এইচএসসি পরীক্ষায় চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাফল্য
চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা এবারও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে আশাব্যঞ্জক সাফল্য অর্জন করেছে।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত ফলাফলে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী ৫০৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫০৩ জন। পাসের হার ৯৮. ৮২% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫৬ জন শিক্ষার্থী। এ বছর প্রতিষ্ঠানটি থেকে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৫১৩ জন। অসুস্থতাজনিত কারণে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারেনি ৪ জন পরীক্ষার্থী।
এ বছর কলেজের বিজ্ঞান শাখা থেকে শতভাগ উত্তীর্ণের পাশাপাশি ১৬১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ১৫৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। আর মানবিক শাখা থেকে ১২১ শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে ১১৯ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে এবং ৬৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এছাড়াও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে ২২৭ জন শিক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে ২২৩ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩১ জন।
এদিন ফলাফল প্রকাশের সময় এইচএসসি পরীক্ষা উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে এসে আনন্দে মেতে ওঠে। শিক্ষার্থীরা তাদের এ ভালো ফলাফলের জন্য কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল খায়ের সরকার, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
এসময় কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের এই সাফল্য আমাদেরকে আনন্দিত করেছে। তোমরা পরিশ্রম করেছ, তোমাদের বাবা মায়ের দোয়া ছিল, আমার শিক্ষকরা চর্চা করেছেন, আমরা ভাল ফলাফল অর্জন করেছি। তবে এখানেই শেষ নয়, আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, তোমরা বুয়েট, মেডিকেল, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধে উত্তীর্ণ হও। তোমরাই আগামী দিনের বাংলাদেশ, আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে তোমরা হবে দক্ষ কারিগর।
প্রসঙ্গত, গতকাল সকালে ২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা গতবারের চেয়ে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ কম।
এবারের ফলাফলে দেখা গেছে, মোট ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৩৮৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন, যা গতবারের চেয়ে ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৯৪ জন কম। গত বছর পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ থাকলেও এ বছর তা ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
ফলাফলে ২০২২ সালে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। এবার ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর এর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯। ২০২১ সালের তুলনায় এ বছর জিপিএ-৫ কম পেয়েছে ১২ হাজার ৮৮৭ জন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ, বরিশালে ৮৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ, কুমিল্লায় ৯০ দশমিক ৭২ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৯ দশমিক ০৮ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮১ দশমিক ৬০ শতাংশ, সিলেটে ৮১ দশমিক ৪০ শতাংশ, ময়মনসিংহ ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ ও যশোরে ৮৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর মাদ্রাসা বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে ৯৪ দশমিক ৪১ শতাংশ।
বোর্ড ভিত্তিক ফলাফলে দেখা গেছে, ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬২ হাজার ৪২১ জন, রাজশাহীতে ২১ হাজার ৮৫৫ জন, কুমিল্লায় ১৪ হাজার ৯৯১ জন, যশোরে ১৮ হাজার ৭০৩ জন, চট্টগ্রামে ১২ হাজার ৬৭০ জন, বরিশালে ৭ হাজার ৩৮৬ জন, সিলেটে ৪ হাজার ৮৭১ জন, দিনাজপুরে ১১ হাজার ৮৩০ জন ও ময়মনসিংহে ৫ হাজার ২৮ জন। আর মাদ্রাসা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৪২৩ জন ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে পেয়েছেন ৭ হাজার ১০৪ জন।