পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাবলিক কলেজ হিসেবেও ফাংশন করছে না
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ জুন ২০১৯, ১১:৫৪ PM , আপডেট: ১২ জুন ২০১৯, ১২:৩৭ AM
দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারি কলেজের মতও পরিচালিত হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে প্রকৃত অর্থে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেনি। বর্তমানে দেশে উচ্চশিক্ষার সবচেয়ে পুরনো শিক্ষায়তন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ বলাই বেমানান। এটি পাঁচ বছর মেয়াদী একটি প্রহসন মূলক কলেজ।
মঙ্গলবার রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন রুশাদ ফরিদী। তাঁর পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শুনে কিছুদিন আগে একজন বিদ্রুপাত্মক ভাবে বললেন ও... আপনাদের ভার্সিটি তো এশিয়ার মধ্যেই র্যাংকিং এ নাই। তার বিদ্রুপ আমি গায়েই মাখলাম না। বললাম ভাই আপনি আশা করছেন আমাদের দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং এ আসবে এটাই তো একটা হাস্যকর বিষয়।
উনি একটু উত্তেজিত হয়ে বললেন কেন কেন?
দেখেন বাংলাদেশে এখনও সেই অর্থে কোন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠে নাই। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। একে এর বর্তমান অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় বলাটা বড়ই বেমানান। এটিকে বরং বলা যেতে পারে পাঁচ বছর মেয়াদী একটি প্রহসন মূলক কলেজ।
কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পার্থক্য হলো কলেজে মূলত জ্ঞান বিতরণের কাজ, সোজা বাংলায় শিক্ষা প্রদান মূল কাজ হয়। অন্য দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান বিতরণের পাশাপাশি জ্ঞান তৈরীর কাজ মানে গবেষণা হয়ে থাকে। সেই জন্য উন্নত মানের মাস্টার্স এবং পিএইচডি প্রোগ্রাম অতি আবশ্যক।
আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও পাবলিক কলেজ হিসেবেও ঠিকমতন ফাংশন করছে না। তাই এটিকে বলেছিলাম প্রহসনমূলক কলেজ। এই অপভ্রংশ টাইপের কলেজ নিয়ে আপনি আশা করছেন যে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং এ উঠে আসবে?
যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি এখনও নিশ্চিত করতে পারেন না শিক্ষকেরা ক্লাসে ঠিকমতন যায় কিনা, কি পড়ায় না পড়ায় সেতো আরো অনেক দূরবর্তী বিষয় সেটির কাছে আপনি আশা করছেন নিত্য নতুন জ্ঞান তৈরী করবে।
যেই বড়শী দিয়ে পুঁটি মাছ ধরতে যেয়ে বড়শী ভাংগার উপক্রম, সেটি দিয়ে আপনি রাঘব বোয়াল ধরতে চাচ্ছেন।
তাই র্যাংকিং, গবেষণা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা আসলে বাংলাদেশের বর্তমান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সবচেয়ে গুরুতর বিষয় নিয়ে আলোচনাটি গুলিয়ে ফেলে। সেটি হলো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের মূল কাজের মূল্যায়নের কোন জবাবদিহিতার কাঠামো নাই।
এই কাঠামো যতদিন না তৈরী হবে ততদিন র্যাংকিং নিয়ে আলোচনা, গবেষণা কেন হয় না এই নিয়ে হা হুতাশ পুরোই অর্থহীন।”
রুশাদ ফরিদীর ফেসবুক পোস্টের লিংক।
আরো পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ও অন্যান্য ফি কেমন হওয়া চাই
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সার্টিফিকেট বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে: শিক্ষামন্ত্রী