিক আবহাওয়া তৈরি করেছি যা আগে ছিল না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আমাদের ছাত্ররা যখন বের হয়ে ভাল চাকুরী করেন তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রান্ডিং হয়।
প্রশ্ন: শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন?
মীজানুর রহমান: অবশ্যই ভালো একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের বিষেশজ্ঞরা থাকেন। তারা যাকে সবচেয়ে ভালো মনে করেন তাদের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। এখানে নিয়োগের বিষয়টির ক্ষেত্রে স্বচ্চতার সঙ্গে করা হয়।
প্রশ্ন: নবীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এখানে সিনিয়র শিক্ষকদের সংখ্যা কেমন?
মীজানুর রহমান: আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স যেহেতু ৭ বছরের একটু বেশি তাই এখানে সিনিয়র শিক্ষকও কম আছেন। তবে দেশের অনেক পুরানো বিশ্ববিদ্যালয়েও এ ধরণের সিনিয়র শিক্ষক নেই বললে চলে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি বাদে কোনো অধ্যাপক নেই। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি বাদে আর একজন আছেন সহযোগী অধ্যাপক। বরং নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও পিএইচডি ধারী শিক্ষক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। অনেক পুরোনো বিশ্বদ্যিালয়েও এতো পিএইচডিধারী নেই।
প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনা এবং সংকট নিয়ে আপনার ভাবনা কি?
মীজানুর রহমান: সংকটতো থাকবেই। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজধানীতে হওয়ায় সবার আগ্রহের জায়গায় পরিণত হয়েছে। মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাজধানতেই থাকতে চায়। সে কারণে মনে করি, এই বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে। তাছাড়া, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবিষ্যত নির্ভর করে শিক্ষকদের উপরে। আমরাতো মেধাবীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছি। এটাই আমাদের মূল সম্ভাবনা।
প্রশ্ন: আপনাকে ধন্যবাদ।
মীজানুর রহমান: আপনাকেও ধন্যবাদ।