শিশুকে পড়ায় আগ্রহী করতে যেভাবে সাহায্য করতে পারেন
শিশুরা পড়াশোনার চেয়ে খেলাধুলা বেশি পছন্দ করে। তারা ভালোবাসা, আদর ও স্নেহের মধ্যে বেড়ে উঠতে চায়। এমনও বাবা-মা রয়েছেন যারা সন্তান কোনো ভুল করলেই তাকে বকাবকি ও মারধর করে থাকে। অনেকেই তো মনে করেন সন্তানকে ধমক না দিলে লেখাপড়া করানো যায় না। কিন্তু মনোবিদেরা বলেন অন্য কথা। গায়ে হাত তোলা, বকাবকি করা নয়— বরং ছোট থেকেই শিশুর মনে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ তৈরি করাই জরুরি। শিশুদের পড়াশোনায় মনোযোগী করতে এমন কিছু পদ্ধতি রয়েছে যা অনুসরণ করা যেতে পারে।
আনন্দের মাধ্যমে শেখানো: পড়াশোনাটা শিশুর কাছে যেন বিরক্তিকর কিছু না হয় এজন্য যখনই সময় পান শিশুর সাথে সময় কাটান। আনন্দের মাঝে কোনো একটা বিষয়ে শিক্ষা দেন। এটি কার্যকর পদ্ধতি।
ইন্টারেক্টিভ রুটিন: মনোবিদদের মতে, ছোটদের জীবনেও একটা রুটিন থাকা দরকার। তাকে ছোট থেকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে সে বুঝতে পারে এখন তার শেখার সময়। শিশুদের মতামত, চিন্তাভাবনা এবং প্রশ্ন করার সুযোগ দিলে তারা আরও উৎসাহিত হয়। আর ছোট থেকেই তাকে রুটিন ফলো করার জন্য ধীরে ধীরে তৈরি করতে হবে।
প্রযুক্তির সাহায্য: বর্তমানে পড়াশোনার জন্য নানা ধরণের অ্যাপস তৈরি হয়েছে। শিক্ষা অ্যাপ, ইন্টারেক্টিভ গেমস, ভিডিও টিউটোরিয়াল, এবং ডিজিটাল টুলস তাদের শেখার পদ্ধতি আরও সহজ করেছে। এসব অ্যাপের সাহায্য নিয়েও তাকে শেখানো যেতে পারে। তবে, খেয়াল রাখতে হবে পড়াশোনা শেখাতে গিয়ে মোবাইল বা ডিজিটাল ডিভাইসে যেন আসক্ত হয়ে না যায়।
গল্প এবং উদাহরণ দিয়ে শেখানো: গল্প এবং উদাহরণ দিয়ে পাঠ্যবিষয়গুলো উপস্থাপন করলে শিশুদের জন্য বিষয়গুলি আরও সহজ এবং আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। গল্পের মাধ্যমে শিশুদের শেখানো হলে তারা সহজেই নতুন ধারণা বা বিষয়গুলি গ্রহণ করে, যা তাদের মনের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।
বিরতি: শিশু একটানা পড়াশোনায় ধৈর্য হারাতে পারে। তার পড়ার মাঝে একটু বিরতি, একটু গল্প, একটু লেখা— এভাবেও তাকে বসিয়ে রাখা সম্ভব। রাগ দেখানো বা ধমক নয়, বরং সহজ কথাতেই ছোটদের ভোলানো যেতে পারে।
পুরস্কার দেওয়া: শিশুদের সাফল্যকে মূল্যায়ন করতে হবে। পড়াশোনায় আগ্রহ বৃদ্ধি করতে তাকে পুরস্কার ও প্রশংসা দিতে হবে। ছোট পুরস্কার বা প্রশংসার মাধ্যমে তাদের মাঝে নতুন আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এটি শিশুর আত্মবিশ্বাস এবং তাদের শেখার আগ্রহ আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিবে।
অভিভাবকদের আচরণ: শিশুরা বড়দের প্রতিনিয়ত অনুসরণ করে থাকে। বড়দের কথাবার্তা, চলাফেরা, দৈনন্দিন জীবনে কী করছেন নিঃশব্দে অনুসরণ করে। পড়ানোর সময় বাবা বা মা ফোন দেখলে, ফোনে কথা বললে, তার মনোযোগও বিক্ষিপ্ত হবে। যদি বাবা বা মাকে সন্তান বই পড়তে দেখে, বাড়িতে নানা রকম বই থাকে— তার মধ্যেও বই পড়ার আগ্রহ বাড়বে।
ছোটদের মানসিক এবং সৃজনশীল বিকাশ ঘটাতে বকাবকি না করে ওপরের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে।