গরমে বাড়ছে টাইফয়েড জ্বর: লক্ষণ, কারণ ও করণীয়
গরমের শুরুতেই বাড়তে শুরু করেছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ। এর মধ্যে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক হলো টাইফয়েড জ্বর। সালমনেলা টাইফি ও প্যারাটাইফি নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট এই রোগটি মূলত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা না নিলে রোগটি মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
টাইফয়েডের লক্ষণ
চিকিৎসকদের মতে, টাইফয়েডের শুরুতে দেখা যায় উচ্চমাত্রার জ্বর (১০৩-১০৪ ফারেনহাইট), মাথাব্যথা, গলাব্যথা, পেটব্যথা, দুর্বলতা, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ত্বকে লালচে দানার মতো উপসর্গ। অনেক সময় প্রথম সপ্তাহে এসব লক্ষণ পরিষ্কার না হওয়ায় রোগ নির্ণয়ে দেরি হয়, যার ফলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে জ্বর তীব্র হয়ে উঠতে পারে। এমনকি সঠিক ওষুধ চলাকালীন অবস্থাতেও এক সপ্তাহ পর্যন্ত জ্বর থাকতে পারে।
সংক্রমণের কারণ
টাইফয়েড মূলত ছড়ায় অপরিষ্কার পানি ও খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শেও এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে টাইফয়েড জটিল রূপ নিতে পারে—রক্তক্ষরণ, অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ, মেরুদণ্ডে সংক্রমণ এবং কিডনি জটিলতা হতে পারে।
কী করবেন?
শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. দীনা শারমিন টাইফয়েড প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন:
রক্ত পরীক্ষা: টাইফয়েড সন্দেহ হলে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে।
পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: পরিষ্কার পোশাক, বিশুদ্ধ পানি ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র আলাদা করে রাখা উচিত।
খাদ্য ও পানিতে সচেতনতা: পানি অবশ্যই ফুটিয়ে পান করতে হবে। খাবার ভালোভাবে গরম করে খেতে হবে। বাইরের ও কাঁচা খাবার এড়িয়ে চলা ভালো।
পরিচ্ছন্ন টয়লেট ও বাসস্থান: স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করতে হবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির টয়লেট প্রতিদিন পরিষ্কার রাখা উচিত। বাসা যেন খোলামেলা ও পরিচ্ছন্ন থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
টাইফয়েড হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই নিরাপদ।