এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ  © ফাইল ফটো

সারাদেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন অংশ নিচ্ছেন। গতবারের চেয়ে এবারে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির তথ্যমতে, এবার দেশের সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডে শুধু এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। এর মধ্যে ছাত্র পাঁচ লাখ ৬৩ হাজার ১১৩ জন। ছাত্রী পাঁচ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৪ জন। আর মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছেন এক লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন। এতে ছাত্র ৬১ হাজার ৭৩৮ জন। ছাত্রী ৫১ হাজার ৪০৬ জন।

এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি (বিএম বা ভোকেশনাল) পরীক্ষা দিচ্ছেন এক লাখ ৪৮ হাজার ৫২৯ জন। এতে ছাত্র এক লাখ চার হাজার ৮২৭ জন। ছাত্রী ৪৩ হাজার ৬৪২ জন। এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ২৫ নভেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ।

সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় বিষয়ে পরীক্ষাও আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩০ ডিসেম্বর শেষ হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৯ ডিসেম্বর শেষ হবে। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত হবে।

এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ৯ হাজার ১৮৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুই হাজার ৬২১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন। গতবারের তুলনায় মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৩৩ হাজার ৮৭৫ জন। মোট প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১২০টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি। বিদেশের আটটি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ৪০৬ জন। এর মধ্যে জেদ্দায় ১১৪, রিয়াদে ৭৪, ত্রিপোলিতে ২, দোহায় ৭৯, আবুধাবিতে ৩৪, দুবাইয়ে ২৬, বাহরাইনে ৫৮ এবং ওমানের সাহামে ১৯ জন রয়েছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে যাই বলা থাকুক, শিক্ষা বোর্ডের নম্বর ও সময় বিভাজন নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এমসিকিউ ২৫টির মধ্যে ১২টির এবং রচনামূলক আটটি প্রশ্নের মধ্যে দুটির উত্তর লিখতে হবে।

নির্দেশনাগুলো তুলে ধরা হলো-

১. পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে ঢুকে আসন গ্রহণ করতে হবে পরীক্ষার্থীদের।

২. কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ের পর পরীক্ষা কেন্দ্রে আসলে রেজিস্ট্রারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে। বিলম্বে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে অবহিত করবেন।

৩. পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এরূপ কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।

৫. প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত থেকে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তার মনোনীত উপযুক্ত প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারসহ প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে পুলিশি পাহারায় কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন।

৬. নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/কর্মকর্তার (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিতি ছাড়া প্রশ্ন বের করা যাবে না বা বহন করা যাবে না।

৭. ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষার কেন্দ্রে বহুমুখী নির্বাচনী প্রশ্নসহ রচনামূলক/সৃজনশীলের সব সেট প্রশ্নই নিতে হবে। প্রশ্নের সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সেট কোডে পরীক্ষা নিতে হবে।

৮. কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার), কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।

৯. পরীক্ষা চলাকালীন এবং এর আগে-পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

১০. অনিবার্য কারণে পরীক্ষা বিলম্বে শুরু করতে হলে যত মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হবে পরীক্ষার্থীদের সে সময় দিতে হবে।

১১. পরীক্ষা কেন্দ্রে ও প্রশ্ন পরিবহনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন।

১২. প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেবে।

১৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব কিংবা এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ নজরদারি জোরদার করবে।

১৪. করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পরীক্ষা অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে। একজনের বেশি অভিভাবক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আসতে পারবেন না।

১৫. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ৫ সেপ্টেম্বর জারি করা গাইডলাইনের নির্দেশনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিপালন করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ