টিকা না নেওয়া শিক্ষার্থীরা কি ক্লাসে আসতে পারবে না?
করোনার তৃতীয় ঢেউ ওমিক্রনের সংক্রমণে একমাস বন্ধ থাকার পর আগামী মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এক্ষেত্রে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
তবে যেসব শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসের টিকার দুটি ডোজ নিয়েছে, আপাতত কেবল তারাই সশারীরে ক্লাসে যাবে। যারা দুই ডোজ টিকা নেয়নি, আপাতত তারা বাসায় থেকে অনলাইনে বা টেলিভিশন দেখে ক্লাস করবে।
আর প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরতে আরও অপেক্ষায় থাকতে হবে। যেহেতু ১২ বছরের কম বয়সীরা টিকা পায়নি, সেহেতু ২২ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানো হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
এর আগে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রীসহ শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ওই বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলন ডা. দীপু মনি জানান, এবারের ছুটির আগে যেভাবে ক্লাস হয়েছিল, এখনো ঠিক সেভাবেই ক্লাস হবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানান, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে আরও প্রায় দুই সপ্তাহ দেখা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত (১২ বছরের বেশি বয়সী) মোট শিক্ষার্থী আছে ১ কোটি ২৮ লাখের মতো। এর মধ্যে ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ২২২ জন প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণ করেছে। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছে ৩৪ লাখ ৪০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। তাদের যে পরিকল্পনা, তাতে ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই অধিকাংশ শিক্ষার্থীর দ্বিতীয় ডোজ টিকাও নেওয়া হয়ে যাবে।
মন্ত্রী জানান, দুই ডোজ টিকা দেওয়া থাকলে শিক্ষার্থীরা সশরীরে ক্লাস করতে পারবে। যারা দুই ডোজ নেয়নি তারা অনলাইনে ক্লাস করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তারা তাদের নিজস্ব সময়সূচি ঠিক করে নেবেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তবে ২২ তারিখ থেকেই তারা তাদের শ্রেণিক্ষে পাঠদান শুরু করতে পারেন। তবে সকল ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার বিষয়টি থাকবে।
করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও শ্রেণি কার্যক্রম চলছিল স্বল্প পরিসরে। সব শ্রেণির ক্লাস সব দিন হচ্ছিল না।
কিন্তু নতুন করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। প্রথম দফায় এই ছুটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ৬ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু পরে তা আবার বাড়িয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়।