করোনা ও বন্যায় অচেনা এক ঈদ
প্রতিবছর ঈদ আসলে মানুষের জীবনে এক অপার আনন্দের সুখ বইয়ে যায়। সব ভেদাভেদ ভুলে সবাই এক হয়ে মিলেমিশে তৈরি করে প্রাণের সম্ভার। কিন্তু উৎসবের-আমাজের সেই চিরচেনা ঈদকে মহামারী করোনা এবং বন্যা ও নদীর ভাঙনের পানি মলিন করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়োশোনার ব্যস্ততম জীবনে ঈদ ছিলে অপেক্ষার অন্যতম অনুষঙ্গ। এই দিন ঘিরে খুশির অন্ত থাকতো না তাদের মাঝে। কিন্তু করোনা আর বন্যা তাদের সব আনন্দ বিষণ্ণতায় ভরিয়ে দিয়েছে। সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অচেনা ঈদের এই ভাবনাগুলোই তুলে ধরছেন তানভীর আহম্মেদ
প্রতিবারের চেয়ে এবারের ঈদ আমাদের সবার জন্যই একটু আলাদা। প্রতিবার যেভাবে আমরা ফ্যামিলির সবাই মিলে এক সাথে ঈদ উদযাপন করতাম এবার অনেকের সেরকম হয়ে উঠছে না। একে তো করোনা অপরদিকে বন্যা। করোনায় লকডাউনের জন্য অনেকের ইনকাম বন্ধ। এই অবস্থায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করাই অনেকের জন্য কষ্টের, তারা হয়তো এবার কুরবানি দেবার সামর্থ্যটুকুও হারিয়ে ফেলেছেন। আর যারা বন্যা কবলিত তাদের কষ্টের কথা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
তাদের জন্য এবারের ঈদটা যে কতোটা কষ্টের তা আমরা সবাই অনুধাবন করতে পারছি। এবারের ঈদ হয়তো আমাদের কারোই সবসময়ের মতো ভালো কাটবে না তবে আশা করি এই ঈদেই আল্লাহ আমাদের দিকে তার রহমত বর্ষণ করবেন এবং করোনা ও বন্যা থেকে মুক্তি দিয়ে আবার আমাদের জীবন আনন্দ ভরিয়ে দিবেন। আমরা সকলেই স্ব-স্ব অবস্থান থেকে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী এই মানুষের জন্য এগিয়ে যাবো। এই কামনা করে সবাইকে জানাচ্ছি ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।
এইবারের ঈদটা মনে হয় আর ৪-৫টা ঈদের মত হবে না। সেই আনন্দ আড্ডা সব কিছুই বাদ দিতে হবে। থমকে আছে বিশ্ব তার সাথে বাংলাদেশও। এর মাঝে আবার বন্যা। একেই বলে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামাল দিতে যখন আমরা হিমশিম খাচ্ছি তখন বানের পানিতে ভাসছে দেশের নিম্নঅঞ্চলগুলো। আর এমন সময় এলো কোরবানির ঈদ। দেশের প্রায় ৩১টি জেলায় করোনাভাইরাস এবং বন্যা-এই দু’টি দুর্যোগ একসাথে মোকাবেলা করাটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।তাদের নেই আমাদের মত ঈদ আনন্দ।
সকলের সম্মলিতভাবে উচিত তাদের পাশে দাড়ানোর। যে যেখান থেকে পারি যেভাবেই পারি নিজের সীমাবদ্ধতার মধ্য থেকে তাদেরকে সাহায্য করা জরুরি। তারাও আমাদের মত রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক
মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ। বছরের দুইবার দুই ঈদে আনন্দ আর উৎসবের যেন জোয়ার বয়ে যায়। কিন্তু এ বছরে দুই ঈদের বদলে দুই বিষপোড়া মানুষের জীবনে দুঃখের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে। মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে ঈদুল উল ফিতর মাটি হয়ে গেলেও ঈদুল আজহা কে ঘিরে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু, সে স্বপ্নের দুয়ারে এলো আরো বড় আঘাত। করোনার পরে বন্য যেন চোখের মধ্যে জমে থাকা অবশিষ্ট জলটুকুও শুষে নিল।
করোনায় ঘরবন্দী জীবনের সাথে বন্যার কষ্ট আমার জীবন থেকে ঈদের আনন্দ একদম কেড়ে নিল। এবারের ঈদ একদমই অচেনা। আমার জীবনে এমন অচেনা ঈদ আসবে কখনো ভাবিনী। যেখানে আমাদের জীবন-জীবিকা ও স্বাস্থ্য হুমকির মুখে সেখানে আনন্দ শব্দটি একদমই বেমানান হয়ে পড়েছে। ঈদ, ঈদ... ঈদ ধ্বনি এবার শুনা যাবে না।
এবারের ঈদে মানুষের জীবনে হাসি নেই। করোনা ভাইরাস এবং এই বন্যায় সবার আনন্দ ভেস্তে দিয়েছে। এদুটো দুর্যোগ উপেক্ষা করে ভালো থাকার চেষ্টা করেও কোনভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। মনে সুখ না থাকলেও হাসিমুখ নিয়ে সবার ঈদ উদযাপন হোক এটাই প্রত্যাশা করি। করোনা এবং বন্যা কে উপেক্ষা করে, অনেক যানজট এর ভিড় ঠেলে পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদ আনন্দ কাটাতে বাড়ি যাচ্ছে অনেক মানুষ। এতসব সমস্যার পরও মানুষের এ উদ্দীপনা দেখে খুব ভালো লেগেছে। এমন কোন জায়গা নেই যেখানে বন্যা হয়নি। বন্যার কারনে অনেক ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। আশা করি, এসব দুর্যোগ কাটিয়ে মানুষের উদ্দীপনার জয় হবে। সবাই যেন ভালভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারে হবে। ঈদ মোবারক সবাইকে।
দীর্ঘ ৫মাস ধরে করনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে। যার কারণে এমনিতেই খুব বিষন্ন দিন যাচ্ছে। অন্যদিকে মানুষের উপার্জন ক্ষমতা কমে গেছে, জীবন জীবিকা থমকে গেছে। এ অবস্থায় আবার হানা দিলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা। এসব দেখে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে। ঠিক এমন সময়ে এবারের ঈদ এসেছে।
ঈদ মানে আনন্দ। কিন্তু, এবারের ঈদ কোন আনন্দের ঈদ নয় করোনা ও বন্যা নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াই। বন্যা মহামারি নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে এবার ঈদ অন্যদের মতো আমার আনন্দও মলিন করে দিয়েছে। কোরবানির সত্যিকারের ত্যাগ যেন বন্যা দূর্গত মানুষের।