০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৯

ফল পরিবর্তনের ফাঁদ পেতে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা

প্রতীকী  © সংগৃহীত

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি প্রতারক চক্র। ফল পরিবর্তনের নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। এখন পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদেরকে অধিক নম্বর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে চক্রটির বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয়ে পোস্ট দিয়ে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলা হয়। এরপর ফল পরিবর্তনের প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে টাকা।

প্রতারকের এমন ফাঁদে পড়ে বিকাশে দুই দফায় সাড়ে ৫ হাজার টাকা হারিয়েছেন কুমিল্লার ইকরামুল করিম নামে এক ফল প্রত্যাশী। তিনি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষা দেন। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে।

ভুক্তভোগী ইকরামুল করিম বলেন, ফেসবুকে ২০২২ নামের একটি গ্রুপে উত্তম কুমার ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি রেজাল্ট পরিবর্তনের কাজ চলছে বলে পাবলিক পোস্ট দেয়। সেখানে লেখা হয়- বোর্ড কর্মকর্তার মাধ্যমে ফলাফল পরিবর্তন করা সম্ভব। সাবজেক্ট খারাপের ফল পরিবর্তনসহ জিপিএ-৫ পাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে প্রয়োজনে ইনবক্সে ম্যাসেজ দেওয়ার জন্য বলা হয়।

আরও পড়ুন: মিরপুরের রাস্তায় পাওয়া এইচএসসির ৫০টি খাতা বোর্ডে

‘‘আমি প্রথমে ইতস্তত করলেও পরে আমি ওই আইডির ইনবক্সে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে জানানো হয়, তিনি শিক্ষাবোর্ডে কাজ করেন। পরে ম্যাসেজ আসে জিপিএ-৫ পেতে ৬ হাজার ৫০০ টাকা খরচ হবে। একটি বিকাশ নম্বর দিয়ে টাকা পাঠানোর জন্য বলা হয়।’’

তিনি আরও বলেন, আমি প্রথমে ৫০০ টাকা দেওয়ার পর সেখান থেকে বাকি টাকা পাঠাতে বলে। পরে আরও ৫ হাজার টাকা পাঠাই। এরপরই ওই আইডি থেকে আমাকে ব্লক করে দেওয়া হয়। এছাড়া যেই বিকাশ নম্বর দেওয়া হয় সেটিও বন্ধ পাই। সব কথোপকথন আমার কাছে স্ক্রিনশট নেওয়া আছে।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগে প্রতারকরা এমনভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে। অসচেতন শিক্ষার্থীদের ফাঁদে ফেলে টাকা-পয়সা নেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের এটা জানা দরকার, ফল কোনোভাবেই পরিবর্তন করা সম্ভব না। আমরা এর আগেও এমন ঘটনা শুনেছি, আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল।

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে। করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় গত ৬ নভেম্বর সারা দেশে অনেকটা স্বাভাবিক পরিবেশে শুরু হয়েছিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১২ লাখের কিছু বেশি।