১৩ দিন ধরে বাড়ছে করোনা, ৬ নির্দেশনা টেকনিক্যাল কমিটির

১৩ দিন ধরে বাড়ছে করোনা
১৩ দিন ধরে বাড়ছে করোনা  © ফাইল ছবি

দেশে গত কয়দিন থেকে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ৩ মাস পর আজ বুধবার দৈনিক শনাক্ত ছাড়াল দুইশ। এদিন ২৩২ জনের এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জরুরি সভা আহ্বান করেছে জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি। মঙ্গলবার (১৪ জুন) অনুষ্ঠিত টেকনিক্যাল কমিটির সভায় থেকে করোনা এ অবস্থায় ৬টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রমণের দাপট কমলে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে আসে। ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে এক পর্যায়ে ২৬ মার্চ তা একশর নিচে নেমে এসেছিল।

সংক্রমণ কমার ধারায় গত ৫ মে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমেছিল ৪ জনে। তবে গত ২২ মের পর থেকে টানা ১৩ দিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে।

১১ সপ্তাহ পর দৈনিক শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা গত রোববার আবার একশ ছাড়িয়ে যায়। সেদিন সারা দেশে ১০৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয় ১২৮ জন নতুন রোগী। মঙ্গলবার শনাক্ত রোগী আরও বেড়ে হয় ১৬২ জন। বুধবার তা দুইশ ছাড়াল।

আরও পড়ুন: আবারো বাড়ছে করোনা, সতর্ক হতে বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

করোনা প্রতিরোধে টেকনিক্যাল কমিটি নির্দেশনা:

১) স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে পূণরায় উদ্বুদ্ধ করতে সকল প্রকার গণমাধ্যমে অনুরোধ জানাতে হবে। সকল ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, “নো মাস্ক নো সার্ভিস" নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম বর্জন করা প্রয়োজন। ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান (যেমন- মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) গুলিতে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা দরকার।

২) যাদের জ্বর, সর্দি, কাশি হচ্ছে তারাও অনেকে কোভিড টেস্ট করেছেন না এতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না এবং এ কারণে সংক্রমন বাড়ছে। এ জন্য যাদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এবং যারা কেভিড-১৯ আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে আসছেন তাদের টেষ্ট করার জন্য অনুরোধ করতে হবে।

৩) যে সমস্ত দেশে কোভিড-১৯ জীবানুর variant ও sub-variant সংক্রমনের হার বেশী সে সকল দেশ থেকে আমাদের দেশে আগত আক্রান্ত মানুষের মাধ্যমে প্রবেশ করছে বলে মনে করা হয়। এ জন্য বিমান, স্থল ও নৌ বন্দর সমূহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে কোভিড -১৯ নেগেটিভ সনদ, টীকা সনদ আবশ্যক করতে হবে। বিশেষত: অধিক আক্রান্ত দেশগুলি হতে আগত যাত্রীদের জন্য। সন্দেহজনক ব্যক্তিদের rapid antigen test করার ব্যবস্থা করতে হবে। সংক্রমন বাড়ার সাথে সাথে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন এর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

৪) কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোেজ যারা এখনও নিতে পারেননি তাদের এটা নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী করতে হবে। ৫ থেকে ১২ বৎসরের শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে NITAG এর পরামর্শ অনুসরণ করা দরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চতুর্থ ডোজ অনুমোদন করলে তা নিবেচনা করতে হবে। কোভিড-১৯ এর variant সনাক্ত করার জন্য সম্ভাব্যতা বিবেচনা করা দরকার। ভ্যাকসিন পরবর্তী প্রতিরোধ ক্ষমতা কতদিন বজায় থাকছে যে সম্বন্ধে গবেষণা করা প্রয়োজন।

৫) কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে বিশেষ শয্যা, ICU ব্যবস্থা ও জনবল ছিল, তা বর্ধিত হারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য যথাযথভাবে প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন।

৬) সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন হলে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করা যেতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ