২৭ মে ২০২৩, ১২:৫৮

ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বুয়েটের মতো মেধাবী শিক্ষার্থী নেই

অধ্যাপক লুৎফর রহমান  © টিডিসি ফটো

একেবারে গ্রাম থেকে উঠে এসে প্রথমে দেশের দেশের সেরা বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন অধ্যাপক লুৎফর রহমান। বুয়েট থেকেপড়াশোনা করে দেশেই কর্মজীবন শুরু হয়েছিল তার। তবে বেশিদিন স্থায়ী হননি তিনি। পাড়ি জমান সুদূর আমেরিকায়। হয়ে যান দেশটির ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক। সম্প্রতি তিনি তার শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের নানা দিক নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুখোমুখি হয়েছে। তার কথাগুলো শুনেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের তাওফিকুল ইসলাম হিমেল

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শুরুতে আপনার শৈশব নিয়ে বলুন।
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: আমার জন্ম এবং বেড়ে উঠা বগুড়া জেলা থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে সোনার পাড়া নামক গ্রামে। গ্রামের আর দশটি বাচ্চা যেভাবে মানুষ হয় আমার বেড়ে উঠা তেমনই। বলতে গেলে গ্রামে চষেই বেড়াতাম, সব ধরনের গ্রামীণ খেলায় খেলতাম।

গ্রামের ছেলেদের সাথে গরু চড়ানো, গাছে চড়ে জাম খাওয়া, ডাল ভেঙে পড়া, গাছের উপরে উঠে পুকুরে লাফ দেয়া, হাঁটু কাঁদা মাঠে ফুটবল খেলা, বৃষ্টির মধ্যে পিছলা খেলা, পুকুরে নেমে ঘন্টার পর ঘণ্টা সাঁতার কাটা, সাঁতারের পড়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে চোখের লাল কমানো—এরকম সবই করার অভিজ্ঞতা আছে। কোনো বাধা ছিল না এসবে। প্রাইমারি এবং হাইস্কুল গ্রামের স্কুল ছিল।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার শিক্ষাজীবনের গল্প শুনতে চাই। (প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়)
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: আমি জিয়ানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পড়াশুনা করি। পঞ্চম শ্রেণীতে এই স্কুল থেকে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পাই। তারপর মর্তুজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৯ সালের অষ্টম শ্রেণীতে সাধারণ বৃত্তি পাই এবং ২০০২ সালে এসএসসি পাস করি। বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ থেকে ২০০৪ সালে এইচএসসি পাশের পরে ভর্তিযুদ্ধে উত্তীর্ণ হয়ে বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হই।

আমি আমাদের ইউনিয়ন থেকে প্রথম বুয়েটে ভর্তির সযোগ পাই। ২০০৯ সালে বুয়েট থেকে পাস করে বাংলাদেশে একটা বেসরকারি কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করি। ২০১২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ আলাবামা অ্যাট বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে বৃত্তিসহ মাস্টার্স শুরু করি। ২০১৪ সালে মাস্টার্স পাস করে আমেরিকার দুইটা কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে চাকরি করি আড়াই বছরের মতো। ২০১৬ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফর্নিয়া রিভারসাইডে ফেলোশিপসহ পিএইচডি শুরু করে ২০২০ সালে শেষ করি। ২০২১ সালে ক্যালিফর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসাবে যোগদান করি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি বুয়েটেও পড়াশোনা করেছেন। চাইলে তো দেশেও ক্যারিয়ার গড়তে পারতেন। বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনার শুরু কীভাবে?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: দেশেই ক্যরিয়ার করা যেতো; কিন্তু করা হয়ে উঠলো না। মূলত বুয়েটের পরিবেশের কারণেই তৃতীয় বর্ষে থাকতে বাইরে পড়াশুনার করার স্বপ্ন দানা বাঁধে। পরিচিত সিনিয়র ভাইরা ফুল ফান্ডিং নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছেন। এসব দেখে নিজেও বাইরে পড়াশুনা করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করি।

তখন ও সিজিপিএ ৩-এর নিচে ছিল। চেষ্টা ছিল যে করেই হোক, ৩-এর উপরে নিয়ে যেতে হবে। একদম শেষ টার্মে গিয়ে ৩-এর উপর উঠেছে। ৩-এর নিচে থাকলে অনেক ভার্সিটিতে আবেদন করা যায় না। অনেক চেষ্টার পরে মাস্টার্স করার জন্য ফুল ফান্ড পেলাম। মাস্টার্স শেষ করার আগেই একটা জব পেয়ে গেলাম। তারপর ২.৫ বছর জব করার পরে পিএইচডি শুরু করলাম। পিএইচডি ডিফেন্স দেবার আগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের এই জব পেয়ে গেলাম।

বলতে গেলে বুয়েট ১৮ কোটির একটি জনসংখ্যার দেশ থেকে সেরা ১০০০ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায়। আমেরিকায় হাজারো ইউনিভার্সিটি আছে। ক্যালিফর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বুয়েটের মতো এতো মেধাবী শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। বুয়েটের সাথে আমার ইউনিভার্সিটির মূল্যায়ন পদ্ধতির অনেক পার্থক্য আছে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করছেন। এখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান প্রক্রিয়া কেমন?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: বাংলাদেশের সাথে পাঠদান প্রক্রিয়ার খুব বেশি পার্থক্য আপাতত মনে পড়ছে না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বুয়েট বা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির তুলনা কীভাবে করবেন?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: বলতে গেলে বুয়েট ১৮ কোটির একটি জনসংখ্যার দেশ থেকে সেরা ১০০০ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায়। আমেরিকায় হাজারো ইউনিভার্সিটি আছে। ক্যালিফর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বুয়েটের মতো এতো মেধাবী শিক্ষার্থী পাওয়া যায় না। বুয়েটের সাথে আমার ইউনিভার্সিটির মূল্যায়ন পদ্ধতির অনেক পার্থক্য আছে। আমার ইউনিভার্সিটিতে সারা সেমিস্টার জুড়েই গুরুত্বসহকারে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনা করতে হয়। ক্লাস এক্টিটিভিটি, হোমওয়ার্ক, মিডটার্ম, ফাইনাল প্রজেক্ট, ফাইনাল এক্সাম এসবের মধ্যে দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়।  ফাইনাল পরীক্ষার ২০-৩০ ভাগ নম্বর থাকে।

এইখানে ক্লাস শেষ হবার পরের সপ্তাহেই ফাইনাল পরীক্ষা হয়, তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ফলাফল দেয়া হয়। আর বুয়েট এই জায়গায় অনেক পুরাতন পদ্ধতি অনুসরণ করে। বুয়েটে ৭০ ভাগ নম্বর থাকে ফাইনাল পরীক্ষায় আর ৩০ ভাগ নম্বর থাকে সারা সেমিস্টার জুড়ে। বুয়েটে অনেক লম্বা সময় ধরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়। প্রায় ৪ সপ্তাহ। তারপর আর ৩-৪ সপ্তাহ জুড়ে পরীক্ষা হয়। পরীক্ষার ফলাফল দেয়া হয় এরকম আরো ৫-৭ সপ্তাহ পরে। এই জায়গায় বুয়েটের আপগ্রেড হবার সুযোগ আছে।

আরও পড়ুন: গ্রিনকার্ড বাতিল করে দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করেছি

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেমন সংস্কার প্রয়োজন?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন আগে তাদের মানসিক সংস্কার করতে হবে আগে। উনাদের প্রকৃত সদিচ্ছা থাকতে হবে। খুব বেশি কিছু করার দরকার নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি দূর করতে হবে; আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে; ভালোভাবে জীবিকা নিৰ্বাহ করা যায় এরকম মানের বেতন দিতে হবে; শিক্ষা এবং গবেষণা করার পর্যাপ্ত ফান্ড দিতে হবে। বাকি জিনিসগুলো সময়ের সাথে ঠিক হয়ে যাবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক কেমন?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: সাধারণত আমেরিকায় সবাই সিস্টেম অনুসরণ করেন। যার কারণে সবার সাথে প্রফেশনাল সম্পর্ক বজায় রাখতে হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক খারাপ হবার সুযোগ নেই বললেই চলে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অনেক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য যেতে আগ্রহী। তারা কীভাবে সহজে দেশটিতে পড়াশোনার জন্য যেতে পারেন?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: যুক্তরাষ্ট্রে সারা বিশ্বের ছাত্রছাত্রী আবেদন করে। প্রতিযোগিতাও অনেক। তাই যত পারা যায় সিজিপিএ ভালো করতে হবে, ভালো গবেষণার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে, মোটামুটি মানের ১-২ গবেষণাপত্র থাকলে প্রফেসরের নজরে পড়া যায়। এছাড়া শিক্ষা কেন্দ্রিক এক্সট্রাকাররিকুলার একটিভিটিস ও কাজে লাগে অনেক বিষয়ে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিউশন ফি কেমন, পড়াশোনার পাশাপাশি কোনো কাজের সুযেগা রয়েছে কি?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: যুক্তরাষ্ট্রে টিউশন ফি অনেক বেশি। টিউশন ফি মোট খরচের একটি অংশ মাত্র। সাথে বাসস্থান, খাবার, ইন্সুরেন্স এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ আছে। সবমিলিয়ে এক বছরে প্রতি বছর ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ডলারের মতো খরচ হতে পারে। যারা ফুল ফান্ডিং পায়, তাদের এই খরচ গুলো দিতে হয় না।

আন্তর্জাতিক স্টুডেন্ট হিসাবে সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায় ক্যাম্পাসে। সেটা প্রফেসরের সাথে হতে পারে বা কোনো ক্যাফেটেরিয়ায়। ক্যাম্পাসের বাইরে লিগালি কাজ করার সুযোগ খুবই সীমিত। সামারে ইন্টার্নশীপ করা যায় ফুল টাইম। আর এমনিতে পড়াশুনার এতো চাপ থেকে যে ওইভাবে কাজ করে  ভালো ফলাফল করা মুশকিল। আমেরিকায় সিজিপিএ খুব খারাপ হলে ইউনিভার্সিটি প্রোগ্রাম থেকে আপনাকে বের করে দিবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার সম্পর্কে একটা কথা ছড়িয়ে পড়েছে। বুয়েটে আপনার সিজিপিএ ছিল ৩.০২। আপনার শ্রেণিতে ১২৫ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আপনার অবস্থান ছিলো ৮৮। এসব তথ্যগুলো কি সঠিক?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: এই তথ্যগুলো একদম সঠিক। অনেক ছেলেমেয়ে একবার ফলাফল খারাপ করলে সেখান থেকে আরো খারাপের দিকে যায়। এই জন্য মাঝে মাঝে আমি নিজের জীবন অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করি আমার ফেসবুকে। এতে হয়তো কিছু স্টুডেন্ট হাল ছেড়ে না দিয়ে ফিরে আসার জন্য চেষ্টা করবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: একটি শ্রেণিতে এতো পেছনে অবস্থান করেও কীভাবে আপনি যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছেন? কেমন পরিশ্রম করতে হয়েছে আপনাকে?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: আমেরিকায় শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মূল ফোকাস থাকে আপনি গবেষণায় কেমন ভালো। সিজিপিএ খুবই গৌণ বিষয়, আর বাংলাদেশে সিজিপিএ মুখ্য বিষয় হিসাবে ধরা হয়। আমেরিকায় শিক্ষক নিয়োগে ১-২ দিন ধরে ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ হয়। এখানে অনেক শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীরা ক্যান্ডিডেটকে মূল্যায়ন করে। তারপর উনারা সবকিছুর উপর ভিত্তি করে টপ ক্যান্ডিডেটকে অফার করেন। পরিশ্রমের কথা বললে প্রচুর পরিশ্রমের কথায় বলতে হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শিক্ষকতার পাশাপাশি আপনি সামাজিক কাজেও অংশ নিচ্ছেন। আপনার একাধিক সংগঠনের কথা শুনেছি। সেগুলোর কার্যক্রম কেমন?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: সময়ের কারণে ইচ্ছা এবং সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমি মূলত এডুকেশন ফাউন্ডেশন নামক সংগঠনটির সাথেই কাজ করি। যদিও এডুকেশন ফাউন্ডেশনকে ওইভাবে প্রতিষ্ঠান হিসাবে দাঁড় করতে পারি নাই। ২০০৪ সালে বুয়েট ভর্তির পর থেকেই শিক্ষামূলক কাজের সাথে জড়িত। আমাদের এই সামাজিক কাজগুলোয় এডুকেশন ফাউন্ডেশনে নামে করা হয়। আমাদের মূল প্রোগ্রাম এডুকেশন ফাউন্ডেশন মেধা যাচাই পরীক্ষা। বর্তমানে বগুড়া এবং জয়পুরহাট জেলার চারটি থানার ৮০টির মতো স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আমাদের মেধা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

২০২২ সালে আমরা ট্যাবলেট দিয়ে এই প্রতিযোগিতা নেয়া শুরু করেছি। এতে করে আমরা বেশি সংখ্যক ছাত্রীছাত্রীর পরীক্ষা নিতে পারতেছি আর পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের জন্য অসংখ্য ভলান্টিয়ার দরকার হয় না। ২০২২ সালের পরীক্ষায় ১৮০২ জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল। ২২১ জনকে প্রায় ১ লাখ টাকার বেশি বই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এছাড়া, ক্রেস্ট এবং সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে।

র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন আগে তাদের মানসিক সংস্কার করতে হবে আগে। উনাদের প্রকৃত সদিচ্ছা থাকতে হবে। খুব বেশি কিছু করার দরকার নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি দূর করতে হবে; আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে....। বাকি জিনিসগুলো সময়ের সাথে ঠিক হয়ে যাবে।

আমাদের বর্তমানে ৭ জন দীর্ঘমেয়াদি বৃত্তিপ্রাপ্ত স্টুডেন্ট আছে যাদের মাসিক ৩৫০০-৪০০০ টাকা করে বৃত্তি দেয়া হয়। এইটা মূলত একেকজন ডোনার একেকজনকে বৃত্তি দেন। আমাদের আরেকটি সময় সাপেক্ষ কাজ ১ লাখ তালগাছ লাগানোর প্রজেক্ট। আমরা রাস্তার ধার, খালের পাড় এসব জায়গায় তালবীজ/তালচারা রোপন করি। ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৪ হাজারের বেশি তালবীজ বপন/তালচারা রোপন করেছি। এছাড়া দুটি ভ্রাম্যমান পত্রিকা স্ট্যান্ড এবং লাইব্রেরি আছে, একটি স্কুলে ক্লাসরুম লাইব্রেরি আছে। আর এমনিতে ফাউন্ডেশনের বাইরে ব্যক্তিগত পর্যায়ে টুকটাক কিছু সামাজিক কাজ করা হয়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এ পর্যন্ত আসতে আপনাকে কি কি বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: সিস্টেমের বাঁধায় সব চেয়ে বড় বাধা ছিল। গ্রামে পড়াশুনা করেছি এসএসসি পর্যন্ত। যেখানে কোয়ালিটি শিক্ষক পাওয়া, অনেক বেশি শিক্ষার রিসোর্সে পাওয়া যায় না। অনেক কঠিন টপিকগুলো অনেক সময় নিজে নিজেই পড়তে হয়েছে। অন্য বাঁধা গুলো আপাতত মনে আসছে না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: মানুষ হিসাবে মূল দায়িত্ব এবং কর্তব্যগুলো যেন আরো ভালোভাবে পালন করতে পারি। এছাড়া একজন ভালো গবেষক হওয়া এবং একজন ভালো শিক্ষক হওয়ার চেষ্টা থাকবে । নিজের অবস্থান থেকে আশেপাশের মানুষের জন্য আরেকটু বেশি কিছু করার চেষ্টা করবো।

দেশ নিয়ে পৃথক কোনো ভাবনা রয়েছে কি, দেশের জন্য কি করতে চান?
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: নিজের অবস্থান থেকে যতটুকু করছি সেগুলোয় আরেকটু ভালো করে করার ইচ্ছা আছে। বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার স্বপ্ন দেখি। যেখানে কোয়ালিটি শিক্ষার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা মানবিকতা শিখবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময়ের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অধ্যাপক লুৎফর রহমান: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।