২৩ এপ্রিল ২০২০, ০৪:২৩

সিমাগো-স্কপাস র‍্যাংকিংয়ে চমক দেখিয়ে দেশ সেরা মাভাবিপ্রবি

বিজ্ঞান গবেষণার ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত সিমাগো-স্কপাসের ২০২০ সালের ইনস্টিটিউশনস র‌্যাংকিংয়ে চমক দেখিয়ে দেশ সেরা হলো মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)। এ বছর প্রথমবারের মতো র‌্যাংকিংয়ে অবস্থান পেয়েই দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছে টাঙ্গাইলের এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

জানা যায়, গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রভাব—এ তিনটি বিষয়কে ভিত্তি ধরে বিজ্ঞান গবেষণায় অবদানের জন্য প্রতি বছর শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের র‌্যাংকিং প্রকাশ করে স্পেনের সিমাগো ল্যাব ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস। সম্প্রতি সিমাগো ইনস্টিটিউশনস র‍্যাংকিংস (এসআইআর) শীর্ষক এ র‌্যাংকিংয়ের ২০২০ সালের তালিকা প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে দেখা যায় চলতি বছরের সংস্করণে বাংলাদেশের ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে মাভাবিপ্রবি। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)।

এসআইআর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের বিশ্বের ৭ হাজার ২৬টি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান  এ তালিকায় স্থান পায়। এর মধ্যে বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান প্রথম নয়শোর মধ্যে।

এরমধ্যে জাতীয় পর্যায়ে সবার শীর্ষে থাকা টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে অবস্থান ৬৯০তম।

এ প্রসঙ্গে মাভাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলাউদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সিমাগো-স্কপাসের এ র‍্যাংকিং সব মহলে গ্রহণযোগ্য একটি প্রকাশনা। গবেষণার সংখ্যা নয়; গুণগত মানের বিচারে এ র‌্যাংকিং করে থাকে। তাই স্বনামধন্য এ র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষ অবস্থানে আসার খবর আমাদের গোটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য আনন্দের। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজে এটি উৎসাহ জোগাবে।

র‌্যাংকিংয়ে স্থান পাওয়া বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক অবস্থান ৬৯৯তম। 

তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে অবস্থান ৭৩৩তম।

চতুর্থ অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বির বৈশ্বিক অবস্থান ৭৫৪তম। জাতীয় পর্যায়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বৈশ্বিক  অবস্থান ৭৬১তম। ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক অবস্থান ৭৬৬তম। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তালিকায় সপ্তম অবস্থানে থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ে অবস্থান ৭৭৮তম। আর অষ্টম অবস্থানে রয়েছে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট), বৈশ্বিক অবস্থান ৭৯৩তম। নবম অবস্থানে থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব তালিকায় অবস্থান পেয়েছে ৭৯৯তম। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে দশম অবস্থানে থাকা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক অবস্থান ৮০৪তম।

তালিকায় থাকা বাংলাদেশের বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলেঅর মধ্যে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে অবস্থান ৮০৬তম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ৮১৫, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ৮২২, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ৮৩২, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চিটাগং (আইআইইউসি) ৮৩৮, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) ৮৪৪ ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি)  ৮৪৬তম অবস্থান অর্জন করেছে।

র‌্যাংকিং পদ্ধতি বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ১০০টি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকেই বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। জরিপের ক্ষেত্রে আটটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আউটপুট বা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া প্রকাশনার সংখ্যা, প্রকাশনার গুণগত মান, স্পেশালাইজেশন ইনডেক্স বা প্রকাশনার ওপর মনোযোগ, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা, এক্সিলেন্স হার বা প্রকাশনাগুলো শীর্ষ ১০ শতাংশ জার্নালে কী হারে প্রকাশিত হয়েছে তা, সায়েন্টিফিক লিডারশিপ বা প্রকাশনাগুলোর অবদান। এছাড়া এক্সিলেন্স উইথ লিডারশিপ প্রকাশিত প্রকাশনাগুলো ওই প্রতিষ্ঠানের অবদানের ক্ষেত্রে কী হারে শীর্ষে রয়েছে, সেটিও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।