আগামী বছর থেকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। যা আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবার ইউজিসিতে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ সভাপতিত্ব করেন।
এতে প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভূক্ত করে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আপত্তি থাকলে তাদেরকে বাদ দিয়েই ভর্তি পরীক্ষা হবে। সূত্রের তথ্য, কেন্দ্রিয়ভাবে শুধু একটি কমিটি থাকবে, যারা পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে। এক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে কারা সেই দায়িত্ব পাবেন, তা পরবর্তীতে বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে।
সভা শেষে ইউজিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২০-২০২১) থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মানবিক, ব্যবসায় ও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা প্রশ্নপত্রে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে অনুষ্ঠিত সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির বিভিন্ন বিষয়ে আলেচনার জন্য ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ বলে গঠিত ০৪টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দের সঙ্গে শিগগির এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে তাঁদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। গত বছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্যদের সংগঠন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ দৃঢ়কণ্ঠে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তাদের অভিমত পুনর্ব্যক্ত করেন।
দেখুন: সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে দ্বি-মতের অবকাশ নেই: ইউজিসি চেয়ারম্যান
প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, আজ দেশ ও জাতির আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে সমন্বিত পদ্ধতিতে একটি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হোক। এখানে দ্বিমতের কোন অবকাশ নেই। আমরা যদি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করি তাহলে দেশ ও জাতি আমাদের অভিনন্দিত করবে।
তথ্যমতে, প্রথমবারের মত ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উদ্যোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে এক বৈঠকে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই বৈঠকে চার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি কমিটি, পাঁচটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি এবং চারটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটিসহ মোট তিনটি কমিটি গঠন করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এছাড়া একটি কেন্দ্রীয় কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে কোন বিশ্ববিদ্যালয় রাজি না হওয়ায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।