ঢাবির অধীনে সাত কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়ন হয়েছে
ইতিহাস ঐতিহ্যের বিদ্যাপিঠ ঢাকা কলেজের ৭৬তম অধ্যক্ষ হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তা বাংলার অধ্যাপক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ঢাকা কলেজের সার্বিক উন্নয়নে ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা সহ সার্বিক মানোন্নয়নে তাঁর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তারই চুম্বক অংশ তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিবেদক— রাকিব হাসান।
অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ঢাকা কলেজের উন্নয়ন সকলেরই কাম্য। শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি। ঢাকা কলেজ একটি পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আমাদের একাডেমিক ভবন ও ছাত্রাবাস গুলো পুরনো ও জরাজীর্ণ। ইতোমধ্যেই শিক্ষা সচিব, মাউশি মহাপরিচালক ঢাকা কলেজ পরিদর্শন করেছেন। অবকাঠামোগত জরাজীর্ণতা দেখে তাঁরাও ব্যথিত হয়েছেন। শিক্ষা সচিব শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে প্ল্যান তৈরীর জন্য চিঠি দিয়েছেন। আমরাও তাঁদের সাথে যোগাযোগ রাখছি।
একইসাথে শিক্ষার্থীদেরকে আগামী দিনের আধুনিক পৃথিবীর কার্যক্রমের জন্য তৈরি হওয়া উচিত উল্লেখ করে অধ্যক্ষ বলেন, শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যায় নয় বরং একই সাথে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি তরুণ প্রজন্ম শুধুমাত্র বিসিএস কেন্দ্রিক অথবা সরকারি চাকরি কেন্দ্রিক একটি প্রতিযোগিতায় নিজেদের ব্যস্ত রেখেছে। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে এর বাইরেও অনেক পেশা রয়েছে। যেগুলোতে ক্যারিয়ার করতে পারলে পেছন ফিরে তাকানোর প্রয়োজন হবে না। এসব বিষয় সম্পর্কে আমাদের অনেক শিক্ষার্থীরাই অবগত নয়। সেজন্য শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সচেতন করতে এবং এক কেন্দ্রীক চিন্তা ভাবনার বাইরে বিষয়গুলোতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সেজন্য ঢাকা কলেজে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে একটি ক্যারিয়ার ক্লাব ও ফেস্ট করার ইচ্ছা আমার রয়েছে। শিক্ষার্থীরা অনেকেই রয়েছেন যারা সঠিকভাবে নিজের পেশা নির্ধারণে দিকনির্দেশনা পান না। তাদের জন্য এই কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা হবে।
আরও পড়ুন: ৪৫তম বিসিএসের সিলেবাস প্রকাশ
তাছাড়া আগামীর পৃথিবীতে তারাই নেতৃত্বে দিবে যারা তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহে নিজেদেরকে ভাসিয়ে না দিয়ে এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবে। আমার দেশের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। সেজন্য শিক্ষার্থীদের গুণগত মানসম্পন্নভাবে তৈরি করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কেননা আগামী দিনের পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিতে হলে শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যায় নয় একই সাথে নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন হতে হবে।
অধ্যক্ষ বলেন, আগামী কয়েকবছরের মধ্যে প্রায় অধিকাংশ চাকরিই রোবটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেশিন লার্নিং এর অধীনে চলে যাবে। তাই কর্মমুখী শিক্ষায় জোড় দেওয়ার বিষয়টিও সামনে চলে এসেছে।
সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে কি ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের পড়াশোনা সহ শিক্ষার সার্বিক মান উন্নয়ন হয়েছে। একটি পুরনো সিস্টেম থেকে বের হয়ে নতুন কার্যক্রম শুরু করার ক্ষেত্রে প্রথমে কিছুটা জটিলতা থাকেই। এসব জটিলতা নিরসনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজ প্রশাসনের আন্তরিকতার কমতি নেই। যখন যারা এখানে দায়িত্ব পালন করেছেন শিক্ষার্থীদের কল্যাণে তাৎক্ষণিকভাবে সব সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করেছেন। আমাদের চেষ্টার কোনো ঘাটতি নেই। এখন আশা করি সাত কলেজের সার্বিক কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আসবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নের জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধীনে দিয়েছেন। কেননা শিক্ষার সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে মনিটরিং। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনেক প্রতিষ্ঠান থাকার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথ মনিটরিং সম্ভব ছিলোনা। কিন্তু কিন্তু এখন এটি সম্ভব হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে সাত কলেজের গতিশীলতা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে বলেও আমি মনে করি।