বাড়ির কাছের কলেজে ভর্তির পরামর্শ অধ্যক্ষদের
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে গত রোববার। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের এবার নতুন করে শুরু হয়েছে কলেজে ভর্তি নিয়ে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা। একটি পূর্ব ধারণা প্রচলিত রয়েছে, ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারলে পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বা মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে তা সহায়ক হয়।
যদিও এবার প্রায় ৫৫ হাজার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারবেন না। এই পরিস্থিতিতে কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে ভালো মানের কলেজের চেয়ে বাড়ির কাছের কলেজেই ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন কয়েকজন কলেজ অধ্যক্ষ।
খিলগাঁওয়ের ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাকসুদ উদ্দিন বলেন, ভালোভালো কলেজ পাবে না ৫৫ হাজার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী
কলেজ বাড়ি থেকে অনেক দূরে হলে সেখানে ভর্তি হওয়া ঠিক নয়। ঐ কলেজে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে যদি প্রতিদিন ৫/৬ ঘণ্টা লেগে যায়, এই সময়টা শিক্ষার্থীর জীবন থেকে হারিয়ে যায়। পাশাপাশি ক্লান্তি আসবে। অর্থদণ্ড হবে। লেখাপড়ায় ক্ষতি হবে। তাই কলেজ বাসা থেকে যত কাছে হয় তত ভালো।
গত বছরের তুলনায় এবার ৩০ হাজার বেশি জিপিএ ৫ পেয়েছে। ফলে শীর্ষ কলেজগুলোয় জায়গা পেতে তারা সবাই লড়বে। রাজধানীর নামি ৩৯টি কলেজসহ দেশে মানসম্মত প্রায় ৮০টি কলেজ রয়েছে। এগুলোতে আসন সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৯৯৮ জন। ফলে প্রায় ৫৫ হাজার ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারবে না।
ভালো কলেজে ভর্তির জন্য অনেকে মফস্বল থেকে রাজধানী বা বিভাগীয় শহরের কলেজগুলোতে ভর্তি হতে চায়। মেসে ভাড়া নিয়ে থাকে। এ বিষয়ে এই অধ্যক্ষের পরামর্শ হলো এইচএসসির পড়া অন্তত নিজের বাড়ির পাশের কলেজে থেকে শেষ করো।
একই ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন বাড্ডার ন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ শহীদুল আলম। তিনি বলেন, এই দুই বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন কলেজে ভর্তি হলো এটা কোনো বিষয় না। মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। ভালো ফল করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজর আলীও মনে করেন বাসার কাছের কোনো কলেজে ভর্তি হতে হবে। এতে শিক্ষার্থীর অর্থ ব্যয় কম হবে। লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়া যাবে।
এদিকে আগামী ৬ জুন থেকে একাদশ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম শুরু করার প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিলেও সে অবস্থান থেকে সরে এসেছে মন্ত্রণালয়। করোনার দুর্যোগের বিষয়টি বিবেচনায় এনে তারা এই প্রক্রিয়া আরো বিলম্বে শুরু করতে চায়। তবে এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে জানিয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে আসনের সংকট নেই। বরং বিপুলসংখ্যক আসন খালি থাকবে। তবে এখনই ভর্তি শুরু হচ্ছে না একাদশে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি মিলিয়ে একাদশে ভর্তির জন্য মোট ১৮ লাখ ৪৬ হাজার আসন রয়েছে। এর মধ্যে সাধারণ শাখায় প্রায় ১৩ লাখ, মাদ্রাসায় এক লাখ আট হাজার।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবারও আসন একই আছে। আসনের কোনো সংকট নেই। প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট আসন সংখ্যা প্রায় ১৯ লাখ ৬৬ হাজার। এবার পাস করেছে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন। সে হিসাবে একাদশে আসন ফাঁকা থাকবে প্রায় দুই লাখ ৭৫ হাজার।’