৪৬ বছর আগের দাওয়াতপত্রে পুনঃপ্রতিষ্ঠা হল কলেজ
৪৬ বছর আগের একটি দাওয়াতপত্রের মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হল একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া কলেজ। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকা ধামরাইয়ের সূয়াপুরে। সেখানে একটি কলেজ ছিল তা বর্তমানে অনেকেরই অজানা।
জানা যায়, ১৯৭৪ সনের ৯ জুন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা আয়োজন করেছিল মিলাদ মাহফিলের। ওই সময় মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণের জন্য দাওয়াত পত্র দিয়েছিলো নান্নার ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠাকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল হাই ফেরাজীকে। গণ্যমান্য হিসেবে অনেকে সেই মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহন করেছিলেন। এরপর বিভিন্ন কারণে কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়। তবে বন্ধ হওয়ার কোন কারন কেউ বলতে পারনেনি।
সেই মিলাদ মাহফিলের দাওয়াতপত্রটা নিজ বাড়িতে ৪৬ বছর পর আকস্মিকভাবে পেয়ে যান মরহুম আবদুল হাই ফেরাজীর ছেলে ধামরাই আফাজ উদ্দিন স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন টিপু। গত বছরের অক্টোরব মাসে চিঠি পাওয়ার পর থেকে শুরু হয় তাঁর কর্মযজ্ঞ। তিনি ওই মাসেই দাওয়াতপত্রটি তার ফেইসবুকে পোস্ট করেন। এতে এলাকার উচ্চ শিক্ষিত, হিতৈষী ব্যক্তি ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত কৃতি সন্তানদের মনে দারুনভাবে নাড়া দেয়। তারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই কলেজটি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য অভিন্ন অভিপ্রায়ে ইতিবাচক মনোভাবে প্রাণপণ চেষ্টা করেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব ড.শাহাদৎ হোসেন মাহমুদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড.মো. সাইদুর রহমান সেলিম, জনতা ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম মোহাম্মদ মইনুদ্দিন মিয়া, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (পাবনা ক্যাডেট কলেজ) মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন , অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন (আফাজ উদ্দিন স্কুল ও কলেজ), মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (মনোহরদী, নরসিংদী) মো. শহিদুর রহমান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সোহরাবসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা পর্যায়ক্রমে কয়েকটি সভা করেন কলেজটি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য।
তারা তড়িৎ গতিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তৈরি ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ রক্ষা করেন। সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতায় ২৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের চূড়ান্ত অনুমোদন সাপেক্ষে ২০২১-২০২২ সেশনে সূয়াপুর নান্নার স্কুল ও কলেজ একাদশ শ্রেণিতে ১৫টি বিষয়ে পাঠদানের নিমিত্তে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন পায়। আগামীকাল বিকেলে সেই কলেজটি উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদ।
কলেজটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি এলাকাবাসী পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সূয়াপুর নান্নার স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিংবডির সভাপতি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান সোহরাব বলেন, ‘যেখানে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হলো এর আশে পাশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার ও উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে কোনো কলেজ নেই। কলেজ হওয়াতে এখন এলাকায় শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে বলে আমার বিশ্বাস’।