০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৩:২৯

দুশ্চিন্তা: নীরব মানসিক অসুস্থতা, সচেতন হোন এখনই

প্রতীকী ছবি   © সংগৃহীত

দুশ্চিন্তা বা অ্যাংজাইটি এখন আর শুধু সাময়িক মানসিক চাপ নয়, এটি একটি নীরব মানসিক রোগে পরিণত হয়েছে, যা ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলে। কর্মচাপ, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও পারিবারিক টানাপোড়েন এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। বাংলাদেশে মানসিক রোগে আক্রান্ত ১৮ শতাংশ মানুষের মধ্যে ১ শতাংশ দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের কারণে সৃষ্ট সমস্যায় ভোগেন। বাংলাদেশেও দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগজনিত সমস্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘দুশ্চিন্তা অনেক সময় সাধারণ মনে হলেও এটি একজন মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি বিষণ্নতা বা অন্যান্য সমস্যার দিকে নিয়ে যেতে পারে। দুশ্চিন্তার কারণে শারীরিক ও মানসিক চাপের ফলে বিভিন্ন জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। শারীরিকভাবে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়ে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে, হজম ও ঘুমের সমস্যা হয়, মাথাব্যথা ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা দেখা দেয়। মানসিকভাবে বিষণ্নতা, উদ্বেগ, আত্মহত্যার প্রবণতা, আসক্তি, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস, সিদ্ধান্তহীনতা এবং সম্পর্কের অবনতি ঘটে, যা কাজের মানও প্রভাবিত করে।

আরও পড়ুন: যারাই আমাদের জন্য গর্ত খুঁড়েছে, তারাই সেই গর্তে পড়েছে: শিবির সভাপতি 

সাধারণ কিছু লক্ষণ
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, সামাজিক পরিস্থিতিতে ভয়, হঠাৎ আতঙ্ক বা প্যানিক অ্যাটাক। রোগী শারীরিকভাবে খুব দুর্বল বোধ করতে পারে, ঘুমের সমস্যা এ রোগের অন্যতম উপসর্গ, রাতে ঘুম না হওয়া বা ঘুমের যে তৃপ্তি সেই বোধ না হওয়া, শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা ,মাথাব্যথা হতে পারে, পেটের সমস্যা হতে পারে, হাত-পা জ্বালাপোড়া করা, অস্থিরতা বোধ করে রোগী।

দুশ্চিন্তা কারণ কী?
জীবনের চাপ, পারিবারিক সমস্যা, অতীতের ট্রমা, এমনকি জেনেটিক কারণেও দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত ক্যাফেইন, বা মাদকের ব্যবহারও উদ্বেগ বাড়ায়।

চিকিৎসা ও প্রতিকার
দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগজনিত সমস্যায় থেরাপি, প্রয়োজন হলে ওষুধ এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নিয়মিত ব্যায়াম, ঘুম ঠিক রাখা এবং পরিবারের সহানুভূতিশীল পরিবেশ দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে।

সচেতনতাই প্রতিরোধ
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, উদ্বেগকে লুকিয়ে না রেখে খোলামেলা আলোচনা করুন। ভয় পাওয়ার কিছু নেই, চিকিৎসা ও সহায়তায় উদ্বেগ জয় করা সম্ভব। অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া যেমন স্বাভাবিক, তেমনি মানসিক সমস্যায় চিকিৎসা নেওয়াও স্বাভাবিক বিষয়।