কুয়েট শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনে স্বয়ংক্রিয় ওয়াশিং মেশিন চালু
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একদল শিক্ষার্থী উদ্ভাবন করেছেন নিজস্ব কন্ট্রোল সিস্টেমে পরিচালিত একটি অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিন, যা সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্লট বুকিং, পেমেন্ট ও ব্যবহারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। শহীদ স্মৃতি হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম মামুন জামালের অনুমতিক্রমে মেশিনটি পরীক্ষামূলকভাবে হলে স্থাপন করা হয়।
এ উদ্ভাবনী প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছেন মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাব্বি মোল্লা এবং ইলেক্ট্রনিকস এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রাকিবুজ্জামান রবিন। তাদের সঙ্গে টিমে আরও ছিলেন ইলেক্ট্রনিকস এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তাহসিন ত্বহা আরহান এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কাউসার আহমেদ। পুরো প্রকল্পের ফান্ডিং, সিস্টেম ডিজাইন, সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইনিং ও পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টিগ্রেশন সম্পূর্ণভাবে তাদের নিজস্ব উদ্যোগে সম্পন্ন হয়েছে।
আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এ উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ ও সময়সাশ্রয়ী করে তুলছে। গত ৯ দিনে ৯০ জন শিক্ষার্থী মেশিনটি ব্যবহার করেছেন এবং প্রকল্পটি শতভাগ সফলতা অর্জন করেছে। ব্যবহারকারীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুদীপ্ত হালদার বলেন, ‘ওয়াশিং মেশিনে কাপড় দিয়ে ওই সময়ে অন্য কাজ করতে পারছি। আর ইউজের প্রসেসটাও অনেক ইজি। স্বল্প খরচে সহজেই কাপড় ধুতে পারছি। স্টুডেন্ট হিসেবে এটি আমার জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট।’
প্রকল্পের সদস্য রাকিবুজ্জামান রবিন বলেন, ‘আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে আমরা শহীদ স্মৃতি হলে এ সিস্টেম চালু করেছি। ব্যাচমেট আর জুনিয়ররাও খুব ভালো রেসপন্স দিয়েছে।’
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ‘ফায়ারফ্লাই হাইটেক’, একটি শিক্ষার্থী-নির্ভর উদ্ভাবনী দল, যারা দীর্ঘদিন ধরে অটোমেশন ও কন্ট্রোল সিস্টেম নিয়ে কাজ করছে। তারা কুয়েট আইটি পার্কে বিভিন্ন রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে কাজ করার পাশাপাশি হ্যামকো ব্যাটারি, মিথেন প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের অটোমেশন সিস্টেম ডেভেলপ করেছে।
উদ্যোক্তা দল জানিয়েছে, কুয়েট প্রশাসনের অনুমতি পেলে তারা ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো হলে একই ধরনের অটোমেটিক ওয়াশিং মেশিন স্থাপন করতে চান। তাদের লক্ষ্য, শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্মার্ট, সাশ্রয়ী ও প্রযুক্তিনির্ভর লন্ড্রি সিস্টেম গড়ে তোলা, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে স্বনির্ভর প্রযুক্তি সংস্কৃতি গড়ে তুলবে।