জিপিএ ৫ পেয়েও ভর্তির সুযোগ পায়নি ১২ হাজার শিক্ষার্থী
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য প্রকাশিত প্রথম ধাপের ফলে নাম আসেনি ১২ হাজার ১৬০ জন শিক্ষার্থীর। জিপিএ ৫ পেয়েও কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হতে পারেননি তারা। ভর্তিচ্ছুদের কলেজ চয়েস অর্ডারে সমস্যার কারণে এমন হয়েছে বলে দাবি করছে কর্তৃপক্ষ।
এসব শিক্ষার্থীরা সবাই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রী। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ৪ হাজার ৯০৫ জন, কুমিল্লা বোর্ডের ১ হাজার ৪৩৮ জন, রাজশাহীর ১ হাজার ৮০৩ জন, যশোর বোর্ডের ২৭৫ জন, চট্টগ্রামের ৬৬৬ জন, বরিশালের ৪৯৬ জন, সিলেট বোর্ডের ৮৩, দিনাজপুরের ১ হাজার ৫৬৪, ময়মনসিংহ বোর্ডের ৫৮৫, মাদরাসা বোর্ডের ১৬৫ ও কারিগরি বোর্ডের ৭ জন।
একই সঙ্গে ১ লাখ ১৯ হাজার আবেদনকারী প্রথম ধাপে ভর্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় একাদশ শ্রেণির ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়। আসন সীমিত থাকায় ও ভালো মানের কলেজগুলোতে বেশি আবেদন হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আরো পড়ুনঃ সহসাই শুরু হচ্ছে না শাবিপ্রবির ভর্তি কার্যক্রম
আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য সারাদেশে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৩ জন আবেদন করে। সেখান থেকে প্রথম ধাপে ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ২২৬ জন শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। আবেদনের মধ্যে শিক্ষার্থীরা যেসব কলেজ নির্বাচন করেছে, তার মধ্য থেকেই ফলাফলের ভিত্তিতে তারা ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
তিনি বলেন, আসন সীমিত থাকায় ও ভালো মানের কলেজগুলোতে বেশি আবেদন হওয়ায় এক লাখ ১৯ হাজার আবেদনকারী প্রথম ধাপে ভর্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তার মধ্যে জিপিএ-৫ ধারী ১২ হাজার ১৬০ জন ভর্তির সুযোগ পায়নি।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ভর্তিচ্ছুদের চয়েস অর্ডারে সমস্যা ছিলো। দশটি কলেজ চয়েস দেওয়ার সুযোগ থাকলেও অনেকেই মাত্র পাঁচটি দিয়েছেন। নম্বর কম হলেও কেউ কেউ টপ অর্ডারের পাঁচটি কলেজ চয়েস দিয়েছেন অথচ সেই কলেজগুলোর জন্য তাদের নম্বর নেই।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, একজন ছাত্র প্রথম চয়েস দিয়েছেন ঢাকা কলেজ, তারপর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট, তারপর রাজউক উত্তরা মডেল ও রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ। এমন চয়েস যারা দিয়েছেন তারাই বাদ পড়েছেন।
অধ্যাপক নেহাল আহমেদ আরো বলেন, প্রথম ধাপে নির্বাচিতদের মধ্যে অনেকেই মিশনারী পরিচালিত নটরডেম, হলিক্রস, সেন্ট যোসেফ ও সেন্ট গ্রেগরিজ কলেজে সুযোগ পেয়ে ভর্তিও হয়েছেন। এই চার কলেজ ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে। বাকী সব কলেজ ও মাদরাসায় ভর্তি পরীক্ষা না হয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে নির্বাচিত করা হয়েছে।
তবে জিপিএ ফাইভ পেয়েও প্রথম ধাপে যে ১২ হাজার ভর্তির জন্য কলেজ পাননি তাদের মধ্য থেকে চার হাজারের মতো দ্বিতীয় তালিকায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। দ্বিতীয় ধাপ এখনও রয়েছে। সুতরাং কেউ ভর্তি না হয়ে থাকবেন না। হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
আগে এসএমএসের মাধ্যমে ভর্তির আবেদনের সুযোগ থাকলেও এবার শুধু অনলাইনেই আবেদন করার সুযোগ রাখা হয়। ভর্তি কার্যক্রম শেষে আগামী ২ মার্চ থেকে একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার কথা।