২৭ জুন ২০২১, ১২:২২

সংক্রমণ হার না কমলে পরিস্থিতি ভারতের চেয়েও খারাপের আশঙ্কা

করোনায় মৃত্যু  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পাশাপাশি শনাক্তের হারও দিন দিন বেড়েই চলছে। এমতাবস্থায় সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী ১ জুলাই থেকে সারা দেশে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের আগের দুই সপ্তাহ অত্যন্ত সংকটপূর্ণ। এই সময়ের মধ্যে সংক্রমণ হার কমিয়ে আনা না গেলে দেশের করোনা পরিস্থিতি ভারতের চেয়েও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত বছরে মার্চ মাসে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর একই বছরের জুলাইয়ে সর্বোচ্চ ১,২৬৪ জন রোগী মারা যায়। এরপর চলতি বছরের এপ্রিলে সর্বোচ্চ ২৪০৪ জন মারা গেছে, যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় একমাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু। তবে চলতি জুন মাসের প্রথম ২৬ দিনে মারা গেছেন ১৪৩৪ জন, যা এপ্রিলের পরে করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর মাস হতে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ওয়েভ ছিল গত বছরের জুন-জুলাই মাস। এরইমধ্যে জুনের ২৬ দিনেই কোভিডে মৃত্যু গত বছরের জুনের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। দেশে করোনা সংক্রমণের প্রথম ও দ্বিতীয় ওয়েভে ঢাকায় সংক্রমণ ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এবার দেশের সব জেলা ও গ্রামে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এই প্রথম একইহারে সারাদেশে সংক্রমণ বাড়ছে। এছাড়া সামনে কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের চলাচল আরো বাড়তে। এতে সংক্রমণ ঝুঁকি আরো বাড়বে। এজন্য ঈদের আগের দুই সপ্তাহ অত্যন্ত সংকটপূর্ণ হবে। এসময় মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অবস্থা ভয়াবহ হবে। এমনকি পরিস্থিতি ভারতের চেয়েও খারাপ হতে পারে।

আইইডিসিআর-এর অন্যতম উপদেষ্টা ডা. এম মুশতাক হোসেন বলেন, এখনই যদি সংক্রমণের চেইন ব্রেক করা না হয় তাহলে জ্যামিতিক হারে রোগী বাড়বে। সামনে থেকে যে লকডাউন আসছে, সেটি কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে দুই সপ্তাহ পর সংক্রমণ ও তিন সপ্তাহ পর মৃত্যু কমবে।

এবারের ওয়েভকে অনেক বেশি ঝুঁকি বলছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও প্রখ্যাত ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম। সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে সংক্রমণ এবার সারাদেশে ছড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামনে আমাদের বড় একটি উৎসব রয়েছে। ঈদের জন্য চলাচল ছাড়াও পশুর হাটের কারণে সংক্রমণ হার বেড়ে যাবে। সংক্রমণ হার না কমলে মৃত্যুও বাড়বে।

এখন একটি সংকটপূর্ণ সময় যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনই চলাচল বন্ধ করে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে লকডাউনে টেস্ট বাড়াতে হবে ও কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।