পেটের মেদ বা ভুঁড়ি থেকে বাঁচার সহজ উপায়
সুস্থ্য ও স্লিম দেহ সব মানুষের কাঙ্ক্ষিত চাওয়া। কিন্তু বয়সের ভার ও অলস জীবনযাপনের ফলে অনেক সময় শরীরের ওজন বাড়ে। সেই সঙ্গে পেটে জমে অতিরিক্ত মেদ। যা একজন মানুষের শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট করার পাশাপাশি বিরক্তির কারণ হয়ে উঠে। আর পেটের মেদ বা ভুঁড়ি কমানোর জন্য মানুষ করে যাচ্ছে নিরন্তর চেষ্টা।
তবে, পেটের মেদ বা ভুঁড়ি কমানোর আগে আমাদের জেনে নেওয়া দরকার কেন তা বাড়ে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কারণগুলো:
- অতিরিক্ত ক্যালরি, চর্বিযুক্ত খাবার ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসকে পেটের মেদ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়। সাধারণত মদ্যপান, মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ, ডুবো তেলে ভাজা খাবার, কোমল পানীয়, অস্বাস্থ্যকর বাইরের খাবার, নিয়মিত লাল মাংস খাওয়া ও স্যাচুরেটেড চর্বি গ্রহণ ইত্যাদি পেটের মেদ বাড়িয়ে তোলার পেছনে ভূমিকা রাখে।
- তাছাড়া অলস জীবনযাপনেও হতে পারে পেটের মেদ বৃদ্ধির কারণ। কেননা, ব্যক্তি যদি বেশিরভাগ সময় আরাম ও অলসতা পছন্দ করে তবে তার জন্য ভুঁড়ি কমানো প্রায় অসম্ভব। একই সাথে মানসিক চাপ এবং ঘুমের অভাবেও পেটের মেদ কমা লোপ পায়।
আরও পড়ুন: কাল থেকে দেওয়া হবে বুস্টার ডোজ, পাবেন যারা
অন্যদিকে, সঠিক জীবনযাপন ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে শরীরের বাড়তি মেদ জমা বা ভুঁড়ি হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। পেটে মেদ জমে যাওয়ার আগেই সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা তাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পেটের মেদ বা ভুঁড়ি থেকে বাঁচার সহজ কিছু উপায়:
- প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সাদা চালের ভাতের বদলে বিভিন্ন গম জাতীয় শস্য যুক্ত করা। তাছাড়া শাকসবজি ও ফলমূলের পাশাপাশি লাল চালের ভাত, গমের রুটি, ওটস ও অন্যান্য শস্য যুক্ত করা যেতে পারে।
- গ্রিন-টি পেটের মেদ কমাতে খুব বেশি কার্যকর। কেননা, গ্রিন-টিতে আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা পেটের মেদ কমিয়ে ফেলতে সহায়তা করে।
- সকালবেলা কাঁচা রসুনের কয়েক কোয়া খাওয়ার অভ্যাসের ফলে দ্রুত শরীরের ওজন কমার পাশাপাশি পেটের মেদ ঝরিয়ে ফেলা যায়। কারণ কাঁচা রসুন শরীরের রক্তপ্রবাহ সহজ করে। ফলে পেটে মেদ জমতে দেয় না।
আরও পড়ুন: দ্রুত ওজন কমাবে বাঁধাকপির স্যুপ
- কুসুম-গরম পানিতে লেবুর রস অতিরিক্ত মেদ কমাতে খুবই সহায়ক। কেননা এতে হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকে এবং শরীরে মেদ জমার প্রক্রিয়া ধীর করে।
- ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। দারুচিনি, আদা, গোলমরিচ এবং কাঁচামরিচ ইত্যাদি খুবই স্বাস্থ্যকর। যা পেটের মেদ কমাতে কাজ করে।
- উচ্চ তেলযুক্ত খাবার, কোল্ড ড্রিঙ্কস ও চিনি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ এগুলো পেটসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চর্বি জমিয়ে রাখে।
- ওজন কমাতে পানির কোন বিকল্প নেই। পানি শরীরের হাইড্রেশন করার পাশাপাশি অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আগ্রহ দূর করে। তাই খাওয়ার আগে পানি খেলে খাবারও কম খাওয়া যায়।
- অতিরিক্ত চিন্তা ও উদ্যোগের ফলেও কোমরের চারপাশে বা পেটে মেদ জমতে পারে। তাই ভুঁড়ি কমাতে অবশ্যই চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করতে হবে।
এছাড়া পেটের মেদ কমাতে খাবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি করতে হবে নিয়মিত শরীরচর্চা। যার মাধ্যমে শরীর থাকবে সুস্থ্য ও স্লিম। তাই একটানা বসে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করার পাশাপাশি পেটের বিভিন্ন ব্যায়াম যেমন; ব্রিস্ক ওয়াকিং, জগিং, ফ্লাটার কিক ও পেটের স্ট্রেচিং ইত্যাদি শারীরিক কসরত নিয়মিত করে পেটের মেদ কমিয়ে আনা যায়।