০৪ মে ২০১৯, ২২:০৫

ভূয়া মামলায় ১২ দিন জেলে ঢাবি ছাত্র, ছাড়ালেন আখতার হোসেন

আখতারের সাথে ওই ছেলেটি

মানবপাচারের অভিযোগে ১২ দিন জেল খাটলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। ২০ এপ্রিল মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলায় কারাগারে যান ওই ছাত্র। অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের সহযোগিতায় ২ মে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। ওই ছাত্রের কাছে টাকা দাবি করে না পেয়ে পুলিশ তার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।

জানা যায়, গত ২০ এপ্রিল গাজীপুরের টঙ্গীর রাস্তায় পুলিশ চেকিং করে ঢাবির ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে। পরে তাকে বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ তাকে মানবপাচারের অভিযোগে আটক করে এবং মানবপাচার আইনে মামলা দেয়। পরে এই মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবি, পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর টাকা দাবি করে। কিন্তু সেই টাকা দিতে না পারায় মিথ্যা হয়রানিমূলক মানবপাচারের মামলা দেয়। 

ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে ওই শিক্ষার্থীর মুক্তি নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেন, ‘‘গাজীপুরের টঙ্গীতে রাস্তার মাঝেই হঠাৎই চেকিংয়ের কবলে পড়ে সে। তাকে প্রশ্ন করা হল, কোথায় থাকিস এবং কি করিস? ঢাবির ওই শিক্ষার্থী জানান, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। থাকি শাহবাগে।’ পরে তার কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে মানব পাচার আইনে মামলা দেয় পুলিশ। পরদিন কোর্টের মাধ্যমে জেলে পাঠায়।

তার পরিবার আমার সাথে যোগাযোগ করে দুইদিন পর (২২ এপ্রিল)। তখন থেকে উকিলের সাথে কথা বলা, গাজীপুরের এসপি, পুলিশ কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করা শুরু করি। এদিকে তার জামিনের জন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রত্যয়নপত্র, হল থেকে পেইং স্লিপ, এস-আই-এফ ফর্ম সংগ্রহ করে গাজীপুরে পাঠাই। ওর হলের এবং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক এবং প্রক্টর স্যারকেও বিষয়টি জানাই। সবাই খুব দ্রুতই রেসপন্স করেছেন। ওর দুজন বন্ধু সারাদিন খেটেছে। হ্যাঁ, সেদিনই আমাকে বারবার বলতে হয়েছে, ‘আমি আখতার হোসেন, সমাজসেবা সম্পাদক, ডাকসু’। এতকিছুর পর সে ২ মে জামিন পেল, মিথ্যা মামলায় পাওয়া জামিন। আজ সে দেখা করতে এসেছিল ডাকসুতে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখতার হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ভু্ক্তভোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষে পড়ে। সে ক্যাম্পাসে নতুন এবং পরিচিত জনও নেই। এছাড়া আমি ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক হওয়ায় ওই শিক্ষার্থী তার পরিবারের মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করে। ঘটনার দুদিন পর তারা আমাকে সহযোগিতার করার জন্য বলে। তখন আমি বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্ট সবার সাথে যোগাযোগ শুরু করি। আর সবার কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা পাই।

এছাড়া তিনি আরও জানান, আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠছে। এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে তার মাত্র আরও বাড়বে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি রক্ষায় বিষয়টি ‍গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।