শিক্ষার্থী না হয়েও একসঙ্গে ক্লাস, প্রেমের প্রস্তাবে নারাজিতে ছুরিকাঘাত
লক্ষ্মীপুরে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সুবর্ণা মুনতাহা রিজমি নামে এক কলেজছাত্রীকে ছুরিকাঘাত ও ইট মেরে আহত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ রোডে এ ঘটনা ঘটে। আহত রিজমি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ও সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের তালহাটি গ্রামের প্রবাসী মুরাদ হোসেনের মেয়ে।
অভিযুক্ত তানজীদ আহমেদ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালুহাজী সড়কের প্রবাসী শামীমের ছেলে। অভিযুক্ত রিয়ান দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র হলেও সে প্রতারণা করে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের পোশাক পরে নিয়মিত ক্লাস করতো বলে জানিয়েছে কয়েকজন শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, তানজীদ আহমেদ রিয়ান দালালবাজার ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। তার বখাটে বন্ধুদের নিয়ে আমার ওপর হামলা করে।
কলেজছাত্রী ও তার মা সুমি ভুঁইয়া জানায়, প্রায় সাত মাস ধরে কলেজে আসা-যাওয়ার পথে রিজমিকে উত্ত্যক্ত করতো রিয়ান। এরমধ্যে রিয়ান তাকে প্রেমের প্রস্তাবও দেয়। কিন্তু রিজমি তার প্রস্তাবে রাজি হয়নি। পরে বিষয়টি রিজমি তার পরিবারকে জানায়। এ নিয়ে রিয়ানকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য তার পরিবারের কাছেও বিচার দেওয়া হয়। তখন রিয়ানের মা জানিয়েছে, তার ছেলে আর কখনো রিজমিকে উত্ত্যক্ত করবে না। এরপরও রিয়ান তাকে উত্ত্যক্ত করতো।
রিজমির মামা রাসেল ভুঁইয়া বলেন, কলেজের উদ্দেশ্যে রিজমি বাড়ি থেকে রওনা হয়। গাড়ি থেকে নেমে সামাদ স্কুল মোড় থেকে হেঁটে কলেজ যাচ্ছিল সে। পথে মধ্যে রিজমিকে লক্ষ্য করে পেছন থেকে রিয়ান ইটের টুকরো ছুড়ে মারে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে সে গুরুতর আহত হন। এসময় তার সঙ্গে আরও ১০-১২ জন সহযোগী ছিল।
রিজমির মা সুমি ভুঁইয়া আরও বলেন, রিয়ান ও তার বন্ধুরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের দুইজন ছাত্রী জানায়, রিয়ান তাদের সঙ্গেই ক্লাস করতো। দালাল বাজার কলেজ থেকে ট্রান্সফার হয়ে সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছে বলে রিয়ান সবাইকে জানিয়েছে। রিয়ান আর রিজমিকে প্রায়ই একই সঙ্গে দেখা যেতো। তবে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি-না তা নিশ্চিত নয় তারা।
এ নিয়ে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুবুল করিম বলেন, ছেলেটি আমাদের কলেজে ক্লাস করতো কি-না তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। ক্লাসের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ঘটনাটি কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটেছে। পরে ঘটনাটি জেনেছি। রিয়ান আমাদের ছাত্র না। রিজমিকে দেখতে হাসপাতালে আমাদের কয়েকজন শিক্ষককে পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।