অনলাইনে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার সক্ষমতা নেই: শিক্ষা বোর্ড

অনলাইনে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার  সক্ষমতা শিক্ষা বোর্ডের নেই
অনলাইনে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার সক্ষমতা শিক্ষা বোর্ডের নেই  © ফাইল ছবি

চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে বিকল্প চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। তবে কি বিকল্পে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে সেটি এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আরেক বিকল্প অটোপাশকেও এবার আর বিবেচনায় রাখা হচ্ছে না। অন্যদিকে অনলাইনেও শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সক্ষমতা নেই বলে বোর্ডের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই আগের ফল মূল্যায়নের ভিত্তিতে অটোপাশ করে যায়। এ ছাড়া ২০১৯ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সারাদেশের ২১ লাখ ২৭ হাজার ৮১৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা অংশ নেয় এবং তাদের মধ্যে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ জন পাশ করে।

সেই হিসাবে এ বছর প্রায় সেই সাড়ে ১৭ লাখ শিক্ষার্থীর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা। ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমিরুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আরও বেশি হবে। আগের বছরগুলোতে অনেকে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়নি, এবার তারা অটো পাশের আশায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে।

পড়ুন: আগের বছরের মত হতে পারে মূল্যায়ন

এদিকে, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাসসহ একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এস এম আমিরুল ইসলামের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’

তবে কোন পদ্ধতিতে বা কোন সময়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে। তবে পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয় তো বলেই দিয়েছেন, জাতীয় পরামর্শক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনো পরামর্শক কমিটি গঠিত হয়নি, আবার বিকল্প ব্যবস্থা কী হবে সেটা আমাদের জানানো হয়নি। আমরাও একই কথা বলব, যদি পরীক্ষা না নেওয়া যায়, তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা আসবে। তবে, তার জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে।’

অনলাইনে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে যা রিপোর্ট দেওয়ার সেটা দিয়ে দিয়েছি। এ বছর মাধ্যমিকে প্রায় ২৩ লাখ ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাড়ে ১৭ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা। আপতত অনলাইনে সারাদেশের এই বিশাল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই। প্রযুক্তিগত সক্ষমতার দিক দিয়ে আমরা এখনো ওই অবস্থায় পৌঁছতে পারিনি।’

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জানিয়েছেন, অনলাইনে সর্বোচ্চ এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব। কিন্তু রচনামূলক সম্ভব না। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হাওর-চরাঞ্চলেও আছে। ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট নিশ্চিত করাটা বড় চ্যালেঞ্জ। কম্পিউটার বা ল্যাপটপও সবার নেই।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা দুটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছি। অন্যান্য দেশে কী উপায়ে পড়ালেখা চলছে, কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে তা পর্যালোচনা করছি। কোনো দেশই করোনার সময়ে সরাসরি পাবলিক পরীক্ষা নেয়নি। তবে এখন বৈঠক করে বিকল্প উপায়ে পড়ালেখা চালুর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পরামর্শ পাঠানো হবে।

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সশরীরে না নিয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে কীভাবে নেয়া যায়, সে বিষয়ে সরকার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সঙ্গে থাকার আহ্বানও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। ফলে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সশরীরে নেয়া যাবে কি না সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার বিকল্প আছে কি না সেটাও ভাবা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ