এসএসসির ফলে মেয়েকে ছাড়িয়ে গেলেন ৪৫ বছর বয়সী মা
৪৫ বছর বয়সে মা ও আঠারো বছরে মেয়ে একসাথে এসএসসি পাস করে স্থাপন করেছেন উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঠাঁলকান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী আফসর মিয়ার স্ত্রী নূরুন্নাহার বেগম ও তার মেয়ে নাসরিন আক্তার।
সদ্য প্রকাশিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০২৪ সালের এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নূরুন্নাহার বেগম (মা) পেয়েছেন ৪ দশমিক ৫৪ জিপিএ ও তার মেয়ে নাসরিন আক্তার এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন। তার মেয়ের জিপিএ ২.৬৭।
মা ও মেয়ের একসঙ্গে পাস করার ঘটনা এলাকায় বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সবাই ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নুরুন্নাহার বেগমের প্রশংসা করছেন।নুরুন্নাহারের পরিবারেও বইছে আনন্দের বন্যা। স্বজনরা ছুটে আসছেন তাঁর বাড়িতে।
নুরুন্নাহার বেগম জানান, তিনি আরো পড়তে চান। অনেক বিপত্তি পেরিয়ে তার এই এগিয়ে চলা।
নিজের দুই সন্তানকেও পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। পড়াশুনার কোনো বয়স নেই বলে তিনি মনে করেন। মা নুরুন্নাহার বেগম ও মেয়ে নাসরিন আক্তার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড়া ওয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। মা কারিগরি বিভাগ থেকে ও মেয়ে স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।
নুরুন্নাহার বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যায়। শ্বশুর বাড়ির লোকজন ছিলেন রক্ষণশীল। এ অবস্থায় পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারিনি। এক পর্যায়ে মেম্বার নির্বাচিত হই। এ নিয়ে দুইবার মেম্বার। সবার অনুমতি নিয়ে আবার পড়াশুনা করি। কেননা, লেখাপড়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করি।’
নুরুন্নাহারের ছোট ভাই স্বপন আহমেদ এ বিষয়ে অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘বোনের পাস করার খবরে কি যে খুশি হয়েছি তা বলে বুঝানো যাবে না। একই সঙ্গে ভাগ্নি পাস করলেও তার খবরটি না দিয়ে ফেসবুকে বোনের রেজাল্টের স্ট্যাটাস দিয়েছি।’