সোহরাওয়ার্দী কলেজে বার বার এইচএসসির ফল বিপর্যয়ের নেপথ্যে
রাজধানীর অন্যতম একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরান ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ। এলাকার যে সব শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পাস করেন, তাদের বেশিরভাগের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে কলেজটি। তবে একের পর এক এইচএসসির ফল বিপর্যয়ের কারণে প্রতিষ্ঠানটির গলার কাটায় পরিণত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শাখা। ফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিত না থাকা, সচেতনতার অভাব, অবকাঠামোগত সমস্যা ও শিক্ষক সংকটকে দায়ী করছে কলেজ প্রশাসন।
গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) উচ্চ মাধ্যমিক বা এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে এ বছর পাসের হার ৮০.০৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪২ জন। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ৫, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ ৩৩ ও মানবিক বিভাগ থেকে চারজন রয়েছেন। এ বছর ২ হাজার ১২৫ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করেছেন ১ হাজার ৭০২ জন। অর্থাৎ অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪২৩।
গত বছর সোহরাওয়ার্দী কলেজের পাসের হার ছিল ৮০.৪৪ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র আটজন। ৪০৬ জন শিক্ষার্থীর অকৃতকার্য হয়েছিলেন। ২০২২ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সোহরাওয়ার্দী কলেজের পাসের হার ছিল ৮৭.৬৮ শতাংশ এ এবং জিপিএ-৫ পায় ১১৯ জন। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২৪ জন।
প্রতিষ্ঠানটিতে এ বছর পাসের হার ৮০.০৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪২ জন। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ৫, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ ৩৩ ও মানবিক বিভাগ থেকে চারজন রয়েছেন। এ বছর ২ হাজার ১২৫ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করেছেন ১ হাজার ৭০২ জন। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪২৩।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত ২০২১ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৯৬.৭৩ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পায় ৯৫ জন। এ বছরও অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০১ জন ছিল।
পাসের হার কমার কারণ হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পারিবারিক ও জীবন-জীবিকা নির্বাহের কারণে বেশিরভাগই ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারেন না বলে জানান কলেজটির উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের একাধিকবার দায়িত্ব দিয়েও শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে পারেননি।
আরো পড়ুন: ঢাবির শূন্য আসন বেড়েছে, বিশেষ মাইগ্রেশনের সুযোগ শিক্ষার্থীদের
ক্লাসে শিক্ষক পরিবর্তন, শিক্ষার্থীদের আনুপাতিক হারে শিক্ষকদের দায়িত্ব ভাগ করে মনিটরিংসহ একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও আশানুরূপ সাফল্য আসেনি জানিয়ে তিনি বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকের আশানুরূপ ফলাফল পেতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার বিকল্প নেই। তাদের ক্লাসে ফেরাতে কলেজকে আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা করা, নির্ধারণ রুটিন ব্যবহার করে ইন্টারমিডিয়েটের ক্লাসগুলো চলমান অবস্থায় স্নাতকের ক্লাসগুলো বন্ধ রাখাসহ একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, আমাদের কলেজে যারা ভর্তি হন, তাদের বেশিরভাগের মাধ্যমিকের ফলাফল থাকে মাঝামাঝি ধরনের। সেক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন এখানকার শিক্ষকরা। তিনি ফলাফল বিপর্যয়ের পেছনে অবকাঠামোগত সমস্যা, ক্লাসরুম ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক সংকটকেও দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে আমার দায়িত্ব শুরু হল। আমি এ প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের আশানুরূপ মানোন্নয়নের ব্যাপারে কাজ শুরু করব। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষকের আন্তরিক সহায়তা একান্ত কাম্য।