এইচএসসিতে সবাই ফেল করা কলেজটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে দিতো না ক্ষমতাসীনরা
নাটোরে অবস্থিত বেগম খালেদা জিয়া মহাবিদ্যালয়ে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউ পাস করেননি। এ বছর চারজন শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটি থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন। যাদের কেউই কৃতকার্য হতে পারেননি।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ফল প্রকাশের পর বিষয়টির ব্যাখ্যায় বেগম খালেদা জিয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইব্রাহিম খলিল বিগত সরকরের ক্ষমতাসীনদের প্রতি অভিযোগ করেছেন। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রতিষ্ঠানটিতে আওয়ামী সরকার আসার পর বিভিন্নভাবে বাধা প্রদান করা হতো।
অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমাদের নন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি শুরুর দিকে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ভালো ছিল। পরবর্তীতে পটপরিবর্তন হলে এখানে কাউকে ভর্তি করাতে দিতো না। কলেজ খুলতেও অনেক সময় বাধা প্রদান করা হতো। তবুও প্রতি বছর পাসের সংখ্যা আশানুরূপ থাকতো। এ বছর যে পাঁচজন পরীক্ষা দিয়েছে তারা কেউ নিয়মিত ক্লাস করত না। আমরা চেষ্টা করছি নতুন করে প্রতিষ্ঠানটাকে ঢেলে সাজানোর। আশা করি সামনের বছর ভালো ফলাফল হবে।
এ বছর নাটোর জেলায় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৪৬৩ জন শিক্ষার্থী।
নাটরে পাস না করা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- গুরুদাসপুর উপজেলার 'দুর্গাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ' যেখানে ৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। নলডাঙ্গা উপজেলার সরকোতিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২ জন এবং বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা উইমেন্স কলেজ থেকে ২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও কেউ পাস করেননি।
নাটরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. রওশন আলী বলেন, নাটোর থেকে এ বছর মোট ১১ হাজার ৪৬৭ জন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যার ভেতর পাস করেছে ৮ হাজার ৯৯২ জন। চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজনও পাস করতে পারেনি। এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেন পাস করল না সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করব।
প্রকাশিত ফলে এবার নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আর নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ২০২৩ সালে গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার কমেছে দশমিক ৮৬ শতাংশ।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ৯টি সাধারণ ও মাদরাসা এবং কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। গত বছর ১১টি বোর্ডে গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৯২ হাজার ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী।