স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের জন্য ডব্লিউএইচও’র নির্দেশনা
স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের উদ্দেশে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এই নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়েছে।
১. সার্বক্ষণিক আপনার সন্তানের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণে রাখুন। স্কুল চলাকালে অসুস্থবোধ করলে বাড়িতেই রাখুন।
২ .আপনার শিশুকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে শেখান এবং ভাল ভাল স্বাস্থ্যবিষয়ক চর্চার অভ্যাস করান। সেগুলো হলো-
- মাঝে মাঝেই সাবান ও নিরাপদ পানি দিয়ে হাত ধোয়া। সাবান ও পানির ব্যবস্থা না থাকলে অন্তত ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল সংবলিত হ্যান্ড-স্যানিটাইজার ব্যবহার করা। তবে হাত ময়লা হলে অবশ্যই সাবান দিয়ে ধোয়া।
- বাসায় অবশ্যই নিরাপদ পানির ব্যবস্থা রাখা এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ওয়াশরুমের ব্যবস্থা রাখা।
- ময়লা-আবর্জনা নিরাপদে সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
- হাঁচি বা কাশির সময় টিস্যু ব্যবহার অথবা হাতের বাহু দিয়ে মুখ ঢেকে তারপর হাঁচি কাশি দেওয়া। চোখ, মুখ ও নাক স্পর্শ না করা।
৩. আপনার শিশু যেন আপনাকে এবং তার শিক্ষককে অকপটে প্রশ্ন করে এবং তার অনুভূতির কথা জানায় সে ব্যাপারে উৎসাহ দিন। মনে রাখবেন, আপনার শিশু চাপের মুখে পড়ে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে, এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ধৈর্য ধরুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন।
৪. আপনার সন্তান কোনো ভুল ধারণা বা কুসংস্কারের কথা বললে সুনির্দিষ্ট তথ্য তুলে ধরে তা প্রতিরোধ করুন এবং সহপাঠীসহ অপর লোকজনের ব্যাপারে সংবেদনশীল হওয়ার শিক্ষা দিন।
৫. স্কুলের সঙ্গে সমন্বয় করুন, বিভিন্ন তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করুন এবং প্রয়োজনে স্বাস্থ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে আপনি তাদেরকে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারেন সেটা দেখুন। এটা হতে পারে অভিভাবক-শিক্ষক কমিটি গঠনের মাধ্যমে বা অন্য কোনো উপায়ে।
আরও পড়ুন: স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীরা টিফিন খেতে পারবে না: মাউশি ডিজি
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। এদিনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য ১৯টি নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এসব নির্দেশনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে স্বাস্থ্যবিধি।
১৯ দফার মধ্যে রয়েছে—
*শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশ মুখসহ অন্যান্য স্থানে কোডিড-১৯ অতিমারি সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে করণীয় বিষয়গুলো ব্যানার বা অন্য কোনো উপায়ে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
*শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে সব শিক্ষক-কর্মচারী শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে নিয়মিত তাপমাত্রা মাপা ও তা পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
*শিক্ষার্থীদের ভিড় এড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানের সবগুলো প্রবেশমুখ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা। যদি কেবল একটি প্রবেশমুখ থাকে সেক্ষেত্রে একাধিক প্রবেশমুখের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে হবে।
*প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করবে এবং বাসা থেকে যাওয়া-আসা করবে সে বিষয়ে শিক্ষণীয় ও উদ্বুদ্ধকারী ব্রিফিং দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া ভিডিও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
*প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ আইসোলেশন কক্ষ হিসেবে প্রস্তুত রাখতে হবে।
*প্রতিষ্ঠানের সব ওয়াশরুম নিয়মিত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখা এবং পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে।
*প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং অভিভাবক প্রবেশের সময় সরকার দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালনের ব্যবস্থা করতে হবে।
*প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর সঠিকভাবে মাস্ক (সম্ভব হলে কাপড়ের মাস্ক) পরিধান করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
*প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দ্বারা হাত ধোয়ার এমন ব্যবস্থা করা যাতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢোকার আগে সবাই সাবান দিয়ে হাত ধুঁতে পারে।
*শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে পারস্পারিক ৩ (তিন) ফুট শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।