বাজির শব্দে স্ট্রোক কলেজছাত্রীর, চিনতে পারেন না কাউকে
বাজির উচ্চ শব্দে স্ট্রোক করে চার বছর ধরে প্যারালাইজড কলেজছাত্রী শারমিন জামান রেমিন। চিনতে পারেন না কাউকেই। সারাদিন বিছানায় কাটে ফরিদপুরের এই মেধাবী ছাত্রীর। বাবা জাহিদ রিপন একজন গণমাধ্যম কর্মী।
২০১৭ সালের জুন মাসে ফরিদপুর শহরের পূর্ব খাবাসপুরে এ ঘটনা ঘটে। ঈদের কয়েকদিন আগে বাসার পাশে বাজি ফাটায় কয়েকটি ছেলে। বাজির তীব্র শব্দে বাবার পাশে বসে থেকেই স্ট্রোক করেন রেমিন।
বাবা জাহিদ রিপন বলেন, রেমিন মেধাবী ছাত্রী ছিলো। ক্লাস ফাইভ আর এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। এসএসসি পাস করেছিল গোল্ডেন এ প্লাস নিয়ে। আমার সেই সোনার টুকরো মেয়েটা এখন অনেক আপনজনকেই চিনতে পারে না।
আরও পড়ুন- নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম
তিনি বলেন, বাজির ঘটনার পর রেমিনের শরীরের একপাশ পুরো প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো তার ডান হাত আর ডান পা প্যারালাইজড। ধরে ধরে হাঁটাচলা করাতে হয়। জাহিদ রিপন বলেন, এখনো সে মানুষ চেনে কম। আমরা যারা কাছে থাকি তাদের ছাড়া অন্যদের চিনতে কষ্ট হয়। স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল, তেমন কিছুই মনে থাকে না।
স্ট্রোকের কারণে রেমিনের মাথার খুলির ক্যারোটিড ধমনী অবরুদ্ধ বা সরু হয়ে যায়। ব্রেইন স্ট্রোকের কারণে রক্তনালী ফেটে এই অবস্থা তৈরি হতে পারে। রেমিন এখন কোন শব্দই নিতে পারেন না। তাই বাবা জাহিদ রিপন মেয়ের জন্য ফরিদপুরের বাসা ছেড়ে দিয়েছেন। মুন্সিগঞ্জে নিরিবিলি পরিবেশে বাড়ি করছেন তিনি। সেখানে মেয়ের ছন্দ মতো পুকুরও কাটা হয়েছে। তিনি বলেন, ডাক্তার বলেছে রেমিন সুস্থ হয়ে যাবে। সে যা চায় তাকে তা দিতে বলেছেন। মেয়ে শব্দ সহ্য করতে পারছে না। তাই মুন্সিগঞ্জে নতুন বাড়ি করেছি।
আরও পড়ুন- বুস্টার ডোজ প্রদানে অগ্রাধিকার চেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
রেমিন ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে ভর্তি হয়েছিল সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে। উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন থাকলেও একটি বাজিই কেড়ে নিয়েছে সবটুকু সুখ-স্বপ্ন।