বটতলায় ‘তারুণ্য লাইব্রেরি’
বইয়ের আলোয় আলোকিত হয়ে সমাজ, দেশ ও বিশ্বকে আলোকিত করার সুযোগ করে দিয়েছে তারুণ্য। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন ও বিজ্ঞান ভবনের মাঝখানে রয়েছে দুটি বটবৃক্ষ। বটতলায় আড্ডায় মেতে ওঠে শিক্ষার্থীরা। বন্ধুত্বের আড্ডা রেখে শিল্প-সাহিত্য চর্চায় নিমগ্ন হয়ে ওঠে অনেকেই। কাঠের তাকে সাজিয়ে রাখা বইগুলো থেকে বেছে নেয় পছন্দের বইটি। বটের ছায়ায় সেখানে বসে বই পড়ে আত্মিক উত্কর্ষ সাধন ও আত্মশুদ্ধিতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় বইপ্রেমীদের।
প্রতি বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারুণ্যের সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে ভ্রাম্যমাণ ‘তারুণ্য লাইব্রেরি’। তারুণ শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে, শিল্প-সাহিত্য চর্চা সহজলভ্য করতে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ প্রতিষ্ঠা করে ‘তারুণ্য লাইব্রেরি’। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুন উর রশিদ আসকারী এ লাইব্রেরির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর ২৩ অক্টোবর সদস্যদের জন্য তা খুলে দেওয়া হয়। যে কোনো শিক্ষার্থী তারণ্য লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে পড়তে পারে। এছাড়া বুক রিভিউ, সাহিত্য আড্ডা, লেখক পাঠক আড্ডাসহ সাহিত্য চর্চার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে তারুণ্য লাইব্রেরি।
‘অবারিত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত তারুণ্য’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই যাত্রা শুরু করে তারুণ্য। তারুণ্য একটি অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও জনকল্যাণমূলক সংগঠন—যা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগানো, তরুণদের স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব সম্পন্ন করে গড়ে তোলা, সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় অংশগ্রহণ, বনায়ন, রক্তদান, শীতবস্ত্র বিতরণ ও অসহায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে তারুণ্য।
তারুণ্যর দুরন্ত পথিক আয়েশা সিদ্দিকা তন্বী বলেন, তারুণ্যর কাজই মানুষের কল্যাণ করা কিন্তু তার দৃষ্টি শুধু মানুষের বাহ্যিক কল্যাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তারুণ্য চায় মনের কল্যাণ সাধন করতে। এ কল্যাণ সাধনের জন্যই ‘তারুণ্য লাইব্রেরি’। কারণ বই জ্ঞানের পরিধি বাড়ায়। বই তার জ্ঞানের দ্বারা মানুষের জীবন আলোকিত করে। তারুণ্যের লক্ষ্য তার সদস্যদের ভেতর থেকে আলোকিত করা। ভেতর থেকে সঠিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই তারুণ্য লাইব্রেরির উদ্দেশ্য।
সূত্র: জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক, প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান কবীর