রুটিন শুধু কাগজে, সকালের ক্লাস বিকেলে কখনো সন্ধ্যাতে
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য রুটিন মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) নিয়মমাফিক সময়সূচি মানা হচ্ছে না। ক্লাস-পরীক্ষা গ্রহণের সময়সূচি কাগজে-কলমে দেয়া থাকলেও সে অনুযায়ী কিছুই হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
চুয়েটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ, ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাস-ল্যাব নিয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন।
শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, কাগজে কলমে নির্ধারিত রুটিন দেয়া হলেও সে অনুযায়ী খুব কম ক্লাস-ল্যাব অনুষ্ঠিত হয়। একই বিভাগের দুই-তিনটি সেকশন। করোনার আগের মতো আলাদা আলাদা ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মত বিবেচনায় অনলাইন মাধ্যমে একটি ক্লাসে সকল সেকশনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস নেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীদের একসাথে ক্লাস নিতে অনেক সময় নেটওয়ার্কের সমস্যার পাশাপাশি ক্লাসের বিষয়বস্তু বুঝতে অসুবিধা হয়। এমন অনেক বিষয় মেনে নিয়ে ক্লাস পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কিছু সংখ্যক শিক্ষক রুটিন অনুযায়ী সময় দিয়ে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন। শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে হয় ২০ মিনিট থেকে ত্রিশ মিনিট কখনো কখনো ১ ঘন্টাও। আবার কোনো দিন ক্লাস থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষকেরা উপস্থিত হন না। এতে ক্ষুদ্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নির্দিষ্ট সময় ক্লাস না হওয়ায় তাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলেও তারা জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০১৭-১৮ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, ২ মাস সময় নিয়ে রুটিন বানানো হলেও সকালের ল্যাব দুপুরে, আজকের ল্যাব কালকে নেয়া হবে এই আশা দিয়ে চলছে অনলাইন ল্যাব কার্যক্রম। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিজীবন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অনলাইনে ক্লাস শুরুর পর থেকে এমন সমস্যা ফেস করছি। নেটওয়ার্ক সমস্যাসহ অন্যান্যগুলো বাদ দিলাম, কিন্তু এই যে নির্ধারিত সময়ের ক্লাস হুট করে অন্য সময়ে নেয়ার বিষয়টি খুব কষ্ট দেয়। অনেক স্যার সচেতন, আবার কিছু শিক্ষক রুটিন পরিবর্তন করেও তার দেয়া সময়ে উপস্থিত হতে পারেন না। বিষয়টি আমাদের জন্য দুঃখজনক।
এদিকে বিভিন্ন ব্যাচের আলাদা আলাদা বিভাগের ক্লাস প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বিষয়গুলো কোর্স কোঅরডিনেটরকে জানানো সত্ত্বেও আশানুরূপ সমাধান পাননি।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানদের কাছে সমস্যা সমাধান চেয়ে আবেদনের আহ্বান জানান।