অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে সেই নারী মারা যাননি, ‘গুজব’ বলল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যুর খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও গুজব বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
রবিবার (৫ অক্টোবর) রাতে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. মো. রফিকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সুন্দরগঞ্জের ওই নারীর মৃত্যু অ্যানথ্রাক্সে নয়। বরং উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগজনিত জটিলতার কারণে হয়েছে।
এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত এক নারীর মৃত্যুর বলে খবর প্রচারিত হয়। তবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আশিকুর রহমান জানিয়েছেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি; এটি সম্পূর্ণ গুজব।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রে জানা যায়, মৃত নারীর নাম রোজিনা বেগম (৪৫)। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের পশ্চিম বেলকা গ্রামের আবুল হোসেনের স্ত্রী। ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অসুস্থ একটি ছাগল জবাই করার সময় হাতে সামান্য আঘাত পান এবং পরবর্তীতে হাতে দুটি ফোসকা দেখা দেয়। তিনি স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেওয়ার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন, সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: ‘মদপানে মৃত্যু’ ঢাকা মেডিকেল ছাত্রী নন্দিনীর, আসলে কী হয়েছিল?
সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামান বলেন, অ্যানথ্রাক্সে সাধারণত ত্বকে ফোসকা দেখা দেয়, তবে এই রোগে মৃত্যু হওয়ার ঘটনা বিরল। এ নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সচেতনতা বাড়ানোই এখন জরুরি।
তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত পশু জবাই না করা এবং সংক্রমিত প্রাণীর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই এই রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক বলেন, রোজিনা বেগম প্রেসারজনিত জটিলতা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অ্যানথ্রাক্সে মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। অ্যানথ্রাক্স খুব কম ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী হয়।
এর আগে, ২৭ সেপ্টেম্বর সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিসামত চর এলাকায় অসুস্থ একটি গরু জবাই করার পর ১১ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দেয়। বর্তমানে তারা স্থানীয়ভাবে ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সবাইকে গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে।