কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা, পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় সেই কলেজছাত্রী
কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে পুরো পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সেই কলেজছাত্রী। এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও তা নেয়নি পুলিশ। মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরে এ কথা জানান ধর্ষণের শিকার সেই কলেজছাত্রী।
ওই কলেজছাত্রী জানান, ধর্ষণের মামলা দায়ের করার পর থেকে আসামির মতো পালিয়ে বেড়াচ্ছি। অথচ অপরাধী নিরাপদেই আছেন। ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি থেকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে। এছাড়া মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাসায় মোটর-সাইকেলের বহর পাঠিয়েও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
কোতোয়ালী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন জানান, ওই কলেজছাত্রী ও তার মা থানায় এসেছিলেন। তাদের অভিযোগ মামলা দায়ের করায় তাদেরকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। যে জায়গায় হুমকির কথা তারা জানিয়েছেন, সেটি মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানা এলাকায়। এজন্য কাউনিয়া থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি। এছাড়া ফেসবুকে অশ্লীল গালিগালাজ বিষয়ে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের জন্য পরামর্শ দিয়েছি। ওই কলেজছাত্রী নিরাপত্তাহীনতায় থাকলে আমরা অবশ্যই নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি জানান, মামলা দেওয়ার পরে ওই কলেজছাত্রী ও তার মা রাতে আমার বাসার সামনে এসেছিলেন। বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে তাদেরকে সরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমার দাবি ঘটনার তদন্ত হোক। এতে আমি দোষী প্রমাণিত হলে বিচার মেনে নেবো।
এদিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ওই কলেজছাত্রী সোমবার (১৬ মে) আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত কেফায়েত হোসেন নগরীর বৌবাজারের রফিকুল ইসলাম মনজুর ছেলে।
আরও পড়ুন : ঘুম থেকে তুলে বললেন—‘এটা পলিটিক্যাল সিট, এখানে থাকতে পারবা না’
আগামী ১৬ জুনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের বিচারক ইয়ারব হোসেন পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) এ নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা এজাহার থেকে জানা গেছে, প্রায় ৪-৫ মাস আগে কাউন্সিলর রনির সঙ্গে মোবাইলে পরিচয় সূত্রে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের এক পর্যায়ে রনি ওই কলেজছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। প্রেমের সম্পর্কের জেরে কাউন্সিলর রনি প্রায়ই ওই কলেজছাত্রীকে তার বাসায় যাওয়ার প্রস্তাব দিতেন। গত ৭ মে বিকাল ৪টায় ওই কলেজছাত্রীকে বাসায় ডেকে নেন তিনি। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিজের বাসার দ্বিতীয় তলায় নিয়ে গিয়ে ওই কলেজছাত্রী একাধিকবার ধর্ষণ করেন রনি। এ ঘটনার পরের দিনও ওই কলেজছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন রনি।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, এ ঘটনার পর থেকে রনিকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে গত বৃহস্পতিবার রাতে বাসায় ডেকে নিয়ে কাউন্সিলর রনি ওই কলেজছাত্রী মারধর করেন ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্কের সকল প্রমাণ মুছে ফেলেন। এ সময় ওই কলেজছাত্রীকে হত্যার হুমকিও দেন তিনি।