আইডিয়ালে ওড়না-টুপি ‘বাতিলে’ বিক্ষোভ, ১৭ দিনের আলটিমেটাম
রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্কুল ড্রেস কোড থেকে মেয়েদের ওড়না, স্কার্ফ ও ছেলেদের টুপি ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে অভিভাবক ফোরাম। বিক্ষোভ শেষে আগামী ১৭ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলনের কথা জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) প্রতিষ্ঠানটির বনশ্রী ক্যাম্পাসের সামনে অভিভাবকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির মতিঝিল ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানা গেছে।
ড. তোফাজ্জল হোসেন নামের এক অভিভাবক জানান, ওড়না, স্কার্ফ ও ছেলেদের টুপি নিয়ে যেহেতু অভিভাবকদের কোনো অভিযোগ নেই, সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কেন এমন হটকারী সিদ্ধান্ত নিল। এটা যদি করতেই হতো তাহলে অভিভাবকদের সঙ্গে বসতে পারত। পরামর্শ নিতে পারত, কিন্তু কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠান এমন হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয় বিভিন্ন ধরনের ফি নির্ধারণ ও বাড়ানোর ক্ষেত্রে নিজেরা যা মনে করে তাই করে। ইচ্ছা মতো ফি বাড়িয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠানের এমন বাড়াবাড়ি শুধু এই ইস্যুতেই নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ রকম আচরণ করে প্রতিষ্ঠান। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে ওড়না, স্কার্ফ ও ছেলেদের টুপি ব্যবহারের যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা তুলে নেয়া হোক।
অধ্যক্ষের কথার সঙ্গে বাস্তবের প্রতিফলন নেই উল্লেখ করে অভিভাবকরা বলেন, নিরাপত্তাকর্মীরা ছাত্রীদের ওড়না পরে স্কুলে ঢুকতে দিচ্ছে না। অনেকে গেট থেকে ব্যাগে করে ওড়না নিয়ে স্কুলে ঢোকার পর ক্লাসে গিয়ে তা পরলেও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক শিক্ষকরা ক্লাসে গিয়ে এ ‘অপরাধের’ জন্য মেয়েদের বকাঝকা করছেন।
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম বলেন, ছাত্রীদের ড্রেসের মধ্যে সৌন্দর্য বাড়াতে বাড়তি ওড়না নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গভর্নিং বডি। প্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীসহ হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মের ছাত্রীরা পড়ে। তাছাড়া সবাই ওড়না পরে না। তাই ওড়নার পরিবর্তে হিজাব রাখা হয়েছে। কেউ চাইলে তা পরবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হিজাবেও শরীর ঢাকা যায়, এ জন্য ওড়না জরুরি না। তারপরও কেউ চাইলে পরবে।
গত কয়েকদিন ধরে চলা এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবকদের সংগঠন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরাম। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আগামী ১৭ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে তারা। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ জানুয়ারি এই ড্রেস কোড প্রবর্তন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যাম্পাস ও তিনটি শাখায় প্রায় ২২ হাজার ছাত্রছাত্রী আছে। এরআগে গত ৩ আগস্ট গভর্নিং বডির বৈঠকে ছাত্রীদের ড্রেস কোড পরিবর্তন করা হয়। এতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য রাখা হয়েছে নেভি ব্লু ফ্রক ও সাদা সালোয়ার। এর সঙ্গে সাদা জুতা ও মোজা বাধ্যতামূলক করে স্কার্ফ ঐচ্ছিক করা হয়েছে।