অ্যাসাইনমেন্ট ও জেএসসি-এসএসসির ভিত্তিতে মূল্যায়ন চান এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা
অ্যাসাইনমেন্ট, জেএসসি ও এসএসসির রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের দাবি জানানো হয়েছে। আজ বুধবার (১৪ জুলাই) সারাদেশের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী উচ্ছ্বাস আহমেদ এ দাবি জানান।
উচ্ছ্বাস বলেন, আমরা অটোপাস চাই না। আমদের এইচএসসি-২০২১ ব্যাচের ৯৯ ভাগ শিক্ষার্থী করোনার এই মারাত্মক পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা ছাড়া বিকল্প উপায়ে মূল্যায়ন চাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে আমাদেরকে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যালয়ন করতে পারেন। কিংবা আমাদের আগের জেএসসি ও এসএসসির যে রেজাল্ট আছে তার ভিত্তিতেও মূল্যায়ন করতে পারেন। তবে এই পরিস্থিতিতে যদি পরীক্ষা আয়োজন করা হয়, তাহলে সেটা হবে খুবই অবাস্তব।
তিনি বলেন, কারণ সশরীরে পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের অভিভাবকও কেন্দ্রে আসবে। ফলে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন হবে। আর কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষা চলাকালীন আক্রান্ত হলে তার কি হবে? ওই পুরো হলের শিক্ষার্থীদের কি হবে? ফলে সে পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতেও অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
এদিকে, চলতি বছর এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার বিষয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। এদিন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের নেয়া সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের খবরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কীভাবে বিকল্প মূল্যায়ন করা হবে সেটি ঠিক করতে একটি কমিটি করা হয়েছে। পরীক্ষা না নেয়াসহ এই কমিটির তিনটি প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিকল্প মূল্যায়নে গঠিত কমিটি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় চলতি বছর এখনো এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আয়োজন করা যায়নি। তবে তারা শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখতে চান। করোনা সংক্রমণ কমে আসলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া যায় এমন প্রস্তাবনাও রাখা হয়েছে।
আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলে পরীক্ষা ছাড়াই বিকল্প মূল্যায়নের প্ল্যানও তৈরি করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা না নিতে পারলেও শিক্ষার্থীদের আর অটোপাস দেয়া হবে। মূল্যায়নের মাধ্যমেই তাদের ফল দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, তিনটি প্রস্তাবের মধ্যে একটি হচ্ছে রচনামূলক কিংবা সৃজনশীল অংশ বাদ দিয়ে কেবলমাত্র এমসিকিউ পদ্ধতির পরীক্ষা নেয়া। আরেকটি হলো দুইটি বিষয় একীভূত করে একটি বিষয় করা। এক্ষেত্রে ২০০ নম্বরের বিষয়গুলো ১০০ নম্বরে পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিন ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ৮৪ দিন ক্লাস করিয়ে পরীক্ষা নেয়ার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পরীক্ষা আয়োজন করা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। এই অবস্থায় এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিকল্প মূল্যায়নের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।