ঢাবি অধ্যাপকদের গবেষণায় বিশ্ব পেল পাট থেকে নতুন এক এন্টিবায়োটিক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের গবেষণায় বিশ্ব পেয়েছে নতুন একটি এন্টিবায়োটিক। ব্যাকটেরিয়া ও পাটের বৈজ্ঞানিক নামের সাথে মিল রেখে নতুন এই এন্টিবায়োটিকের নাম দেয়া হয়েছে হোমিকরসিন। গত ২৭ মে বিজ্ঞান গবেষণার জন্য বিশ্বখ্যাত ন্যাচার পাবলিসিং গ্রুপের‘সাইন্টিফিক রিপোর্ট’ জার্নালে ঢাবির অধ্যাপকদের সম্মিলিত চেষ্টায় করা নতুন এন্টিবায়োটিকের গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে। যা এন্টিবায়োটিকের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। যেখানে লেখা থাকবে বাংলাদেশের নাম। শুধু তাই নয়। হোমিকরসিনের নামের এই এন্টিবায়োটিকের মোট পাঁচটি ধরন পেয়েছেন গবেষকরা।
পাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ঢাবির প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপক ডঃ হাসিনা খান। সেই পাটের জীবন রহস্য বের করতে গিয়ে তিনি এর বিভিন্ন অংশে নানা রকম অণুজীবের সন্ধান পান। সেই অণুজীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য জানার আগ্রহ থেকে একই বিভাগের অণুজীব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রিয়াজুল ইসলামকে সাথে নিয়ে শুরু হয় নতুন গবষেণা।
রিয়াজুল ইসলাম বলেন,আমরা দেখতে পাই পাটের তন্তুর খাঁজে খাঁজে ৫০টিরও বেশি অণুজীবরা ব্যাকটেরিয়ায় বাস করে। এসব ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে স্টেফাইলো কক্কাস হোমিনিস নামের একটি ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। যা তার শরীর থেকে এমন কিছু তৈরি করে যাতে আবার অন্য ব্যাকটেরিয়ারা মারা যায়।
তাহলে কি আছে সেই ব্যাকটেরিয়ায়? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার কাজ শুরু করেন জিন প্রকৌশল ও জৈব প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আফতাব উদ্দিন।
আর তাতেই বেরিয়ে আসে নতুন এই এন্টিবায়োটিকের খোঁজ। যা বাঁচিয়ে দিতে পারে এন্টিবায়োটিক রেজিটেন্স হওয়া অনেক রোগীর প্রাণ।
গত তিন বছর ধরে চলা এই গবেষণায় তাদের পাশে ছিলও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ। গবেষক দলে বিসিএসআই-এর প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যবহৃত বেশিরভাগ অ্যান্টবায়োটিকই জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়েছে। হাসপাতালেও রোগীরা সুপার বাগ নামে পরিচিত এমন কিছু ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত হচ্ছেন যা প্রচলিত কোন অ্যান্টিবায়োটিকেই নিরাময় হচ্ছে না। সেখানেও সফল হয়েছে এই নতুন এন্টিবায়োটিক।